কম বয়সে কে আর অতশত ভাবে? দরকারও নেই৷ শরীর সুস্থ থাকলে বা বয়স কম হলে ৫–৭ দিনের অনিয়মে খুব ক্ষতি হয় না৷ কিন্তু সুস্থ না হলে? ধরুন উপোশ করে অঞ্জলি দেওয়ার ইচ্ছা৷ অথচ বেশি ক্ষণ খালিপেটে থাকলে মাথা ঘোরে৷ খালিপেটে থাকলে অম্বল–আলসারের দাপটও বাড়ে। খালিপেটে কিছু ওষুধ খেতে হয়, অথচ পুজো না দিয়ে জল পর্যন্ত না খাওয়ার প্ল্যান৷ তা হলে?
তা হলে কিন্তু বিপদ বাড়বে৷ কিন্তু শরীরের উপর বেশি জোর খাটাবেন না৷ তা ছাড়া ওষুধ তো আর খাদ্য নয় যে খেলে উপোশ বানচাল হয়ে যাবে৷ তার সঙ্গে একটু জলও পেটে যাবে, সে ভাবেই উপোশ করতে হবে৷ তার পর ধরুন, সকালের খাবার খাওয়ার পর কোনও জটিল অসুখের ওষুধ খাওয়ার কথা, কিন্তু অঞ্জলি দিতে এত দেরি হয়ে গেল যে সোজা গিয়ে দুপুরের খাবার খেতে বসলেন। পর পর তিন–চার দিনই! বিপদ বাড়বে বইকি!
শরীর বুঝে, রয়ে সয়ে
ক্রনিক অসুখ থাকলে কী করতে পারেন, আর কী পারেন না তা ভুলে গেলে বিপদ৷ ধরুন, মৃগী আছে, অথচ পর পর দু’–দিন রাত জেগে ঠাকুর দেখার ইচ্ছে, অস্টিওআর্থ্রাইটিসের ব্যথা সবে একটু কমেছে, আর তাতেও উঁচু হিল পরে হেঁটে ও লাইনে দাঁড়িয়ে ঠাকুর দেখবেন ভাবছেন, চাইনিজ খেলে মাইগ্রেন বাড়ে, জানা আছে, তাও দলে পড়ে চাইনিজই খেতে ছুটলেন, চিংড়ি–কাঁকড়া খেলে হাঁপানির টান ওঠে জানেন, তাও লোভে পড়ে খেয়ে ফেললেন৷ রোজ দু’বেলা বাইরে খাওয়ার আগে দুর্বল হজমশক্তির কথা ভুলে গেলে পেটের গোলমালেই যে সব মাটি হতে পারে তা মাথায় রাখা দরকার৷
টনসিলের ধাত থাকলে আইসক্রিম খাওয়ার আগে দু’বার ভাবুন৷ বৃষ্টিতে ভিজবেন না৷ সঙ্গে ছাতা বা বর্ষাতি রাখুন৷ ক্লস্টোফোভিয়া (ছোট জায়গায় আটকে পড়ে যাওয়ার ভয়) থাকলে ভিড়ের মধ্যে প্যানিক অ্যাটাক হয়ে যেতে পারে৷ নিজে তো ভুগবেনই, সঙ্গীদেরও ঝামেলা বাড়বে৷ এ রকম হলে শেষ রাতে বেড়িয়ে ঠাকুর দেখুন৷ তখন ভিড় কমে যায়, আলোর সাজও ভাল দেখা যায়৷ হৃদরোগী, বা অন্য কোনও অসুখের কারণে ঘুমের ওষুধ খেতে হয় যাঁদের, তাঁদের জন্যও এক নিয়ম৷ রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে শেষ রাতে উঠে ঠাকুর দেখে নেওয়া৷ তার পাশাপাশি ছোটখাটো বিপদ হলে কী করবেন তাও জেনে নিন৷
আরও পড়ুন:টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ক আউটেই রুখে দিন পুজোর দিনের মুড অফ, কী ভাবে?
আরও পড়ুন: রেস্তরাঁর বাসন্তী পোলাও এ বার বাড়ির হেঁশেলেই, রেসিপি জানেন?
বিপদ বাড়লে
বাড়াবাড়ি সমস্যায় সেই চিকিৎসার সুবিধে আছে এমন হাসপাতালে যেতে হবে৷ কাজেই আগে থেকে সে রকম হাসপাতালের ফোন নম্বর ও ভর্তির পদ্ধতি জেনে রাখুন৷ কিছু টাকা রাখুন ঘরে৷ একাধিক অ্যাম্বুলেন্সের নম্বর নিয়ে রাখুন৷ বাড়িতে কোনও ক্রনিক রোগী, বয়ষ্ক মানুষ, শিশু ও গর্ভবতী মহিলা থাকলে আজই নির্দিষ্ট ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোন সমস্যায় কী করবেন তা জেনে নিন৷ তাঁর অবর্তমানে কার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন তা জেনে তাঁর ফোন নম্বর নিয়ে রাখুন৷ তেমন কিছু না পেলেও আতঙ্কের কারণ নেই। আচমকা বিপদে কোনও মতে হাসপাতালে পৌঁছতে পারলে জরুরি পরিষেবাটুকু পুজোর সময়ও পাবেন।