দীপাবলি মানে আলোর রোশনাই। মনের অন্ধকারকে দূরে সরিয়ে রেখে শুভ শক্তির আরাধনা করা হয় এই সময়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে আট থেকে আশি সবাই আনন্দ মাতেন এই দিন। বাজি পোড়ানো থেকে মোমবাতি বা প্রদীপ জ্বালিয়ে খুশির উৎসব পালন করেন সকলে।
কিন্তু এই বছর করোনা কাঁটায় সবই মাটি। পরিস্থিতির রদবদলের জন্য বার বার বাজি পোড়াতে নিষেধ করছেন চিকিৎসকরা। বায়ু দূষণের সমস্যা তো আছেই। সঙ্গে ফুসফুসের জন্যও ব্যাপক ক্ষতিকারক হতে পারে বাজির বিষাক্ত ধোঁয়া। এই ধোঁয়ার মধ্যেই থাকে বিভিন্ন ক্ষতিকারক গ্যাস ও রাসায়নিক পদার্থ। যা স্বাস্থ্যের পক্ষে মারাত্মক। এর থেকে হতে পারে শ্বাসকষ্টের সমস্যা। বয়স্কদের অনেকেরই হাঁপানির সমস্যা রয়েছে। আর কোভিড-১৯ এর মারাত্মক উপসর্গ হল শ্বাসকষ্ট।
এ বার তাই সব কিছুই অন্য বারের থেকে অনেকটা আলাদা। আত্মীয়-বন্ধুরা কেউই আর সরগরম করে রাখবে না বাড়ি-ঘর। দীপাবলি পালন করা হবে নিশ্চয়ই, কিন্তু আগের মতন সেই জৌলুস, মজা, বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ফাটানো হয়তো হবে না।
মুখে মাস্ক লাগিয়ে তার পরে বাড়ির বাইরে বেরনো উচিত।
কিন্ত উৎসবের সময় বাড়িতে বন্দি ছোটদের ম্লান মুখ দেখতে কি ভাল লাগে! তাই সতর্কতা অবলম্বন করে কী কী উপায়ে উৎসবের আনন্দ নেওয়া যায়, চলুন দেখে নিই।
১) এই বছর বাজি পোড়ানো থেকে শত হাত দূরে থাকাই শ্রেয়। কিন্তু তবুও মন মানতে নারাজ। ছোটরাও বাজি ফাটানোর জন্য বায়না করলে সে ক্ষেত্রে বাজির বদলে প্রদীপ জ্বালানো যায়। অবশ্যই সুরক্ষাবিধির কথা মাথায় রেখে বাড়ির বড়দের প্রদীপ জ্বালানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
২) মুখে মাস্ক লাগিয়ে তার পরে বাড়ির বাইরে বেরনো উচিত। ভিড় বা ঘিঞ্জি জায়গা এড়িয়ে চলতে হবে।
আরও পড়ুন: করোনা থেকে সেরে উঠেছেন? পুজোর সময় কী কী খেয়াল রাখবেন
৩) হ্যান্ড স্যানিটাইজার এখন আমাদের পরম বন্ধু। কিন্তু স্যানিটাইজার হাতে মেখে প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালানোর চেষ্টা করবেন না। স্যানিটাইজারে অ্যালকোহল থাকে। তাই আগুনের সংস্পর্শে এসে দুর্ঘটনা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৪) বাড়ির ছাদে বা উঠোনে প্রদীপ অথবা মোমবাতি জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হলেও এমন জায়গায় লাগাতে হবে যেখানে মানুষের চলাচল কম।
৫) বাড়িতে টুনি বাল্ব লাগিয়ে আলোর সজ্জা করা যায়। কিন্তু বিদ্যুৎ থেকে যেন বাচ্চারা দূরে থাকে সেই বিষয়ে নজর রাখতে হবে বড়দের।
৬) অনেকেই মোমবাতি, প্রদীপ ইত্যাদি বাড়িতেই বানিয়ে ফেলেন। ছোটদের নাগালের বাইরে সেগুলোকে রাখতে হবে। তাঁদের অবুঝ মন যাতে কোনও রকম দুর্ঘটনা না ঘটাতে পারে সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৭) বাড়ির খুদেরা এবং বিশেষ করে মহিলারা ঢিলে অথবা সিন্থেটিক জামাকাপড় একদমই পরবেন না। তাতে আগুন লাগার আশঙ্কা বেশি থাকে।
আরও পড়ুন: উৎসবের মরসুমে বাড়িতে ধূপ-ধুনো? কোভিড আবহে ফল হতে পারে মারাত্মক