হিন্দু ধর্মে ঈশ্বর আছেন প্রায় কয়েক কোটি। তাঁরা ভক্তকুলে প্রসিদ্ধ লীলার গুণেই। পুরাণের গল্প সে রকমই আভাস দেয় কিছুটা। এ সব নিয়ে মত পার্থক্য ছিল, থাকবেও। তবে এ কথা হয়ত অনস্বীকার্য যে, হিন্দু দেব-দেবীরা একেবারে পরিবারের অংশ হয়ে উঠেছেন বিশ্বাসের জোরেই। ঊমা যেমন ঘরের মেয়ে, আবার মা দুর্গা- দুর্গতিনাশিনী। ননীচোরা গোপাল আবার যেন ছোট শিশুটি- ঘুম থেকে তোলা থেকে শুরু করে শয়ন দেওয়া, সবই তাঁর সেবার অংশ। আবার তিনিই স্বয়ং সৃষ্টি- শ্রী বিষ্ণু। হিন্দুদের রোজনামচায় তাই ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে ইষ্ট দেবতার সেবার বিষয়টি।
আপনার প্রিয় দেবতা গণেশ নাকি মা কালী? নিত্য পুজোয় নিত্য শুধুই বাতাসা আর নকুলদানা দেন সেবায়? জেনে নিন কোন ভোগে সন্তুষ্ট হন কোন দেবতা।
ভগবান বিষ্ণু – পুরাণ মতে কিশমিশ, মধু, কলা, ছোলার ডাল এই সবই তাঁর পছন্দের। তাঁর ভোগে ৫৬ রকমের পদ নিবেদনের রীতি আছে বলে কথিত। তবে বেশি সন্তুষ্ট হন তিনি মহামন্ত্র স্মরণে।
আদিদেব মহাদেব – তিনি যোগী, তাই অল্পেই সন্তুষ্ট। সাদা রঙের যে কোনও মিষ্টি তাঁর প্রিয়। এ ছাড়া দুধ, ঠান্ডাই ভালবাসেন তিনি।
শনি দেবতা- নাম শুনে ভয় পেলেও শনি দেবতা কিন্তু সৃজন দক্ষ। শাস্ত্র মতে, মাতৃগর্ভে থাকাকালীন খাদ্য ও জলের অভাবে তাঁর গায়ের রং কালো হয়ে যায়। দৈব বলে তাঁর জন্ম। এবং জন্ম সূত্রেই তিনি কালো রং পছন্দ করেন। তিল ও গুড়ের নাড়ুুু, কালো ডালের খিচুড়ি তাঁর বড়ই প্রিয়।
দেবী সরস্বতী – বিদ্যা বুদ্ধি ও জানের দেবী প্রসন্ন হন সতেজ ফলে। এ ছাড়া খিচুড়ি তাঁর ভীষণ প্রিয়।
মা দুর্গা- বৈষ্ণব ও শৈব মতে তিনি নিরামিষ ভোগ পছন্দ করেন। শাক্ত মতে মনে করা হয়, তিনি আমিষাশী। এখন পশুবলিতে নিষেধ আছে ঠিকই, তবে এক সময়ে তার প্রচলন ছিল। মুগ ডালের খিচুড়ি ও ক্ষীর দেবীর খুব প্রিয়।
মা লক্ষ্মী- পুরাণ মতে মালপোয়া ও ক্ষীর পছন্দ করেন দেবী। তবে প্রচলিত যে, আমলকী এমনকি লঙ্কাও নিবেদন করা হয় তাঁর সেবায়।
গোপাল- কে না জানেন যে, নাড়ুুগোপালের সবচেয়ে প্রিয় খাবার হল মাখন। এ ছাড়া মিছরি, লাড্ডু, রাবড়িও পছন্দ তাঁর।
মা কালী- কথিত, পায়েস তাঁর খুব প্রিয়। তবে তারাপীঠ, কালীঘাট সব মন্দিরেই তাঁর সেবায় নিরামিষ মাছ, মাংস নিবেদন করা হয়।
বজরংবলী- শ্রীরাম ভক্ত হনুমান ভালবাসেন মতিচুরের লাড্ডু, বেদানা, গুড়, ডাল ইত্যাদি।
সিদ্ধিদাতা গনেশ- সকলেই জানেন যে, এই দেবতা সন্তুষ্ট হন লাড্ডুতে।