শক্তি আরাধনায় মেতে উঠেছে আপামর বাঙালি। চারিদিকে জাঁকজমক করে কালীপুজোর আয়োজন রীতিমতো চোখে পড়ার মতো। রয়েছে নানা থিমের চমক।
সেরকমই চেতলার ‘চেতলা যুব সংঘ’ নিয়ে এল থিম দশমহাবিদ্যা। যদিও দশটি রূপ বর্তমান দশমহাবিদ্যায় কিন্তু এখানে আদি কালী যোগ হওয়ায় মোট ১১টি রূপ রয়েছে।
কালী: তিনি সর্বসংহারকারিণী। জন্ম এবং শক্তির দেবী। শুম্ভ ও নিশুম্ভের অত্যাচারে সকলে যখন অতিষ্ঠ, দেবী দুর্গার ভ্রুকুটি থেকে আবির্ভাব ঘটে তাঁর।
তারা: বিশ্বের উৎস হিরণ্যগর্ভের শক্তি ও মহাশূন্যের প্রতীক। দেবী পথপ্রদর্শিকা এবং রক্ষিকা যিনি সবাইকে রক্ষা করেন। তন্ত্রশাস্ত্রে তিনি মহানীল সরস্বতী।
ষোড়শী: শ্রীকুল সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ দেবী যিনি পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গতার রূপ। ত্রিপুরাসুন্দরী দুর্গার অন্য রূপ শতাক্ষীর দেহ থেকে আবির্ভূত হন ষোড়শী রূপে। ষোড়শীর আরও একটি নাম রয়েছে স্ত্রী বিদ্যা।
ভুবনেশ্বরী: পুরাণের পাতা থেকে জানা যায়, দেবী যখন উন্মত্ত হয়ে ষোড়শী রূপ ধারণ করেন তখন শিবের বুকে নিজের ভয়ঙ্কর ছায়া থেকে ভীত হয়ে পড়েন দেবী। তার পর যখন উপলব্ধি করতে পারেন সেটি তাঁর নিজের ছায়া, তখন কিছুটা সুস্থির হন দেবী। ঠিক এই অবস্থার রূপ হল ভুবনেশ্বরী। তিনি পার্থিব জগতের শক্তিসমূহের প্রতীক।
ভৈরবী: ৬৪টি যোগিনীর মধ্যে অন্যতম এই ভৈরবকন্যা। ভয়ংকরিণী দেবী বলা হয় তাঁকে। তিনি কামনা ও প্রলোভনের স্বরূপ, যা কোনও মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে।
ছিন্নমস্তা: ধ্বংসের প্রতিরূপ ভয়াল রূপের এই উলঙ্গিনী দেবী। স্বহস্তে নিজের মস্তক ছিন্ন করে নিজেই রক্ত পান করেন। আত্মধ্বংস ও আত্মপুনরুজ্জীবনের মাধ্যমে সৃষ্ট জগতের অবিরাম বিদ্যমানতার শক্তির প্রতীক।
ধূমাবতী: অগ্নির দ্বারা জগত ধ্বংসের পর ভষ্মরাশির মধ্য থেকে যে ধূম নির্গত হয় তার স্বরূপ। কখনও কখনও তাঁকে অলক্ষ্মী বা জ্যেষ্ঠাদেবীও বলা হয়।
বগলামুখী: শত্রুবিনাশকারী এই দেবীর বাহন শবদেহ। রুরুরাসুর দৈত্যের পুত্র দুর্গমাসুরকে যুদ্ধে পরাজিত করে দেবতাদের রক্ষা করেন। সারস-মুন্ড রূপেও কল্পনা করা হয় দেবীকে।
মাতঙ্গী: কর্তৃত্ব শক্তির দেবী। পুরাণ মতে, মাতঙ্গ নামের এক মুনির আশ্রমে দেবতারা যখন সাধনা করছিলেন, তখন আবির্ভাব হয় দেবী মাতঙ্গীর। এবং তিনি শুম্ভাসুর ও নিশুম্ভাশুরকে বধ করেন।
কমলা: বরাভয় প্রদায়িনী শুদ্ধ চৈতন্যের দেবী কমলাকামিনী। ভাগ্যদেবী মহালক্ষ্মীর অন্য রূপ। তান্ত্রিক মহালক্ষ্মী এবং কমলেকামিণী নামেও অভিহিতা।