পুজো মানে শুধু কলকাতা তো নয়। অনেকের কাছেই পুজো মানে দে ছুট! এক্কেবারে বাক্স-প্যাঁটরা গুছিয়ে লম্বা ছুটিতে পাড়ি। সেই ছুটির ঠিকানার তালিকায় অনেকেই রাখতে ভালবাসেন বাংলাদেশকে।
একে ঘরের কাছে বিদেশ, তাতে দুর্গাপুজোর আমেজটাও ভরপুর। আর এক বার গিয়ে পড়লে সে দেশের স্থানীয় খাবার বা পানীয় এক বারও চেখে দেখবেন না, তা-ও কি হয়!
পুজোর বাংলাদেশ ভ্রমণের ফাঁকে খাদ্যরসিক বাঙালি যদি এক বার সিলেটে গিয়ে পড়ে, তাহলে চেখে দেখতেই হবে সাত রঙের চা! সিলেটের জাফলঙে পাওয়া যায় এই চা। পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে অনেকেরই।
কেন এমন নাম? কারণটা সহজ। সাতটা স্তর বা লেয়ার আছে এতে। শরবত ভেবে ভুল করতে পারেন কেউ। তবে এটি কিন্তু চা-ই। জাফলঙে ‘ক্যাফে নির্যাস’ নামে একটি দোকানে এই চা পান করার সুযোগ পাবেন।
পাঁচ রঙা, তিন রঙা চা-ও পাওয়া যায় এখানে। তবে বিখ্যাত হল সাত রঙের চা। এই চায়ের রেসিপির মনোপলি ক্যাফের মালিকেরই। নিজে হাতেই এই চা বানান তিনি। কী কী থাকে এতে?
একেবারে নীচের তলায় আছে মধু এবং মাল্টা চায়ের মিশ্রণ। রং বাদামি। তার উপরের স্তরে কফি। তার উপরে দুধের স্তর। তার উপরে বিশেষ লিকার চা। তার উপরে আবার দুধ চা। তারও উপরে সবুজ চা বা মাচা গ্রিন টি। এবং একেবারে উপরে মানে সাত নম্বর স্তরে আবার দুধ।
এ ভাবে সাতটি রং তৈরি করা হয় চায়ে। তবে রেসিপি জানা থাকলেই যে এই চা বানিয়ে ফেলা যাবে, তা বোধহয় নয়। তার জন্য জানতে হবে বিশেষ কৌশলও। সেটি এখনও কাউকে জানাননি এই দোকানের মালিক। তাই বাংলাদেশের ৮০ টাকায় কেনা চা-টির উপর এখনও রয়েছে তাঁদের আধিপত্য।
বাংলাদেশ তো বটেই, পৃথিবীর নানা প্রান্তের পর্যটকদের মধ্যে ছড়িয়ে গিয়েছে এই চায়ের সুনাম। বিদেশ থেকেও পর্যটকরা বাংলাদেশে বেড়াতে গেলে চলে যান এই ক্যাফেতে, সেখানকার সাত রঙের চা পান করতে। এ বার পুজোয় বাংলাদেশ যাচ্ছেন? আপনার ছুটির রঙে সাতরঙা চা-ও মিশবে নাকি এক বার? এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।