স্বতন্ত্র্যের পোশাকে ঋতুুপর্ণা
পোশাক পরে দেখে তার পর সেটা কেনা উচিত। অনলাইনে কিনলেও পরে দেখুন। না মানালে ফেরত দিন। শুধু পোশাকের স্টাইল নয়, ফ্যাব্রিকটাও খুব জরুরি। যাঁরা ঘামেন, তাঁদের সেই অনুযায়ী ফ্যাব্রিক বাছা উচিত। পুজো গরমেই হয়, তাই এমন ফ্যাব্রিক বাছা উচিত যা স্কিন ফ্রেন্ডলি।
এ বার আসি রঙের কথায়। রঙের ক্ষেত্রে যেমন কিছু ভুল ধারণা আছে আমাদের। উজ্জ্বলদের সব রং মানায় আর ত্বকের রং শ্যামবর্ণ হলে কোনও রং মানায় না— এমন কিছু ভুল ধারণায় ভুগি আমরা। যাঁদের গায়ের রং চাপা, তাঁরা লাল-কালো-হলুদ-রাস্ট-ম্যাজেন্টা আর তসরের রং পরুন, গায়ের রঙের ঔজ্জ্বল্য বাড়বে। আর উজ্জ্বল রঙের লাবণ্য বজায় রাখতে প্যাস্টেল শেড বাছুন। চোখের আরাম হবে।
ইদানিং অনেকেই গোল গলা ব্লাউজ পরে লটকন ঝুলিয়ে নেন। একটু ভেবে দেখুন কেন লটকন?
লটকন তখনই ব্যবহার করা উচিত যখন ব্লাউজের বড় গলা হয় আর ব্লাউজ ধরে রাখার জন্য লটকন ব্যবহার করা হয়। অকারণ ছোট গলায় লটকন পরার মধ্যে কোনও নতুনত্ব নেই।
সেক্সি পোশাক মানেই ক্লিভেজ দেখান নয়
যে পোশাকই পড়ুন মিনি স্কার্ট বা শাড়ি নিজেকে বিশ্বাস করে পরতে হবে। এখন ‘আপ রুচি খানা পর রুচি পহেনা’ এই প্রবাদবাক্য আর চলে না। পোশাক পরার ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি আত্মবিশ্বাস। তবে পুজোতে আলাদা নজর কাড়তে সবাই চায়। যেমন সুন্দর হেয়ারকাট পুজোর কিছু আগেই করে ফেলুন। পুজোর আগে দামি ফেসিয়াল না করে রেগুলার ক্লিনজিং টোনিং ময়শ্চারাইজিং-এর দিকে নজর দিন তা হলেই হবে। খুব সাধারণ কুর্তা বা শাড়ি বা ব্লাউজ কাট ভাল হলেই কিন্তু সেটা আলাদা করে নজর কাড়ে। নিউট্রাল কালারের জুতো আর ব্যাগ রাখুন, যে কোনও পোশাকের সঙ্গে মানানসই হবে। ভারী পোশাক হলে হাল্কা গয়না পরুন। আর চোখের মেক আপ ঘন হলে হাল্কা লিপস্টিক লাগান। পুজো বলে সব কিছুকে অকারণ উজ্জ্বল করে তুলবেন না।তাতে আপনার স্বাভাবিক ব্যক্তিত্ব নষ্ট হবে।অল্প খরচে হয়ে উঠুন অনন্যা।
রোগা আর মোটাদের আলাদা পোশাক
শাড়ি সব রকমের শরীরেই মানানসই। রোগাদের শর্ট টপ শর্ট স্কার্ট যে রকম মানানসই তেমনই যাঁরা অপেক্ষাকৃত মোটা তাঁরা লং স্কার্ট পরলেও শর্ট টপ পরবেন না। হিপলাইন কভার করা টপ পরুন। যাঁরা রোগা তাঁরা সব সময় হরাইজেন্টাল স্ট্রাইপ নিয়ে খেলুন। ছোট প্রিন্টের ফ্লেয়ারি জামা পরুন। লং ড্রেস পরলে হাঁটুর নীচ অবধি পরুন। কুর্তি পরলে ওয়েল ফিটেড ছোট লেন্থের পরুন। আর পয়েন্টেড হিল পরুন। শরীরের গঠনটা পরিষ্কার হবে। একটা ছোট শরীরে চশমা, টিপ, গয়না সব একসঙ্গে পরবেন না। বেল স্লিভস্-এ রোগাদের বেশ মানায়। সরু আর লম্বা স্ট্রাইপ রোগারা কখনওই পরবেন না।
আরও পড়ুন: সুতির নকশা ও সুতির কাপড়েই বাজিমাত!
যাঁদের স্বাস্থ ভাল বা বুক ভারী, তাঁরা লম্বা স্ট্রাইপ বা আড়ে স্ট্রাইপ ফেলুন। স্লিম দেখাবে। বুকের কাছে জয়েন্ট বা কুচি এ ক্ষেত্রে একদম নয়। লং ড্রেস পরলে স্ট্রেট কাট পরুন। কিন্তু কোমরে বা বুকের কাছে কোনও কাট বা কুচি, স্টিচ ব্যবহার করবেন না। মোটা লাগবে।
নতুন ট্রেন্ড
এ বারের পুজোর ট্রেন্ড পিঠে নানা রকম এমব্রয়ডারি, ছবি আঁকা ব্লাউজ বা ব্লাউজেই নানা রকম নতুনত্ব, কাট। আমরা ট্রেন্ডের দিকে না ঝুঁকে নিজের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার দিকেই বেশি জোর দিতে চাই। কারণ আজ যা ট্রেন্ড কিছু দিন পরেই তা পুরনো হয়ে পড়ে থাকবে। ফ্যাশনের ক্ষেত্রে শরীরের গঠন জেনে পোশাক পড়ুন।
আরও পড়ুন: মুখের গড়ন অনুযায়ী কী গয়না পরবেন? জানালেন বরুণা ডি জানি
ছেলেরা এখন ভীষণ ফ্যাশন সচেতন। ধুতি পাঞ্জাবি তো পুজোর চিরকালীন মাধুর্যময় রীতি। সব বয়সের পোশাক। ধুতিতে এমব্রয়ডারি ইন। সরু ধুতির পাড় এ বার ফিরে আসছে। অ্যাসিমেট্রিক কাট তাঁরাই পড়ুন যাঁদের শরীর একেবারে ঝরঝরে। একটুও ভুঁড়ি থাকলে অ্যাসিমেট্রিক কুর্তা চলবে না। সে ক্ষেত্রে ফিটেড কুর্তা পরুন। তবে এক্সপেরিমেন্ট করতে গেলে ধোতি প্যান্ট, যোধপুরি বা জিনসের সঙ্গেও কুর্তা পরতে পারেন।
এ বার পুজোয় সারং
সারং আসলে একটা লম্বা কাপড়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর চল আছে। গোয়াতেও এক সময়ে এই পোশাকের চল ছিল। সারংটা আমরা তিন ভাগে ভাগ করেছি। নীচের অংশটা শাড়ির মতো। উত্তরীয় থাকে। আর হিপ কভার করা টপ থাকে। দেখতে শাড়ির মতো হলেও আঁচলের জায়গাটা শাড়ির প্যাটার্নে কভার না থাকায় হাতটা খালি থাকে, তাতে যে কোনও কাজ করতে সুবিধে হয়।
পরামর্শদাতা: অদিতি গুপ্ত ও দেবপ্রিয়া রায়
ছবি সৌজন্য: স্বতন্ত্র্য