Anupam Roy puja plan

‘বিজয়া দশমীর দিন ঠাকুর চলে যাবে ভেবে কান্না পেত খুব’, বললেন অনুপম রায়

সেই দুঃখ ভুলতে কী করতেন তিনি? জানালেন তিনি।

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৪৭
Share:

গায়ক অনপম রায়।

এই বার পুজোয় কলকাতায় থাকছি না। ১২ অক্টোবর আমি ও আমার গানের দল চলে যাচ্ছি আমেরিকা, ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস। বিভিন্ন পুজোয় অনুষ্ঠান করতে।

Advertisement

২০১১ সাল থেকে প্রায় প্রত্যেক বছরই পুজোয় বিদেশ যাই অনুষ্ঠান করতে। করোনার কারণে গত তিন বছর অবশ্য যাইনি।

প্রবাসে গেলেও পুজোর সময় মনটা পড়ে থাকে কলকাতায়। বেঙ্গালুরুতে চাকরি করার সময় যখন পেশাদার গায়ক, গীতিকার বা সুরকার ছিলাম না, তখন পুজো এলেই কলকাতা-কলকাতা মন হয়ে যেত। কোনও দিন তখন মনে হয়নি বাইরে গিয়ে পাহাড় কি সমুদ্র দেখি।

Advertisement

প্রবাসী বাঙালিদের জন্য পুজোতে গান গাইতে গেলে সকাল বেলা আনুষ্ঠানিক পুজোর সময়টা থাকা হয় না। রাতে টানা অনুষ্ঠান করে এত ক্লান্ত থাকি, দিনের সময়টা হোটেলেই বিশ্রাম নিই। তবে পুজো উদ্যোক্তারা আমাদের ভোগ-প্রসাদ সবই দিয়ে যান।

কলেজে যখন পড়তে আরম্ভ করি, পুজোয় বেশ ভালই হাত খরচ পেতাম। তাতে বেশ বিলাসিতা হয়ে যেত ওই বয়সের মতো করে। রাসবিহারী মোড়ে বন্ধুরা একজোট হয়ে যেমন ঠাকুর দেখতে গিয়ে হেঁটেছি, যেমন তেমনি অটো বা ট্যাক্সিও চড়েছি। বেশিরভাগ সময় রেস্তোরাঁয় বসার জায়গা পেতাম না। রাস্তায় দাঁড়িয়ে চাইনিজ খেয়েছি বা রোল খেতাম।

পুজোয় আনন্দ করলেও একটা ব্যাপারে আমি বঞ্চিত ছিলাম। প্রত্যেক বছর ভাবতাম এ বার পুজোয় নিশ্চয়ই এমন কারও সঙ্গে দেখা হবে, এমন কারো সঙ্গে আলাপ হবে যার ফলে পুজোটা রঙিন থেকে রঙিনতর হয়ে উঠবে আরও। কোনও দিন অমন হয়নি। বিশ্বাস করুন কলেজ জীবনেও প্রেমভাগ্য একদম সুপ্রসন্ন ছিল না আমার। পুজোয় সুন্দরী মেয়ে দেখেই কেটে যেত। শুধু ওইটুকুই।

এ প্রসঙ্গে একটা কথা না বললেই নয়, কলেজে আমার ডিপার্টমেন্টে কোনও মেয়ে ছিল না। তাই চট করে প্রেম হবে, সে গুড়ে বালি। গান গাইতাম, গিটার বাজাতাম। তবু কোনও মেয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারিনি। কোনও বান্ধবী হয়নি।

গানের জগতে আসার পর প্রেম হয়েছে। কিন্তু তখন কিঞ্চিত নামডাক হওয়ায় প্রেমিকাকে সঙ্গে নিয়ে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে ঠাকুর দেখা হয়নি। প্রেমিকাকে নিয়ে শুধু সেইখানেই গেছি যেখানে আমার গানের অনুষ্ঠান আছে। ২০১৫ সালে পুজোটা কলকাতায় দারুণ কেটেছিল। অনুষ্ঠান করেছিলাম কলকাতার নানা বিখ্যাত পুজোয়। তার মধ্যে বালিগঞ্জ কালচারাল, সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারও ছিল।

এ বছর পুজোয় সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবি ' দশমাবতার' মুক্তি পাচ্ছে। সেই ছবিতে আমার এক ঝাঁক গান আছে। জানি না এখনও, কোন গান জনপ্রিয় হবে। বিদেশে আমার জনপ্রিয় গান গুলি গাওয়ার অনুরোধ আসে। যেমন 'আমাকে আমার মতো থাকতে দাও', 'কলকাতা' , 'বন্ধু চল', 'এখন অনেক রাত'.... এই গুলি খুব গাইতে হয়। এ বছর আরেকটা হিট গান যুক্ত হবে। অর্ধাঙ্গিনী ছবির 'আলাদা আলাদা' গানটি। 'দশমাবতার'-এর কোনও গান হিট করলে নিশ্চয়ই অনুরোধ আসবে গাওয়ার।

পুজো নিয়ে একটা দারুণ নস্টালজিয়া আছে। বিজয়া দশমীর দিন ঠাকুর চলে যাবে ভেবে কান্না পেত খুব। সেই দুঃখ ভুলতাম অন্য ভাবে। বড়দের দেখলেই সটান প্রণাম করতাম। আশীর্বাদ তো পেতামই। সঙ্গে সঙ্গে জুটে যেত নাড়ু, সন্দেশ, নিমকি! তাতেই দুঃখ ভুলে যেতাম খানিকটা।

অনুলিখন: সংযুক্ত বসু

এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement