পুজোর মরসুমে একটু না সাজলে কি চলে? মনের মতো পোশাক, ইচ্ছা মতো রূপটান, নজরকাড়া চুলের কায়দা— এই সবের সেরা সময় তো এটাই। পুজোয় তা হলে একটু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিন সাজ নিয়ে।
পুজোর কয়েক দিন যাঁরা শাড়ি পরতেই স্বচ্ছন্দ, তাঁদের সাজে একটু নাটুকে ছোঁয়া রাখাই যায়। ভারী গয়না এবং শাড়ি পরলে ব্লাউজ হোক হালফ্যাশনের। মেকআপও চাই মানানসই।
চোখের সাজ মন দিয়ে করুন। প্রাইমার-ফাউন্ডেশন-ফেস পাউ়ডার দিয়ে বেস মেকআপ করার পর নজর দিতে হবে চোখে। শাড়ির রঙের সঙ্গে মানানসই চোখের আইশ্যাডো লাগাতে পারেন। আবার কালো-ধূসর মিলিয়ে স্মোকি-আইজের আবেদনও চিরন্তন। শাড়ির সঙ্গে দারুণ মানাবে এই সাজ। একটু বড় করে চোখে আঁকলে সেই মতো ঝুটো চোখের পলকও লাগাতে পারেন। আইব্রো পেনসিল আর পুলি দিয়ে ভ্রু আঁকতে হবে মোটা করে। কারণ মোটা ভ্রু-ই এখন বেশি জনপ্রিয়। সন্ধ্যার সাজ হলে একটু গাঢ় লিপস্টিক লাগাতে পারেন। লাল, ম্যাজেন্টা, ফুশিয়া বা গোলাপির যে কোনও শেড বেছে নিন পোশাক অনুযায়ী।
ভাল করে সাজলে চুলের সাজে গাফিলতি দেখালে হবে না। প্রথমে চুল ঠিক করে আঁচড়ে একটি কোনও সিরাম লাগিয়ে নিন। যাতে চুল উসকো-খুসকো না হয়ে থাকে এবং সামান্য চকচক করে। তারপরে কায়দা করে চুল বাঁধার পালা। বেণী করে সেটা খোঁপার মতো করে নিতে পারেন। এতে দেখতেও সুন্দর লাগে, এবং খাটনিও কম। চুলের সামনের দু’ভাগ আলাদা করে দু’টো আলাদা বেণী করেও পিছনের সঙ্গে আটকে দিতে পারেন। এতে সাজ আরও নাটুকে হবে।
আপনি কি বলিউডের ভক্ত। শাড়ি নয়, পশ্চিমি পোশাকই আপনার পছন্দ উৎসবের সময়ে? তা হলে মেকআপও হতে হবে মানানসই। সাজে আনতে হবে তারকাসুলভ জাঁকজমক।পোশাকের কাট যদি চমকপ্রদ হয়, তা হলে সঙ্গে গয়না ছোটখাটো ছিমছাম হওয়াই ভাল।
বলিউডি সাজে মেকআপ হবে নজরকাড়া। তাই বেস মেকআপ করার পর আপনি ইচ্ছামতো হাইলাইটার, ব্লাশ এবং ব্রঞ্জার ব্যবহার করতে পারেন। তবে অতিরিক্ত চড়া যেন না হয়ে যায়। ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। নাক বরাবর, ঠোঁটের উপরে এবং চোখের নীচে দিকে থেকে গালের হাড় হাইলাইট করার জন্য কোনও ভাল হাইলাইটার ব্যবহার করতে পারেন।
চোখে একটু সাহসী সাজ বেছে নিতে পারেন। গাঢ় নীল বা সবুজ আইলাইনার একটু মোটা করে লাগিয়ে নিন। চোখের বেস আইশ্যাডো সে ক্ষেত্রে কোনও হাল্কা মেঠো রং ব্যবহার করুন।
এই রকম সাজের সঙ্গে অনেক রকমচুলের কায়দাহতে পারে। একটু এলোমেলো, কিংবা টেনে উঁচু করে ঝুঁটি বাঁধা। চুল ফুলিয়ে নেওয়ার জন্য হেয়ারস্প্রে ব্যবহার করতে হবে প্রয়োজন মতো।
যাঁদের কোনও রকম জাঁকজমক পছন্দ নয়, তাঁদের সাজের কথাই মাথায় রেখেছে ‘আনন্দবাজার অনলাইন’। হাল্কা রঙের ছিমছাম আরামদায়ক পোশাকেও যে গ্ল্যামারাস সাজা যায়, তা মাথায় রেখেই বেছে নেওয়া হল পরের সাজ।
মেকআপ এমন হবে, যাতে বোঝা না যায়। সেই সাজেরও কিন্তু খাটনি কম নয়। ফাউন্ডেশন লাগানোর আগে কোনও ফেসপ্যাক লাগিয়ে নিন। কিছু ক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন ভাল করে। ত্বক আর্দ্র থাকলে তবেই এই সাজ ফুটে ওটে। ব্লাশ, আইশ্যাডো, কাজল— সব রংই হতে হবে মেঠো বাদামি। যতটা ত্বকের স্বাভাবিক রঙের কাছাকাছি হয়, তত ভাল। ভ্রু মোটা করে এঁকে নিন এবং চোখের পলকে ভাল করে মাস্কারা লাগিয়ে নিন। ব্লাশ লাগান পিচ বা বাদামি রঙের।
এই সাজের সঙ্গে চুল ছেড়ে রাখতে পারেন। সে ক্ষেত্রে চুলে হালকা ঢেউ তৈরি করে নিন যন্ত্রের সাহায্যে। সঙ্গে যে কোনও একটি বড় গয়না পরতে পারেন। সেটা বড় কানের দুল হোক বা একটা গলার লম্বা চেন হোক। পছন্দ মতো বেছে নিন।
মডেল: জুহি ঘোষ। ছবি: দেবর্ষি সরকার। রূপটান: মৈনাক দাস। সাজ: সূর্য শেখর বিশ্বাস। গয়না: ঝলক। পরিকল্পনা: পৃথা বিশ্বাস। রূপায়ন: সুচন্দ্রা ঘটক। স্থান: হ্যামার, পার্ক স্ট্রিট