সত্যজিৎ রায় থেকে শুরু করে ঋতুপর্ণ ঘোষ, বাংলা চলচ্চিত্রের সিন্দুক খুললে দেখা যাবে, এই প্রবাদপ্রতিম পরিচালকদের হাত ধরে বারবারই ফিরে এসেছে ঐশ্বর্য। কখনও গয়নার সঙ্গে নারীজীবনের নিপুণ বুনন, আবার কখনও ‘গুপ্তধনের সন্ধানে’ চরিত্রদের রোমহর্ষক অভিযানে বেরিয়ে পড়া!
এমন বাংলা ছবির সংখ্যা নেহাত কম নয়, যেখানে ছবির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ জুড়ে রয়েছে অলঙ্কার। এই ধনতেরসে ফিরে দেখা যাক সেই সমস্ত বাংলা সিনেমাগুলির তালিকা, যাদের গল্প আবর্তিতই হয়েছে ঐশ্বর্যকে ঘিরে।
মণিহারা (১৯৬১)- সত্যজিৎ রায়ের ‘তিন কন্যা’ চলচ্চিত্রে দ্বিতীয় স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি ‘মণিহারা’ বরাবরই প্রশংসিত হয়েছে দর্শকমহলে। মুখ্য চরিত্র মণিমালিকা এবং গয়নার প্রতি তার অস্বাভাবিক আকর্ষণকে ঘিরেই আবর্তিত হয় গল্পটি।
মণিমালিকার মৃত্যু এবং শেষ উপহারের জন্য তার ফিরে আসা, ভৌতিক ঘটনা– সব মিলিয়ে ১৯৬১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবি রাতের ঘুম কাড়তে বাধ্য।
হীরের আংটি (১৯৯২)- ঋতুপর্ণ ঘোষের পরিচালনায় প্রথম ছবি। লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় রচিত একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি এই ছবি দাগ কেটেছিল দর্শকদের হৃদয়ে।
বলাই বাহুল্য, ছবির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটি হিরের আংটি। বসন্ত চৌধুরী, অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুমন্ত মুখোপাধ্যায়, মুনমুন সেন প্রমুখের অভিনয় ছিল অনবদ্য।
গয়নার বাক্স (২০১৩)- শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস নির্ভর, অপর্ণা সেন পরিচালিত এই ছবির মূল গল্প আবর্তিত হয় অল্প বয়সে স্বামীহারা রাসমণিকে ঘিরে। যার কাছে সম্বল বলতে ছিল তার একান্ত নিজস্ব একটি গয়নার বাক্স।
এমনকি মৃত্যুর পরেও সেই বাক্সের মায়া ছাড়তে পারেনি সে। পরে সেই গয়নার বাক্সের দেখাশোনার দায়িত্ব বর্তায় সদ্য বিয়ে হয়ে আসা সোমলতার উপরে।
নেকলেস (২০১১)- শেখর দাস পরিচালিত এই ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ২০১১ সালে।
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, রুদ্রনীল ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায়, ঋত্বিক চক্রবর্তী ছিলেন গল্পের মুখ্য চরিত্রে। আদ্যোপান্ত হাস্যরসে মোড়া ছবিটি বেশ উপভোগ্য।
গুপ্তধনের সন্ধানে (২০১৮)- মণিকান্তপুরে সাড়ে ৩০০ বছরের পুরনো ভাঙা বাড়িতে বহুমূল্য গুপ্তধনের অনুসন্ধানকে ঘিরে বেশ জমজমাট এই ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়।
গুপ্তধন মিলবে কি মিলবে না, তার উত্তর এখানে না দিলেও ছবিটি দেখে আনন্দ মিলবে, এইটুকু আশ্বাস দেওয়াই যায়।
কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন (২০২২)- ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে ফের অভিযানে সোনাদা-আবির-ঝিনুকের ত্রয়ী। ‘সোনাদা’ ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির তৃতীয় ছবি ছিল এই ‘কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন’।
রাজা শশাঙ্কের হারিয়ে যাওয়া ঐশ্বর্যের সন্ধানে নতুন অভিযান ভাল লাগতেই পারে। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।