প্রতীকী চিত্র
দুর্গাপুজোর আমেজের সঙ্গে ভোজনরসিক বাঙালির সম্পর্ক যেন ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। পুজোর ক’দিন ঘরে-বাইরে চলতে থাকে জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া। পোলাও-মাংস থেকে শুরু করে বিরিয়ানি, রোল, চাউমিন, ভিন্ন স্বাদের মিষ্টি, রকমারি পানীয়– কিছুই বাদ পড়ে না এই দিনগুলোয়। বিশেষত যাঁরা ভিন্ন স্বাদের খাবারের খোঁজে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়ান, তাঁদের পুজোয় অন্তত এক বার হলেও পুজোর কলকাতায় ঢুঁ মারা উচিত।
কলকাতা হোক বা কোনও প্রত্যন্ত গ্রাম, হরেক খাবারের স্বাদেই যেন পুজোর আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে যায়। তবে অন্যান্য উৎসবের থেকে একেবারেই আলাদা এই দুর্গাপুজো। কারণ, শারদ-আমেজে বাঙালি বাড়িতে কোনও খাবারেই আর বাধা-নিষেধ থাকে না। নিরামিষ থেকে আমিষ, মিষ্টি থেকে টকঝাল, সাধারণ ঘরোয়া রান্না থেকে ফিউশন পদ, সবই চলে রমরমিয়ে। ষষ্ঠী থেকে দশমী, সকালের জলখাবার থেকে রাতের খাবার– সবেতেই থাকে বাহারি আহার।
দুর্গাপুজোর ষষ্ঠী এবং অষ্টমীর দিন বহু বাড়িতেই নিরামিষ খাওয়ার চল রয়েছে। শুধু নিরামিষ নয়, অনেকে চালের তৈরি কোনও জিনিসই খান না এই দিনগুলিতে। তাই প্রথম পছন্দে থাকে লুচি-ছোলার ডাল বা লুচি-তরকারি, ফুলকপির তরকারি, সুজি, ধোঁকার ডালনা, চাটনির মতো পদ।
সপ্তমীতে নিরামিষের কোনও ব্যাপার থাকে না। সে দিন মেনুতে বিরিয়ানি, রোল, চাউমিন, ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেন– সবেরই অবাধ আনাগোনা। কারণ, ইদানীং যে কোনও উৎসবেই বাঙালির পছন্দে পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছে বিরিয়ানি, সে মটন বিরিয়ানিই হোক বা চিকেন। ছোট থেকে বড়, পুজোয় সবারই চাই এই পদ। বাঙালি খাবার না হলেও, বাংলায় বিরিয়ানির জনপ্রিয়তা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে।
নবমীতে মাংস ছাড়া বাঙালি বাড়িতে আর কিছু ভাবা যায় নাকি! সে দিন পাতে কষা মাংস থাকবে না, তা-ও কি হয়? ঘরে ঘরে তাই এই দিন হেঁশেল ম ম করে তার সুবাসে। সঙ্গে থাকে পোলাও, ফ্রায়েড রাইস বা সরু চালের ভাত।
দশমী মানেই মন খারাপের রেশ। সঙ্গে থাকে মিষ্টিমুখ। যাকে ছাড়া দুর্গাপুজো এক রকম অসম্পূর্ণ বলা চলে। এই দিনটায় অবশ্য পাল্লা ভারী নাড়ু, রসগোল্লা, বোঁদে, গজার মতো মিষ্টিরই।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।