সামনেই কালীপুজো। বছরের এই সময়টাকে ঘিরে কত গল্পকথাই না ছড়িয়ে থাকে আকাশে-বাতাসে! সে এ দেশের ভূত চতুর্দশীই হোক, কি বাইরের দেশের হ্যালোইন, গা শিরশিরে এক আমেজ যেন ঘিরে থাকে চারপাশে।
ভূতুড়ে এই পরিবেশকে আরও জমাটি করে তুলতে পারেন বন্ধুদের সঙ্গে কিংবা একাই। ভূত চতুর্দশীর রাতে সঙ্গী হোক গা ছমছমে ভুতুড়ে ছবির ম্যারাথন! বাংলা, হিন্দি কিংবা ইংরেজি যে ছবি অবশ্যই দেখতে পারেন এ রাতে, তারই হদিস রইল এই প্রতিবেদনে।
বাংলা ছবিতে ভুত নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট নেহাত কম হয়নি গত কয়েক দশক ধরে। অশরীরীর গা ছমছমে কাহিনি থেকে হাল্কা মেজাজের জমাটি ভূতের আনাগোনা, কিংবা মনের টানাপড়েনে লুকিয়ে থাকা ভয়ের গল্প- ভূতুড়ে আমেজ বারবারই ছুঁয়ে গিয়েছে দর্শককে।
নিশুত রাতে নিখাদ ভূতের গল্প যাঁদের পছন্দ, তাঁরা দেখতে পারেন সেই ১৯৬১ সালে মুক্তি পাওয়া, সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত ছবি ‘তিন কন্যা’। তারই একটি গল্প হল ‘মণিহারা’, বাংলা সিনেমার ইতিহাসে যা চিরকালীন সেরা গা ছমছমে চিত্রনাট্যের তালিকায় অন্যতম হয়ে থেকে যাবে।
বাঙালির পছন্দের ভুতুড়ে ছবির তালিকায় পাকা জায়গা করে ফেলেছে অনীক দত্ত পরিচালিত ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’-ও। পুরনো, নতুন, আধুনিকতা ও সাবেকিয়ানার টানাপড়েনে ক্ষতিগ্রস্ত ভূত সমাজের গল্প বলা অনবদ্য এই ছবিটি ভূত চতুর্দশীতে সপরিবার বসে দেখে ফেলতেই পারেন।
সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের লেখা ও অপর্না সেনের পরিচালনার যুগলবন্দি হয়ে ২০১৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘গয়নার বাক্স’। মানুষের জীবনের ওঠাপড়া, পরিবার তথা সমাজের ভাবনাচিন্তা, রীতিরেওয়াজের ফাঁস এ কাহিনিতে ধরা পড়েছে এক ভূতের উপস্থিতির হাত ধরে।
হিন্দি ছবিতে ভাল ভূতের গল্প খোঁজেন অনেকেই। ভূত না হলেও সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার চাই-চাই। গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো তেমনই ছবির তালিকায় ২০০৭ সালে তৈরি ‘ভুল ভুলাইয়া’-র জুড়ি মেলা ভার।
২০১৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘স্ত্রী’ ছবিটি বিশেষ ভাবে দাগ কেটেছে দর্শক মনে। ভুতুড়ে গল্পের শিরশিরানি স্বাদের পাশাপাশি নির্ভেজাল মজার খোঁজে অবশ্যই দেখতে পারেন অন্য রকম এই কাহিনি।
ভুতুড়ে গল্পে ইদানিং টেক্কা দিচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মও। নেটফ্লিক্সে ২০২০ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘বুলবুল’। গা ছমছমে দৃশ্য, শিউড়ে ওঠার মতো এক কাহিনির ভাঁজে ভাঁজে বোনা নিপীড়িত মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ের কথাও।
তবে, ভৌতিক ছবি বলতেই আজও সবার আগে মনে পড়ে হলিউডের নানা জনপ্রিয় সিনেমার কথা। বছরের পর বছর ধরে তাঁদের ভাঁড়ারে একের পর এক হাড় হিম করা কাহিনি। ১৯৭৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য এক্সরসিস্ট’ যেমন। প্রায় পাঁচ দশক পরেও ভয়ে কাঁপিয়ে দেওয়া এই ছবির চিত্রনাট্য অস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল।
২০১০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ইন্সিডিয়াস’ ছবিটি ‘কনজ্যুরিং’, ‘অ্যানাবেল’ ইত্যাদি মুভি ইউনিভার্সের অন্তর্গত। কিন্তু জনপ্রিয়তার দিক থেকে সবথেকে এগিয়ে।
পরিচালক অ্যারি অ্যাস্টারের বিখ্যাত কাজগুলি মূলত ভয়ের নানা রকম মাত্রাকে ঘিরেই তৈরি। এ ক্ষেত্রে ২০১৮-য় মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হেরেডিটারি’ ও ২০১৯-এর ‘মিডসামার’ এর কথা না বললেই নয়! গায়ে কাঁটা দেওয়া অভিজ্ঞতা চাইলে দেখতে পারেন কিন্তু!
ক্লাসিক ভূতের গল্প ছাড়া জমে না? তা হলে অবশ্যই দেখে নিতে পারেন ‘ইট’ এবং তার সিক্যুয়েল। ভুতুড়ে ছবির আমেজ পুরোদস্তুর অনুভব করে নিন এই ছবিগুলির হাত ধরে।