না, না! গুলিয়ে ফেলবেন না, এটা কাঁকড়ার মাংস রান্না করার রেসিপি-র প্রতিবেদন নয়! এটা কোকরার মাংস রান্না করার পদ্ধতি জানানোর প্রতিবেদন। তাও বাড়িতেই এবং সহজ উপায়ে। কোকরার মাংস চেখে দেখুন না! কী অসামান্য স্বাদ! কোকরার মাংস পদ-টা আর কিছুই নয়, ছাল সমেত মুরগির মাংসের ডিশ। তার আগে জেনে নিন, ছাল সমেত মুরগির মাংস অর্থাৎ কোকরার মাংসের খাদ্য গুণাবলীর তালিকা।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, মানব শরীরের জন্য যথেষ্ট উপকারী হল মুরগির ছাল। ছাল সমেত মুরগির মাংস খেলে শরীরে অপকারের চেয়ে বরং উপকার কয়েক গুণ বেশি। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে, মুরগির ছালের মধ্যে জমে থাকে প্রচুর চর্বি। আবার এটাও ঠিক যে, ছালে জমে থাকা সেই চর্বির বেশিরভাগটাই অসম্পৃক্ত চর্বি। যা কিনা আবার আমাদের শরীরের পক্ষে দারুণ উপকারী।
হার্ভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেলথ-এর থেকে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, মুরগির ছালে লুকিয়ে রয়েছে খাদ্য গুণাবলীর ভান্ডার। যা মূলত অসম্পৃক্ত চর্বি। যেটা আমাদের শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমানো, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে বিরাট বড় ভূমিকা পালন করে। হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতেও মুরগির ছালে জমে থাকা অসম্পৃক্ত চর্বি ভীষণ উপযোগী। এছাড়াও মুরগির ছালে থাকে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। যেটি সঠিক পরিমাণে আমাদের শরীরে ঢুকলে বহু রোগের দাওয়াই হয়ে দাঁড়ায়। সমীক্ষা বলেছে, ২৮.২৫ গ্রাম মুরগির ছালে যদি ৩ গ্রাম সম্পৃক্ত চর্বি থাকে, তা আমাদের শরীরে চর্বি বাড়ায়, তা হলে অসম্পৃক্ত ফ্যাটের পরিমাণ ৮ গ্রাম পর্যন্ত! যেটি তুলনায় শরীরের পক্ষে অনেক বেশি উপকারী।
তবে হ্যাঁ, মাত্রাতিরিক্ত ছাল সমেত মুরগির মাংস অর্থাৎ কোকরার মাংস রান্না করে খেলে, তা মেপে খাওয়া জরুরি। কারণ, রসনা-তৃপ্তিতেও এই রান্নার স্বাদ তুলনাহীন। খেতে খেতে কতটা খেলাম, খেয়াল থাকে না। আবার এটিও মনে রাখা জরুরি, মাত্রাতিরিক্ত ঝাল-মশলা মাখিয়ে, তেলে রান্না করলে ছাল সমেত মুরগি ওরফে কোকরার মাংস থেকে কিন্তু মোটেও মিলবে না কোনও খাদ্যগুণ!
এ বার আসা যাক রন্ধন প্রণালীর কথায়।
উপকরণ:
ছাল সমেত মুরগির মাংস - ২০০ গ্রাম বা মাঝারি সাইজের ৪ পিস।
থেতো করা পেঁয়াজ - চায়ের চামচের ২ চামচ
থেতো করা রসুন - চায়ের চামচের ১ চামচ
থেতো করা আদা - চায়ের চামচের ১ চামচ
শুকনো লঙ্কা - ১টা
কাঁচা লঙ্কা কুঁচি - চায়ের চামচের হাফ চামচ
নুন - পরিমাণ মতো।
রন্ধন প্রণালী :
১. প্রথমে ছাল সমেত মুরগির টুকরোগুলো ভাল করে ধুয়ে নিন।
২. এর পর সব ক'টা মশলার উপকরণ মাংসের সঙ্গে ভাল করে মিশিয়ে মাখুন।
৩. মাটির হাঁড়িতে জল উনুনে গরম করতে দিন।
৪. জল একটু গরম হলে মশলা মাখানো মাংস হাঁড়ির ভেতর দিয়ে পরিমাণ মতো নুন দিন।
৫. মাংস সেদ্ধ হলে হাঁড়ি নামিয়ে চাপা দিয়ে রাখুন।
৬. ভুলেও এই রান্নায় আলাদা করে কোনও তেল দেবেন না। রান্নার সময়ে মুরগির ছালের নিজস্ব চর্বি থেকে বেরনো তেলেই সম্পূর্ণ রান্না হয়ে যাবে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।