আজও মায়ের ভোগে পাঁঠার মাংস নিবেদনের রেওয়াজ আছে
নারায়ণ সেবা যেমন সিন্নি ছাড়া হয় না, তেমনই তন্ত্রের দেবী মা কালীর আরাধনাও অসম্পূর্ণ কারণবারি ও মাংস নিবেদন ব্যতীত। কলকাতার অন্যতম প্রাচীন কালীক্ষেত্র কালীঘাটে দেবী কালিকার ভোগে মাছের কালিয়া এবং পাঠার মাংস, চুনো মাছের টক নিবেদন করা হয়। তারাপীঠের মা পছন্দ করেন শোল মাছ পোড়া, পাঁঠার মাংস। মা ভবতারিণী তৃপ্ত হন মাছের ভোগে। মা ভবতারিণীর মতোই মাছের ভোগে তৃপ্ত হন সিদ্ধেশ্বরী কালী মা। বর্ধমানের কালনা শহরকে কালীময় বললে অত্যুক্তি হবে না। শহরজুড়ে রয়েছে অজস্র কালী মন্দির। কথিত যে, ওখানকার সিদ্ধেশ্বরী কালী মা খুবই জাগ্রত। দেবী অম্বিকা সিদ্ধেশ্বরীর বাৎসরিক দীপান্বিতা অমাবস্যায়। দেবীকে নিত্যদিন অন্নভোগ দেওয়া হয়। এখানে অন্নের সঙ্গে প্রতিদিন মাছ ভোগ দেওয়ার নিয়ম। বাৎসরিক পুজোয় চিংড়ি এবং ইলিশমাছ ভোগ দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। মা কামাখ্যা আবার পছন্দ করেন কারণবারি ও মাংস।
মাংস আবার নিরামিষ! কোথাও যেন গরমিল, মনে হতেই পারে। তবে এটাই রীতি। মায়ের ভোগে নিবেদন করা মাংস রান্নায় ব্যবহার করা হয় না পেঁয়াজ-রসুন। কিন্তু ও সব ছাড়াও ভোগের মাংস এত সুস্বাদু হয় ভক্তি গুণেই।
ভোগের মাংস বাড়িতে তৈরি করতে হলে প্রয়োজনীয় উপকরণগুলি হল- মাংস, জলে গোলা হিং, গোটা গরম মশলা, আদা বাটা, টক দই, জিরে গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, নুন, চিনি, সরষের তেল ও ভাল ঘি।
প্রথমে মাংস ম্যারিনেট করতে হবে টক দই দিয়ে। কড়াইতে তেল গরম করে তাতে চিনি, গোটা গরম মশলা, হিং, আদা বাটা, দিয়ে ম্যারিনেট করা মাংস দিতে হবে। আন্দাজ মতো নুন, হলুদ, জিরে, ধনে দিয়ে ভাল করে কষিয়ে সেদ্ধ করতে হবে এর পর। শেষে গুঁড়ো গরম মশলা, ঘি ছড়িয়ে দিলেই তৈরি কালীবাড়ির ভোগের মাংস।
ছবি ও ভিডিয়ো সৌজন্যে শুভজিৎ ভট্টাচার্য
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।