দুর্গাপুজোর পরিকল্পনা চলতে থাকে সারা বছর ধরে। এই পাঁচটা দিনের অপেক্ষায় হাপিত্যেশ বসে থাকে বাঙালি।ক’টা ঠাকুর দেখা হবে, কত রাত পর্যন্ত বাইরে ঘোরাঘুরি আর কোন কোন রেস্তোরাঁয়কী কী খাওয়া হবে- জল্পনা চলে মাসের পর মাস ধরে।
এবছর সবটা পাল্টে গিয়েছে করোনা আবহে। মানুষকে তাই আগের তুলনায় অনেক বেশি সতর্ক হতে হবে- এমনটাই বলছেন চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস। তাঁর মতে, সাবধানতা নিয়ে বাড়িতেও থাকুন, আর বাইরে বেরোলে মানুন বাড়তি সতর্কতা। বাইরে বেরোলে অবশ্যই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুরক্ষাবিধি মেনে তৈরি মাস্ক পরতে হবে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, এ বছর বেশি রাত করে প্যান্ডেলে না যাওয়াই ভাল|পুলিশ প্রশাসন প্রতিনিয়ত মানুষের জন্য কাজ করে চলেছেন| শুধু আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রন নয়, তাঁদের কাঁধে এবার অতিরিক্ত দায়িত্ব- মানুষ যাতে সচেতনতার বার্তা মেনে চলে। পুজোর উদ্যোক্তাদের দায়িত্বও অপরিসীম।মানুষ যাতে অসুস্থ হয়ে না পড়ে, সে বিষয়ে নজর দেওয়া। প্যান্ডেলে তাই ফার্স্ট এডের সঙ্গে রাখতে হবে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা। সঙ্গে মেনে চলতে হবে সরকার নির্দেশিত করোনা স্বাস্থ্যবিধি।
বাড়িরপাশাপাশি প্যান্ডেলেও পালস অক্সিমিটার আর অক্সিজেন এর ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করলে ভাল হয় বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। খোলামেলা প্যান্ডেল হলে খুব ভাল, বাতাসের চলাচল যাতে বিঘ্নিত না হয়, তা খেয়াল রাখতে হবে।
চিকিৎসক অরিন্দমবাবুর মতে প্রচুর জল খেতে হবে এ সময়টায়। পুজোর প্যান্ডেলে ঘোরার সময়ে বাইরের জল যত না খাওয়া যায়, ততই ভাল। এই প্রসঙ্গে বলা দরকার, এখন পোর্টেবল নানা ওয়াটার পিউরিফায়ার বেরিয়েছে, সেগুলি সঙ্গে রাখা পারে। তাহলে রাস্তায় যেকোনও পানীয় জলকেএর মাধ্যমে খুব সহজে জীবাণুমুক্ত করে নেওয়া যেতে পারে।
চিকিৎসকরা ঘরে-বাইরে সর্বত্রই গ্লুকোমিটার রাখতে বলছেন সঙ্গে, বিশেষত ডায়েবেটিস রোগীদের। অসুস্থ বোধ করলে আপনার রক্তে সেই মুহূর্তে গ্লুকোজের মাত্রা জানিয়ে দিতে পারবে এই যন্ত্র। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবেন আপনার সঙ্গের মানুষজন।
এবার দেখে নেওয়া যাক এই গ্যাজেটগুলি কিনতে হলে কী কী দেখে নেওয়া প্রয়োজন।
শরীরের তাপমাত্রা মাপতে সাহায্য করে।
ডিজিটাল ইনফ্রারেড ফোরহেড থার্মোমিটার গান: করোনা পরিস্থিতিতে এর প্রয়োজনীয়তা মোটামুটি সব জায়গাতেই। দাম এক হাজার থেকে দেড় হাজারের মধ্যে। অনলাইনে যেমন পাবেন, তেমনই এখন পাড়ার ওষুধের দোকানেও পাওয়া যায়।
কেনার সময়ে মূলত কয়েকটি বিষয় দেখতে হবে-
পোর্টেবল ওয়াটার পিউরিফায়ার: যাঁরা ঘুরতে ভালবাসেন, তাদের কাছে এটি পরিচিত গ্যাজেট।
বাকিরা কিনতে হলে কয়েকটা বিষয় দেখে নিতে হবে-
ভারতে কয়েকটি বেশি বিক্রিত ব্র্যান্ড- লাইফ স্ট্র গো ওয়াটার বোতল, ইউরেকা ফোর্বস অ্যাকোয়াগার্ড পার্সোনাল পিউরিফায়ার বোতল(এর দাম একটু বেশি), টাটা স্বচ্ছ ইনস্টাসিপ ইনস্ট্যান্ট পিউরিফায়ার বোতল।
পালস অক্সিমিটার: করোনাকালে এটি মানুষের কাছে খুব প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। আর সেই কারণেই নকল ও খারাপ যন্ত্র কিনে মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন। প্রথমেই বলি এই যন্ত্রটি বেশ কয়েকটি নামী প্রস্তুতকারক ব্র্যান্ড ভারতেই বানাচ্ছেন, বা এনে দিচ্ছেন। যেমন- বিপিএল,ডক্টর মরপেন, ওমরন, রমসন,ম্যাসিমো ব্র্যান্ডগুলি খুব ভাল। ভাল মডেলের দাম ৭০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে।মনে রাখবেন এটি আপনার রক্তে থাকা অক্সিজেনের পরিমাপ করে দেয়। তবে নির্ভুল ফলাফল দেয় কিনা, আর ব্যবহারকারীদের রেটিং কেমন,তা কেনার আগে গুগলে গিয়ে দেখে নেবেন।
গ্লুকোমিটার: এগুলি এখন ওষুধের দোকানেই পাওয়া যায়। তবে ব্যাটারি কী ধরনের আর কতটা নির্ভুল ফলাফল দেয়, সেটা দেখে নেবেন। ডিসপ্লে দেখে নেবেন, তা আপনি বুঝতে পারছেন কিনা। দাম মোটামুটি ৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে। কয়েকটা বেশি বিক্রিত ব্র্যান্ড, আকু–চেক, ডক্টর ট্রাস্ট, ডক্টর মরপেন, ওয়ান টাচ প্রভৃতি।
তবে মনে রাখবেন একটি কথা, যন্ত্র কিন্তু চিকিৎসকেরবিকল্প নয়, নির্দেশক মাত্র। ফলে শারীরিক কোনও অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতেই হবে। নিজের ডাক্তারি একেবারেই নিজে নিজে নয়।