বছরটা অন্য রকম। অতিমারির গ্রাসে গোটা পৃথিবী এবং সর্বত্র শুধু বিষণ্ণতার ছবি। তার মধ্যেই হাজির বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব। তাঁর চোখে ঠিক কেমন এই ‘অন্য রকম পুজো’? মন উজাড় করে দিলেন অভিনেত্রী সাংসদ নুসরত জহান।
“আমার চোখে এ বারের পুজো আসল পুজো। ধৈর্যের পুজো, অন্তর দিয়ে মাকে ডাকার পুজো। কারণ, এই পুজো, এই পরীক্ষায় উতরোতে পারলে বধ হবে করোনাসুর। দেবী দুর্গার কাছে শুধুই সুস্থতা কামনা করা যায় না?” বলছেন নুসরত। তাঁর কাছে শাড়ি মানেই রঙ্গোলী। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ধরনের শাড়ির সম্ভার রয়েছে এখানেই।
ছোটবেলায় পুজোর ঢের আগে মামার বাড়িতে সমস্ত তুতো ভাই-বোনদের মিটিং বসত। কোন দিন, কে, কোন জামা পরবে, খাওয়াদাওয়া, ঠাকুর দেখা- কত আলোচনা! নুসরতের কথায়, “বড় হতেই সেই অনুভূতিতে যেন সময়ের পাতলা ঢাকনা পড়ে গেল! সেই মনটাই নিখোঁজ।”
বড় হয়ে, গ্ল্যামার আর পরিচিতির আলোয় পাল্টেছে অনেক কিছুই। পায়ে হেঁটে প্যান্ডেল ঘোরা হয় না আর। “হাঁটতে হাঁটতে নতুন জুতোয় পায়ে ফোস্কা। কী জ্বালা, কী ব্যথা! সেটাও এখন মিস করছি। তবে হ্যাঁ, রাজনীতিতে এসে চারপাশটা বদলেছে ঠিকই। আমি একই আছি। পুজো নিয়ে উত্তেজনাও মোটেই কমেনি,” মুচকি হাসেন সুন্দরী সাংসদ।
পুজোর বিচারক, উদ্বোধন, অনুষ্ঠান থেকে এ বছর শত হস্ত দূরে থাকার প্ল্যান। বললেন, “কোনও প্যান্ডেলে এবছর আমায় কেউ দেখতে পাবেন না। না ঢাক বাজাতে, না সিঁদুর খেলতে। আমাকে চোখের দেখা দেখতে গিয়ে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বেন, একেবারেই কাম্য নয়। উদ্বোধনে গিয়ে সবাইকে দূরে সরিয়ে রাখব, সেটাও পারব না। তার চেয়ে আমিই বরং দূরে থাকি এ বছর।”
তবে বসিরহাটের মানুষদের সঙ্গে দেখা করতে অবশ্যই যাবেন। আশীর্বাদ নেবেন, হয়তো হাতে তুলে দেবেন পুজো উপহারও এবং সবটাই করোনা সতর্কতা মেনে। জানালেন বসিরহাটের সাংসদ নুসরত নিজেই। সেই সঙ্গেই করলেন অনুরোধ- “ডিজাইনার পোশাকের সঙ্গে একটি করে ডিজাইনার মাস্কও থাক। আপনি স্টাইলিশ, সুরক্ষিতও। পকেটে মানিব্যাগের পাশাপাশি থাকুক স্যানিটাইজারের ছোট্ট বোতল।”
তাঁর মতে, ভিড় না বাড়িয়ে সবাই সংযত থাকলে হয়তো আগামী বছর করোনা মুক্ত পুজো হবে আবার শহর জুড়ে। তবে এ বছর মা দুর্গার কাছে আরও একটা জিনিস চান নুসরত- সমস্ত নেগেটিভিটি সরে যাক সবার মন থেকে। ইতিবাচক মন নিয়ে নতুন করে জেগে উঠুক মানবতা বোধ।
নিজের জন্য কী থাকছে? লন্ডনে শুটিং-এর চাপে এখনও নিজের জন্য কিচ্ছু শপিং হয়নি। আশায় আছেন, বাড়ির লোক নিশ্চয়ই কিছু দেবেন ঠিক। “নিখিল ইতিমধ্যেই অবশ্য আমার পুজোর যাবতীয় নতুন শাড়ি, ড্রেস বেছে গুছিয়ে রেখেছে। সেরাগুলো অষ্টমীতে পরব, বরাবরের মতো। সকালে এথনিক কিছু, রাতে গর্জাস...” বললেন গ্ল্যাম-কন্যে।
পুজোয় প্যান্ডেলে দেখা যাবে না বটে, তবে প্ল্যান আছেই। নিজেই ফাঁস করলেন, “আনন্দ করব, তবে নিজের বাড়িতে। মায়ের মুখ একবার অবশ্যই দেখতে যাব। ভিড় এড়িয়ে হয়ত গভীর রাতে। খাওয়াদাওয়াতে নো বিধি-নিষেধ।”
আর পুজোর প্রেম? “পুজোর প্রেম তো পঞ্চমীতে প্রথম দেখা দশমীতে শেষ! ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের দেখি পুজোয় বেরিয়ে মনের মতো কাউকে দেখলেই আড় চোখে বারে বারে দেখে।” তথ্য সহায়তাঃ উপালি মুখোপাধ্যায়; পোশাক: রঙ্গোলী; স্টাইলিং: স্যান্ডি; মেকআপ: বাবুসোনা সাহা; হেয়ার: শর্মিষ্ঠা মাঝি; ফটোগ্রাফার: সোমনাথ রায়; ব্যবস্থাপনা: অভিষেক।