পুজোর ক’দিন আড্ডা, ঘোরাফেরা এবং হইহুল্লোড়ের মাঝে মনেই থাকে না বিজয়ার পর আবারও ফিরতে হবে পুরনো ছন্দে। অনেক তো হল আনন্দ, এ বার বই-খাতা নিয়ে বসতে হবে তো না কি? ব্যস অমনিই মুখ ভার? কিন্তু সন্তানদের বাবা-মায়েদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। আপনার সন্তানের পড়াশোনায় মন বসবে খুব সহজেই। কেবল মাথায় রাখতে হবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস্।
সমস্যা এবং কারণ প্রথমে বোঝার চেষ্টা করুন: ‘তারে জমিন পর’ ছবিটি দেখেছেন তো? ঈশান অবস্তির বাবা-মায়ের মতো এক ভুল আপনি করবেন না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বই নিয়ে বসিয়ে রেখেও সন্তান পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল আনতে ব্যর্থ? সমস্যাকে গোড়া থেকেই বোঝার চেষ্টা করুন। প্রতিটি সন্তানের সমস্যা আলাদা হয়। এর সমাধান মারধর নয়। সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা ভাবে মিশতে শিখুন এবং তাঁর মুখ থেকেই জানুন কেন সে মনঃসংযোগে ব্যর্থ।
শেখার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা: কোনও কিছু শেখার জন্য একটি উপযুক্ত এবং সঠিক পরিবেশ খুবই প্রয়োজনীয়। আপনার সন্তানেরও সেটাই প্রয়োজন। তার জন্য আলাদা একটি ঘর বা ঘরের কোণা নির্দিষ্ট করুন। যেখানে আপনার সন্তান নিশ্চিন্তে পড়তে পারবে কোনও বিভ্রান্তি ছাড়াই।
পড়াশোনাই হবে আনন্দময়: না, ‘তারে জমিন পর’-এর নিকুম্ভ স্যারকে পাওয়া তো মুশকিল! কিন্তু এই ভূমিকাটি পালন করতে পারেন আপনিই। বাঁধাধরা নিয়মের বাইরে গিয়ে শেখার বিভিন্ন মজাদার উপায় খুঁজে বের করুন। এর জন্য রয়েছে বিভিন্ন মজাদার শিক্ষণীয় অ্যাপ, হ্যান্ড ক্রাফটের বই, মজাদার গল্পের বই, আরও কত কী! শুধু পাঠ্য বই নয়, আপনার সন্তানের সঙ্গী হোক এইগুলিও।
ছোট ছোট প্রাপ্তিগুলিকে গুরুত্ব দেওয়া: আপনার সন্তান ক্লাসে প্রথম না-ই আসতে পারে! কিন্তু চেষ্টা কখনওই ব্যর্থ যায় না। সন্তানের ছোট ছোট প্রাপ্তিগুলিকেও গুরুত্ব দিন। তাতে তাদের শেখার আগ্রহ আরও বাড়বে।
ছোট ছোট লক্ষ্যপূরণ: পুজোর পর স্কুল খুললেই ক্লাস টেস্ট? আপনার সন্তানের জন্য ছোট ছোট করে গোল সেট করুন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আপনি বলুন ক্লাস টেস্টে গত বারের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি নম্বর পেলে আপনি তাকে একটি বিশেষ উপহার দেবেন। এর পর আরও একটু বেশি গোল সেট করে রাখতে বলুন বার্ষিকী পরীক্ষার জন্য।
পাঠ্য বইয়ের বাইরে গিয়ে পড়ার অভ্যাস তৈরি: ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবিতে র্যাঞ্চো মানত, কেবল ক্লাসরুমের মধ্যেই নয়, শিক্ষা সব জায়গায় বণ্টিত হচ্ছে। আপনার সন্তানকেও পাঠ্যবইয়ের বাইরে গিয়ে প্রতিনিয়ত পড়ার অভ্যাস তৈরি করতে বলুন। পুজোর শেষে এখনও অনেক সময় হাতে আছে বার্ষিক পরীক্ষা হতে। কাজেই কেবল পাঠ্যবই নয়, নিয়মিত বিভিন্ন শিক্ষামূলক বই, গল্পের বই ইত্যাদি পড়তে দিন সন্তানকে।
অল্প অল্প করে পড়া দেওয়া: সন্তানকে এক গাদা পড়ালেখা একসঙ্গে দেবেন না। এতে তাদের মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটে। বিরক্তি এলে এমনিই পড়ায় মন বসবে না। তাকে বরং অল্প অল্প করে পড়া দিন। যাতে তা দ্রুত মুখস্তও হয়ে যায় এবং আপনার সন্তানও পড়তে আগ্রহ পায়।