অনীক ধরের ভৌতিক অভিজ্ঞতা
সালটা বোধহয় ২০১৮। আমি গোটা দেশ ঘুরে শো করে বেড়াচ্ছি তখন। এর মাঝেই এক বার জয়পুরে গিয়েছিলাম। ঘটনাটি ঘটে তখনই। অনেকেই হয় তো জানেন, জয়পুরের বেশির ভাগ হোটেল এক সময়ের কোনও এক বড় রাজপ্রাসাদ কিংবা কোনও প্রমোদভবনের পুনর্নির্মিত রূপ। আমরা তেমনই একটি হোটেলে গিয়ে উঠেছিলাম। দেওয়ালে বিভিন্ন পশুর মাথা, অদ্ভুত সব ছবি। মিথ্যে বলব না, ভিতরে ঢুকে কিছুটা ভয়ই পেয়েছিলাম বটে। রিসেপশনের জায়গাটাও অনেকটা পুরনো রাজপ্রাসাদের ধাঁচেই।
যথারীতি শোয়ের পর রাতের খাবার সেরে যে যার নিজের ঘরে শুতে গিয়েছি। আমার ম্যানেজারও অন্য ঘরে। গভীর রাত তখন। প্রায় ৩টে। হঠাৎই স্নানঘর থেকে ফ্লাশ করার আওয়াজ পেলাম। যেন কেউ শৌচাগার ব্যবহার করছে। কিন্তু ঘরে তো আমি একা! গিয়ে দেখলাম কেউই নেই! তা হলে আওয়াজটা কোথা থেকে এল? কিছু না ভেবেই রিসেপশনে ফোন করি। কিন্তু দুর্ভাগ্য, কেউ তোলেনি সে দিন আমার ফোন। ওই রাতে আমার অবস্থা কী হয়েছিল তাঁর ব্যাখ্যা হয় তো লিখেও করতে পারব না। তবে ওই দিনের পর থেকে আমি আর একা থাকিনি কোনও দিন।
একাধিক বারই এমন ভৌতিক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি। আরও একটা ঘটনা মনে আছে। সেটা আমার বিয়ের পর পরই। শোয়ের জন্যই আমি আর আমার স্ত্রী আগ্রার একটি সুপরিচিত হোটেলে থাকতে গিয়েছিলাম। আমাদের পাশে ঘরে আমার ভাই ছিল। শো শেষের পর খাওয়াদাওয়া সেরে আমরা যথারীতি শুয়ে পড়ি। পরের দিন ব্রেকফাস্টের টেবিলে আবার আমাদের দেখা হয়। আমি হঠাৎ করেই নীরবতা ভেঙে বলে উঠি, “জানিস, আমার খালি মনে হচ্ছিল আমরা দু’জন ছাড়াও কেউ যেন আমাদের ঘরে ছিল।”
আমি প্রত্যাশাও করিনি যে আমার সঙ্গে সহমত পোষণ করবে আমার ভাইও। সেই সময় আমাদের যিনি খাবার পরিবেশন করছিলেন, তিনি বাঙালি। তাঁর কাছ থেকে জানতে পারি, যে হোটেলে আমরা ছিলাম সেটা কোনও এক কবরস্থানের উপর তৈরি।
ঈশ্বরের কাছে আমি খুবই কৃতজ্ঞ যে কোনও দিন আমার সঙ্গে ভূতেদের সরাসরি সাক্ষাৎ হয়নি। বা আমাকে ওই ভয়ানক মুখের সম্মুখীন হতে হয়নি। কিন্তু এই দু’টো ঘটনা আমাকে রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়েছিল।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।