আনলক-৪ পর্বে রাস্তায় গাড়ি চলাচল অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। করোনা আবহে দীর্ঘদিন লকডাউন চলায় সবাই কার্যত গৃহবন্দি হয়ে কাটিয়েছেন। ফলে যান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা উঠে যেতেই অনেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন। সেই সঙ্গেই দরজায় কড়া নাড়ছে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো। আর পুজোয় বা তার পরে ভ্রমণপিপাসুরাবেরোবেন না, এ কথা ভাবাই যায় না।
প্রতি বছরের মতো এবারে খুব বেশি হইচই করতে না পারলেও পুজোয় কমবেশি সকলেই ঘুরতে বেরোবেন। যেহেতু করোনা আবহে গণ-পরিবহণ ব্যবহারে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি, অনেকেই নিজেদের গাড়ি নিয়ে বেরোবেন। তবে নিজের গাড়িতে সফর করছেন বলে সংক্রমণের ঝুঁকি একেবারেই নেই এটা ভাবলে চলবে না। তাতেও থেকে যাচ্ছে সংক্রমণের আশঙ্কা। তাই সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে গাড়িকেও স্যানিটাইজ করতে হবে। কী ভাবে করবেন গাড়ি স্যানিটাইজ? রইল কিছু সহজ উপায়।
পার্থক্য জানুন
জল এবং সাবান দিয়ে গাড়ি ধুলে জীবাণু কিছুটা চলে গেলেও পুরোপুরি মেরে ফেলতে পারেনা। জীবাণু পুরোপুরি মারতে হলে রাসায়নিক জীবাণুনাশকের ব্যবহার করতে হবে। এর ব্যবহারে বিভিন্ন ব্যাক্টিরিয়া, ভাইরাস এবং ক্ষতিকর ছত্রাক সম্পূর্ণ ভাবে নির্মূল করা সম্ভব। এবং সংক্রমণের ঝুঁকিও অনেক কমে যায়।
একটি নরম কাপড়ের উপর জীবাণুনাশক স্প্রে করে তার সাহায্যে গাড়ির ভেতর পরিষ্কার করুন।
কী ব্যবহার করবেন?
এমন জীবাণুনাশক ব্যবহার করুন যা আপনার গাড়ির ভেতরের সজ্জার জন্য ক্ষতিকর নয়। বাড়িতে ব্যবহৃত জীবাণুনাশকগুলির মধ্যে ব্লিচ, অ্যামোনিয়া, অ্যাসিটোন এবং ক্লোরিনের মতো উপকরণ থাকে যা গাড়ির রং এবং বিভিন্ন উপাদানের ক্ষতি করতে পারে। তাই গাড়ির জন্য আলাদা জীবাণুনাশক কিনুন।
আরও পড়ুন: করোনা আবহে নিরাপদে পুজোর শপিং করতে খেয়াল রাখুন এইসব
কীভাবে ব্যবহার করবেন?
পরিষ্কার করার সময় জীবাণুনাশক সারাসরি গাড়ির ভেতরে স্প্রে করবেন না। একটি নরম কাপড়ের উপর স্প্রে করে তার সাহায্যে গাড়ির ভেতর পরিষ্কার করুন। তার পরে ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের সাহায্যে সিটের খাঁজ এবং বিভিন্ন কোণ থেকে ময়লা বের করে নিন। আপনার কাছে যদি ওয়েট ভ্যাকুয়াম ক্লিনার থাকে তাহলে তার সাহায্যে শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করুন। এতে ফল আরও ভাল পাবেন।
চামড়ার ক্ষেত্রে কী করবেন?
নিজের পছন্দমতো জীবাণুনাশক স্প্রে বেছে নিন। কিন্তু তাতে ব্লিচ, অ্যামোনিয়া, অ্যাসিটোন এবং ক্লোরিনের মতো ক্ষতিকর উপাদানগুলি যেন না থাকে। ব্যবহারের আগে গাড়ির স্টিয়ারিংয়ের পেছন দিকের চামড়ায় স্প্রে করে নিন। যদি কোনও রকম দাগ না পড়ে অথবা রং নষ্ট না হয় তবে আপনি স্প্রেটি ব্যবহার করতে পারেন। তবে আগের মতোই সরাসরি স্প্রে না করে নরম কাপড়ের উপর স্প্রে করে তার সাহায্যে পরিষ্কার করুন।
জীবাণুমুক্ত করা
এবার আপনি আপনার গাড়ি জীবাণুমুক্ত করার জন্য প্রস্তুত। গাড়ির শক্ত প্লাস্টিকের অংশ, যেমন বোতাম, নব এগুলো ব্লিচ-ফ্রি জীবাণুনাশক দিয়ে মুছে ফেলুন। গাড়ির যে অংশগুলো বেশি সংস্পর্শে আসে, যেমন ইনফোটেনমেন্ট টাচস্ক্রিন,ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস— এগুলো মুছে নিন।
আরও পড়ুন: করোনা আবহে পুজো, বাইরে বেরলে এই সব জিনিস ব্যাগে রাখতেই হবে
কোথায় ব্যবহার করবেন?
পরিষ্কার করার তালিকাটা একটু বড় মনে হলেও গাড়ির যে অংশগুলো বেশি সংস্পর্শে আসে সবটাই খুব ভাল করে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। কোন কোন অংশগুলো পরিষ্কার করবেন রইল তার তালিকা
গাড়ির শক্ত প্লাস্টিকের অংশ, যেমন বোতাম, নব এগুলো ব্লিচ-ফ্রি জীবাণুনাশক দিয়ে মুছে ফেলুন।
অন্য যা যা জীবাণুমুক্ত করতে হবে
গাড়ি স্যানিটাইজ করার পর অবশ্যই হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ব্যবহার করতে পারেন হ্যান্ড স্যানিটাইজার।আপনার গাড়ি জীবাণুমুক্ত করে নিলেই এই করোনা আবহেও আপনি নিরাপদে পুজোর সময় ঘুরতে পারবেন।