Durga Puja 2020

অন্য রকম শারদীয়ায় এই সব মানলেই মন ভাল, নিরাপদে কাটবে পুজো

এবারের পুজো কেমন করে কাটালে তা খানিক নিশ্চিন্তের হবে সে কথাই জানালেন মনস্তত্ত্ববিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

Advertisement

আত্রেয়ী বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:১০
Share:

২০২০ উল্টে দিয়েছে আমাদের সব হিসেবনিকেশ। একা মানুষ এখন আরও একা। বিচ্ছিন্ন। কত নতুন শব্দ! সামাজিক দূরত্ব, লকডাউন, কো-মর্বিডিটি, কোয়ারান্টাইন। এই সময়ে আমাদের নিত্য সঙ্গী অনিশ্চয়তা, উদ্বেগ। অজানা, অপরিচয়ের ভয় শিকড় গেঁথে বসেছে মনের গভীরে। এমন পরিস্থিতিতে কেমন হতে চলেছে এবারের পুজো, তা কিন্তু মন্ত্রী-আমলা, কর্তা ব্যক্তি, পুজোর উদ্যোক্তাদের কাছেও স্পষ্ট নয় এখনও। এমতাবস্থায় নিজেদের ঝেড়েঝুড়ে, গুছিয়ে নিয়ে পুজোর ক'টা দিন মানসিক চাপ মুক্ত থাকাটা হতে চলেছে এক বড়সড় চ্যালেঞ্জ।

Advertisement

এমনিতেই পুজো মানে বছরের বাকি দিনগুলোর থেকে একদম আলাদা চারটে দিন। কলকাতার কোন প্রান্তের কোন প্যান্ডেলে কবে কখন হানা দেবে কেউ কষেন সেই হিসেবনিকেশ। কেউ বা ছুটিতে ভিড় এড়াতে নিরালায়। কোনও প্রবাসী ফিরবেন নিজ ভূমে। কিন্তু এ বছর সেসব সম্ভাবনা প্রায় নেই করোনার দৌলতে।

অসুখের মধ্যে এবারের পুজো কেমন করে কাটালে তা খানিক নিশ্চিন্তের হবে সে কথাই জানালেন মনস্তত্ত্ববিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনা আবহে নিরাপদে পুজোর শপিং করতে খেয়াল রাখুন এইসব

মানসিক চাপ মুক্ত থাকতে যা যা করতে হবে:

১) উৎসবের আবহে আত্মীয়-পরিজন, কাছের বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে একটা জমায়েত হয়েই থাকে। এবছর সে অবকাশ নেই। তাই এবার আড্ডা হোক ভার্চুয়াল মিডিয়াকে সঙ্গী করে।

২) এমন অনেক সিনেমা আছে যেগুলো নানা ব্যস্ততায় দেখা হয়ে ওঠেনি বা আবারও দেখতে ইচ্ছে আছে। কাছের মানুষদের সঙ্গে আলোচনা করে বানিয়ে ফেলুন পছন্দসই সিনেমার তালিকা। পুজোর দিনগুলোয় জমিয়ে বসে দেখে ফেলুন সেই ছবি। সময় কেটে যাবে চমৎকার, মনও থাকবে নির্ভার।

৩) দূর-দূরান্তের মণ্ডপে পৌঁছে যাওয়া এবার অনেকের পক্ষেই সম্ভব হবে না। কিন্তু কাছাকাছির মধ্যে বেরতে তো ইচ্ছে করতেই পারে। আর তখন কিঞ্চিৎ সাজগোজও চাই। তাই মজুত রাখুন আপনার পোশাকের সঙ্গে মানানসই কাপড়ের মাস্ক। মুখ ঢেকে বেরতে হলেও মন যাতে কম খারাপ হয়।

৪) অন্দরমহলের আসবাবপত্রের জায়গা বদল করে দিব্য উৎসবের আমেজ এনে ফেলতে পারেন। এতে মনের গুমোট ভাবও অনেকটা কেটে যাবে।

৫) অনেক মানুষ আছেন যাঁরা সারা বছর ব্যস্ততায় কাটিয়ে একটা দিন একটু নিভৃতি খুঁজে নেন। তাঁদের সেরা সঙ্গী হতে পারে বই। এ বছর তাঁরা থ্রিলারে মনোযোগ দিতে পারেন। পারিপার্শ্বিকতা থেকে মন অন্য দিকে ফেরাতে থ্রিলারের চেয়ে উপযুক্ত ফর্ম্যাট আর হতেই পারে না।

৬) বাড়ির বড়দের, অর্থাৎ মা-বাবা-দাদু-দিদা বা অন্য বয়স্ক সদস্যদের প্রতি একটু বেশি মনোযোগ দিন। বয়স বাড়ার সঙ্গে মানুষ এমনিতেই বেশি নিঃসঙ্গ, অসহায় বোধ করেন। আর আজকের সময়ে তাঁরা আরও বেশি টালমাটাল। আপনার সাহচর্য, একান্ত যত্নই পারে তাঁদের মনের মেঘ কাটিয়ে দিতে।

পুজোর ক'টা দিন থাকুন মানসিক চাপ মুক্ত।ছবি :শাটার স্টক

৭) পুজোর দিন কটা স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে ভাবনা চিন্তা থেকেই যায়। চিকিৎসকরাও আপনার-আমার মতো বেড়াতে যান, ছুটি কাটাতে তাঁদেরও ইচ্ছা করে। আর এবার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে। তাই এ বিষয়ে আমাদের হোম ওয়ার্কটা আগে সেরে রাখতে পারলে বিশেষ সুবিধা হয়। অ্যাম্বুল্যান্সের খোঁজখবর এবং পুজোর সময় কাছেপিঠে থাকবেন এমন চিকিৎসকদের ফোন নম্বর নিয়ে রাখুন।আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কোন ওষুধের দোকান থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার পাওয়া যাবে জেনে রাখুন সে কথাও।

পুজোর সময় বয়স্কদের কি বেরনো উচিত?

কী কী করবেন না:

১) মার্চ মাস থেকে আমরা এক অস্থির, আতঙ্কের সময় পার করছি। নানা বিধিনিষেধ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হচ্ছে। ছ'মাস পেরিয়ে এসেও নিশ্চিত কোনও সমাধানের দিশা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। এই দমবন্ধ অবস্থায় অনেকেই হাঁপিয়ে উঠেছেন।

২)যা হবে দেখা যাবে, এই গোছের বেপরোয়া ভাব এই সময় মাথাচাড়া দিলে ক্ষতি সকলেরই। তাই দেখতে হবে নিজেদের অতিরিক্ত ছাড় দিয়ে ফেলে যেন অন্যের ক্ষতির কারণ না হই। আনন্দ নিশ্চয়ই করব, তবে তা নিরাপত্তাবিধি মেনে।

৩) এমন দুর্যোগের সময় আমরা আগে কখনও পার করিনি। প্রতিনিয়ত নানা মাধ্যম থেকে আসতে থাকা খবরাখবর আমাদের ক্রমশ ভারাক্রান্ত করে তোলে। অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়লে অবধারিতভাবে তার প্রভাব পড়বে আমাদের শরীরেও। তাই অতিরিক্ত আতঙ্ক, উদ্বেগ যেন আমাদের দিশাহারা না করে তোলে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement