হঠাৎই ভোলবদল। এ বার পুজোয় সাবেক থেকে সাহসী রূপাঞ্জনা মিত্র। কাজল কালো চোখ নয়, তাঁর পছন্দ স্মোকি আইজ। আটপৌরে শাড়ি নয়, এ বার পরেছেন অফ শোল্ডার। খোলামেলা ফটোসেশনেও আর সঙ্কোচ নেই তাঁর। ব্যাপারটা কী?
রূপাঞ্জনা জানালেন, লকডাউনে নিজেকে হঠাৎই নতুন করে আবিষ্কার করেছেন তিনি। ছেলে-সংসার-রাজনীতি সামলে নিজেকে ভালবাসার সময় এসেছে তাঁর। খুঁজে পেয়েছেন হারিয়ে যাওয়া আমিকে। হাড্ডাহাড্ডির ইন্ডাস্ট্রিতে কুড়ি বছর পার করা অভিনেত্রী তাই এখন অনেক বেশি সাবলীল।
রূপাঞ্জনার কথায়, মোটেই সহজ ছিল না। তিনি সিঙ্গল মাদার। একা হাতে সংসার আর ছেলের দায়িত্ব, আশপাশে উড়ে আসা উটকো মন্তব্য। তবু এরই মধ্যে হঠাৎ করেই নিজেকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করে ফেলেছেন তিনি।
বলছিলেন, এত দিন অন্তরালে থাকাই পছন্দ ছিল তাঁর। সাবেক শাড়ি, গা ঠাসা গয়না। এখন তাঁর রোজনামচায় ঢুকে পড়েছে ওয়ার্ক আউট এবং কম ক্যালোরির ডায়েট। তাঁর টোনড বডি আর বডি হাগিং পোশাক এ বার পুজোয় হিট।
বেশ কয়েক বছর সোশ্যাল মিডিয়াতেও সে ভাবে দেখা যায়নি তাঁকে। ‘অজুহাত’ হিসেবে বললেন কাজের চাপ। লকডাউন সেই চাপ হাল্কা করেছে খানিক। আর তখনই রূপাঞ্জনার মন গুনগুনিয়ে উঠেছে, ‘নিজেকে ভালবাস তুমি এ বার’।
ছেলে রিয়ানের অনলাইন ক্লাস, তার মন ভাল রাখার দায়িত্ব নিতে নিতে কখন যে রিয়ানের বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে গিয়েছেন খেয়ালই করেননি তিনি। জীবনের খুঁটিনাটি থেকে সমস্যা, মন খারাপ হলেই সব শেয়ার ছেলেকে।
আর পুজোর প্ল্যানিং? সেই ভাবে পুজোর প্ল্যানিং নেই রূপাঞ্জনার। ঝাড়গ্রামে অভিনেত্রীর মামাবাড়িতে দুর্গাপুজো হয়। এ বার ৭৮-এ পা দেবে। তবে এ বার আর সেখানে যাওয়া হবে না তাঁর।
তাঁর গড়িয়াহাটের বাড়িতেও দুর্গাপুজো হয়। এ বছর সেখানেই থাকবেন বলে ঠিক করেছেন। তবে ছেলেকে ঝাড়গ্রামের পুজোতে যাওয়ার জন্য বেশ চাপ দিচ্ছেন মা। বাড়ির পুজো বলে কথা!
দীর্ঘ লকডাউন শেষে পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হচ্ছে। এ বার কাজে ফিরতে হবে। আগের বছরই বিজেপিতে যোগদান করেছেন অভিনেত্রী। অভিনয়ের পাশাপাশি ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিও চলছে তাঁর।
কোমর বেঁধে নামছেন তিনি। ছকে ফেলেছেন প্ল্যানও। এই রূপাঞ্জনা আগের থেকে আলাদা। এই রূপাঞ্জনা নিজেকে ভালবাসতে জানে। ভাল থাকতে জানে।