মূর্তির বয়স কত জানা নেই কারও। মায়ের সেই ভয়াল রূপ দেখলে গায়ে কাঁটা দেয় ভক্তদের। বলা হয়, খোদাই করে বার করার সময়ে কোদালের ঘায়ে নাকি পেট কেটে গিয়েছিল এই মাতৃমূর্তির। তা থেকেই তাঁর নাম পেটকাটি। জলপাইগুড়ির অন্তর্গত পুরনো জনপদ ময়নাগুড়িতে গেলে দেখা মিলবে পেটকাটি কালী মায়ের।
মাঝের বছর দুই করোনা বিধি থাকলেও ভক্তদের আনাগোনা কমেনি এই মন্দিরে। কষ্টিপাথরের কালো মূর্তিটি দেখলে শিহরণ জাগে আজও। উচ্চতায় প্রায় সাড়ে ৪ ফুট। দেবী এখানে দশভুজা। দাঁড়িয়ে আছেন পদ্মের উপরে।
খননের সময়ে তিনটি হাত ভেঙে গেলেও, অক্ষত আছে তাঁর বাকি হাতগুলি। সেই হাতে ধরা অস্ত্রসম্ভার। বাঁদিকের চার হাতে ধরা রয়েছে হাতি, ঘণ্টা, ছিন্ন নরমুণ্ড, নরমূর্তি।
একটি হাত ভাঙা। মূর্তির পেট কোদালের ঘায়ে কাটা। তাঁর পেটের মধ্যেই খোদাই করা রয়েছে বিছের ছবি। দেবীর গলায় ঝুলছে নরমুণ্ডের মালা, সঙ্গে আছে এমনকি সর্পমালাও।
পেটকাটি মা কালীর আদলে তৈরি। তবে কালীপুজোর দিনে তাঁর আরাধনা করা হয় ধূমাবতী চণ্ডী কালী রূপে। দেবীর এই রূপ অত্যন্ত জাগ্রত বলে বিশ্বাস দূরদূরান্তের ভক্তদের। উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি অসম, নেপাল ও ভূটান থেকেও বহু মানুষ এখানে পুজো দিতে আসেন।
শর্মা পরিবারের দায়িত্বেই এই মন্দিরের নিত্য পুজোর ভার। পুরোহিত কৈলাস শর্মা। ভক্তেরা প্রতিদিনই এসে ধূপকাঠি ও মোমবাতি জ্বালিয়ে দিয়ে যান।
কালীপুজোর সময়ে মন্দিরকে ঘিরে বসে মেলা। প্রথমে কষ্টিপাথরের মূর্তিটিকে পুজো করা। তার পরে পাশের মন্দিরে পূজিতা হন শ্যামা কালী প্রতিমা। তাতে পাঁঠা বলির চল আছে এখনও।