তারা মা-র বাস ছিল চিনে। মহামুনি বশিষ্ঠ দেব তাঁকে সন্তুষ্ট করতে শুরু করেন তপস্যা। সে দিন মায়ের ভোগে ছিল দুধ, ফল, মিষ্টি।
সেই পুজোয় সন্তুষ্ট হননি তারা মা। বশিষ্ঠ মুনিকে তিনি জানান, সত্যিই তাঁকে সন্তুষ্ট করতে হলে তন্ত্র মতে পুজো করতে হবে। আর সেই পুজোর রীতিও আলাদা।
স্বপ্নাদেশে মা জানান, বশিষ্ঠ মুনিকে যেতে হবে চিনে। সেখানে বুদ্ধরূপী জনার্দনের সঙ্গে দেখা করে শিখতে হবে তপস্যার রীতি-নীতি।
বশিষ্ঠ মুনি চিনে গিয়ে দেখা করলেন বুদ্ধরূপী জনার্দনের সঙ্গে। শুরু হল মায়ের তপস্যার শিক্ষা। এই নিয়মে ছিল ‘পঞ্চ ম’। তারা মায়ের পুজো তাই পঞ্চ ম’ ছাড়া হয় না।
বুদ্ধরূপী জনার্দনের থেকে তন্ত্র মতে পুজো শিখে বশিষ্ঠ মুনি শুরু করেন তপস্যা। তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করে মায়ের আদেশ পান, বরলাভও করেন। বর হিসাবে বশিষ্ঠ মুনি চেয়েছিলেন তারা মায়ের মা়তৃরূপ দেখতে।
সমুদ্রমন্থনের পর মহাদেব যখন বিষের জ্বালায় জর্জরিত, তারা মা সেই জ্বালা কমাতে মাতৃরূপে শিবকে বাম বক্ষের স্তন্যপান করান। মায়ের সেই সময়কার রূপই দেখতে চান বশিষ্ঠ মুনি।
মুনির প্রার্থনা পূরণ করেন তারা মা। ‘তথাস্তু’ বলে শিলায় পরিণত হন। সেই শিলা মূর্তিকে মায়ের ইচ্ছা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠা করা হয় দ্বারকা নদীর ধারে। তারাপীঠে শুরু হয় তারা মায়ের পুজো।
এক বার ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মন্দির। মল্লারপুরের জমিদার জগন্নাথ রায় নতুন করে মন্দির তৈরি করেন। বর্তমান তারা মায়ের মন্দির প্রায় দুশো পঁচিশ-ত্রিশ বছরের পুরনো। স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস, মায়ের আরাধনা করতে ভগবান শিব স্বয়ং বামদেব রূপে জন্মগ্রহণ করেন। তিনিও তন্ত্র মতেই মায়ের আরাধনা করতেন। তথ্য সহায়তা: সজল কুমার ভট্টাচার্য(মিলন পাণ্ডা-তারাপীঠ)