আলোর উৎসব ও দেদার বাজি পুড়িয়ে উদযাপনের দিন ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে। যদিও এখন বাজি কেনাবেচার উপরে যথেষ্ট নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, শব্দবাজি থেকে আলোর বাজি সবেতেই কড়া নজর রয়েছে প্রশাসনের, তাতেও বাজি বিক্রি আটকে থাকছে কই!
এখনও কালীপুজোর রাতে প্রচুর শব্দবাজি ফাটানো হয়ে থাকে, যা রীতিমতো দূষণের কারণ। শব্দদূষণে শুধু যে আপনার ক্ষতি তা-ই নয়, প্রতি বছর এই সমস্যায় নাজেহাল হতে হয় আপনার প্রাণের চেয়েও আদরের পোষ্যদেরও। ভয়ে কাঁটা সন্তানসম অবলা জীবগুলির কষ্ট দেখে প্রতি বছরই নতুন করে চিন্তার ভাঁজ পরে পশুপ্রেমীদের কপালে।
পশুচিকিৎসক অভিরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, কিছু সহজ পদ্ধতির মাধ্যমে আপনার পোষ্যকে একটু আরামে রাখার চেষ্টা করা যায়। তাদের সুস্থতা ও সুরক্ষার দিকেও খেয়াল রাখা যায়।
প্রথমেই তিনি জানান যে, দীপাবলি বা কালীপুজোর আনন্দে পরিবারের সকলে মিলে মেতে উঠলে চলবে না, বরং যে সদস্যের সঙ্গে আপনার পোষ্য সবথেকে আরামে থাকে, তাদের সঙ্গে কালীপুজোর ৪৮ ঘণ্টা আগে ও পরে সময় কাটাতে দিন যাতে সে সুরক্ষিত বোধ করে
ওই চিকিৎসকের মতে, প্রচুর পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। কারণ, পোষ্যদের এই সময়ে ডিহাইড্রেটেড হয়ে যাওয়ার মারাত্মক প্রবণতা থাকে। ভয় পেলে দুশ্চিন্তা থেকে জল খেতে ভুলে যায় তারা।
যদি এক দু'দিন কম খাবার খায়, তাতে সমস্যা নেই। সে ক্ষেত্রে জলের মধ্যে পেট ওআরএস মিশিয়ে দিতে হবে।
এ ছাড়াও দীপাবলির আগেই এক জন পশুচিকিৎসককে দেখিয়ে প্রয়োজনমতো হার্বাল অ্যাংজিয়োলাইটিক ওষুধ দেওয়া দরকার পোষ্যকে। এতে ভয় ও উত্তেজনা খানিকটা হলেও প্রশমিত করা যায়। ওষুধ না দিলেও পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রাখুন।
অন্য পদ্ধতিতেও আপনার পোষ্যকে শান্ত রাখা যায়। আপনার পোষা কুকুর থাকলে তাকে আরামে রাখার জন্য ঘরের দরজা জানলা ভালো করে বন্ধ করে হাল্কা এসি চালান। সঙ্গে চলুক সুন্দর মিউজিক বা কোনও গানের সুর, যাতে বাইরের শব্দ ভিতরে কম আসতে পারে।
যাঁরা পোষ্যদের দৌড়ে বেরিয়ে যাওয়া, বা আসবাবের তলায় লুকিয়ে পড়া দেখে চিন্তিত থাকেন, তাঁদের প্রতি তাঁর উপদেশ হল অযথা পোষ্যদের বিরক্ত না করতে যাওয়া, এবং প্রয়োজন তেমন হলে অবশ্যই পশু চিকিৎসককে জানানো।
আর শেষ টিপস হিসেবে তিনি বলেন, “এটি আলোর উৎসব, শব্দের উৎসব নয়!” সচেতনতার কোনও বিকল্প হয় না। তাই যাঁদের বাড়িতে পোষ্য রয়েছে, তাঁরা অবশ্যই আশপাশে সবার বাড়িতে গিয়ে সচেতনতা তৈরি করুন। অকপটে জানান আপনার পোষ্য এবং অন্যান্য পশুদের অসুবিধার কথা। যাতে অন্যরা সংবেদনশীল হয়ে চিন্তা ভাবনা করেন ও শব্দবাজি না ফাটান।