মনের মতো সাজগোজ করেছেন, চোখের তলায় কালি! তবে সবটাই তো মাটি। পুজোর দিনগুলোয় ঝলমলে হয়ে উঠতে কার না মন চায়! এ দিকে, রাতের পর রাত ঘুম নেই। ফল? চোখের তলায় জমাট বাঁধা কালচে ভাব, বসে যাওয়া শুকনো মুখ, নিষ্প্রাণ ত্বক। জানেন কি এর মুশকিল আসান হয়ে উঠতে পারে বাস্তু?
বাস্তুশাস্ত্র একটি প্রাচীন ভারতীয় শাস্ত্র। নির্বিঘ্ন জীবনযাপনের নানা দিক-নির্দেশ এই বহু-পরীক্ষিত শাস্ত্রটিতে মেলে। সৌরশক্তি এবং দিকনির্ভর এই কল্যাণকারী বিজ্ঞান অনেকটাই প্রভাবিত করতে পারে মানবজীবনকে। ঠিক মতো মেনে চললে সপরিবার সুখ-শান্তিতে দিন কাটবে। অর্থ এবং যশও ঘিরে রাখবে আপনাকে। দৈনন্দিন জীবন যাপন থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং, নগর পরিকল্পনা, স্থাপত্যবিদ্যা, ভাষ্কর্য এবং চিত্রকলা—সব ক্ষেত্রেই বাস্তুশাস্ত্রের সুস্পষ্ট নির্দেশ আছে।
দিকনির্ভর এই শাস্ত্র প্রভাব ফেলতে পারে মানুষের শরীর-মনেও। উদাহরণ হিসাবে বলা যায, পৃথিবী একটি গ্রহ। সূর্যের চার দিকে সে পরিক্রমণ করছে নিজের কক্ষপথে। পৃথিবীর বিশেষত্ব হল চুম্বকের মতো। তার আছে নিজস্ব চৌম্বক ক্ষেত্র ও দু’টি মেরু- উত্তর ও দক্ষিণ। পৃথিবীর সেই চুম্বক ক্ষেত্রের মানবশরীরের উপর বিশেষ প্রভাব আছে।
রাতের পর রাত ঘুমের ব্যাঘাতের ক্ষেত্রে কী ভাবে সাহায্য করতে পারে বাস্তশাস্ত্র?
আমাদের মাথা হল সুমেরু (উত্তর মেরু) আর পা হল কুমেরু (দক্ষিণ মেরু)। তাই ঘুমোনোর সময়ে যদি আমরা মাথা উত্তর দিকে এবং পা দক্ষিণ দিকে রেখে ঘুমাই তা হলে মাথা উত্তর মেরুকে বিকর্ষণ করবে। তার ফলে দেহে এক প্রতিরোধ তৈরি হয়। প্রতিরোধের কারণে দেহের রক্ত সঞ্চালনে স্বাভাবিকতা নষ্ট হয়ে হৃদপিণ্ডের স্বাভাবিক স্পন্দনে ব্যাঘাত ঘটায়। নিট ফল, ঘুমের ব্যাঘাত। মানুষ অর্ধচেতনে হাঁসফাঁস করে এবং স্বপ্নও দেখে। আর মাথা দক্ষিণে রেখে ঘুমোলে ফল হয় ঠিক উল্টো। মাথার উত্তর মেরু এবং দক্ষিণ মেরু একই দিকে অবস্থানের জন্য দুই মেরুর আকর্ষণজনিত কারণে দেহ-মন শান্ত হয়ে গভীর নিদ্রা নিশ্চিত করে। তাই বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী শয়নকালের দিক হুবহু এই তত্ত্বের উপর নির্ভরশীল। মার্কণ্ডেয় পুরাণে আছে- মার্কণ্ডেয়, যিনি চিরঞ্জীবী, দক্ষিণ দিকে মাথা রেখে ঘুমাতেন। সব মিলিয়ে দক্ষিণ দিকে মাথা রেখে ঘুমোনো শুধু শাস্ত্রসম্মত নয়, বিজ্ঞানসম্মতও বটে।
রজনী নিদ্রাহীন হয়েই কাটছে? বাস্তুমতে ঘুমিয়ে দেখুন না। সুফল মিলবে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।