ধনতেরস শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হল ধন অর্থাৎ সম্পদ এবং তেরস অর্থাৎ ত্রয়োদশী। কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষে তেরোতম দিনে ধনতেরস পালন করা হয়।
উত্তর ভারতীয় হিন্দুদের মধ্যে ভীষণ রকম জনপ্রিয় এই উৎসব। সে দিন তাঁরা বাড়িঘর পরিচ্ছন্ন করে সারা রাত প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখেন সংসারে সমৃদ্ধি নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে। আবার বাঙালিরা এই সময়ে দীপান্বিতা কালীপুজো করেন।
লোকমুখে কথিত, অষ্টাদশ শতকে নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় তাঁর প্রজাদের রীতিমতো ভয় দেখিয়ে এই পুজোর প্রচলন করেছিলেন।
এমনকি ১৭৭৭ সালে রচিত কাশীনাথের শ্যামাসপর্যাবিধিগ্রন্থে প্রথম উল্লেখ পাওয়া গিয়েছিল এই পুজোর।
ভক্তদের বিশ্বাস, এই সময় কালে নানা রকমের আচার, রীতি সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে সকলের জীবনে। যেমন বহন করে আনতে পারে সমৃদ্ধি, তেমনই কাটিয়ে দিতে পারে নানা বিপদ।
কী ভাবে তা করা হয়? রীতি অনুযায়ী, বাড়িতে মাটির প্রদীপ কিনে জল দিয়ে প্রথমেই খুব ভাল করে ধুয়ে ফেলুন।
তারপর সেই প্রদীপে সলতে দুটি একে অন্যের উপরে এমন ভাবে রাখুন, যাতে ওই একই প্রদীপকে চার দিক থেকে জ্বালানো যায়।
তার পরে এই প্রদীপকে তিলের তেল দিয়ে কানায় কানায় ভর্তি করুন। আবার প্রদীপে কিছুটা কালো তিলও দিয়ে দিন।
প্রদীপটিকে এর পর বাড়ির মূল দরজার সামনে মাটির তাল বা গমের ছোট্ট গাদা বানিয়ে তাঁর উপরে দক্ষিণ মুখে বসিয়ে দিন। শেষে হাতে ফুল নিয়ে যম দেবকে স্মরণ করে প্রার্থনা করুন ‘নম যমদেবায় নমঃ’ মন্ত্র উচ্চারণ করে।
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, ধনতেরসের দিনে পদ্ধতিগত ভাবে পুজো ও দীপদান করলে অকালমৃত্যুর ভয় কাটাতে পারবেন অনেকটাই।