Biswanath Basu Horror Story

চোখ বুজলেই সারা শরীর চুলকাচ্ছিল, কী ঘটেছিল সেই ঘরে! ভূতচতুর্দশীতে লিখলেন বিশ্বনাথ বসু

ভূতেদের সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাৎ আমার হয়নি কোনও দিন। আমার কল্পনায় ভূতের চেহারা বলতে, দীর্ঘ শরীর, পরনে সাদা শাড়ি… ব্যস এইটুকুই!

Advertisement

বিশ্বনাথ বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৪ ২০:৪৫
Share:

বিশ্বনাথ বসুর ভৌতিক অভিজ্ঞতা

আমার বাড়ি আড়বেলিয়া গ্রামে। বড় হয়ে ওঠা ওইখানেই। সেখানে ভূতেরা সন্ধে পর্যন্ত অপেক্ষা করে না। দুপুরেও চলে আসে দেখা দিতে। বলা যেতে পারে, ভূতেদের সঙ্গেই বেড়ে ওঠা আমার! কেবল সন্ধের সময়ই নয়, এক অদ্ভুত নিস্তব্ধতা আমাকে গ্রাস করত দুপুরেও। যেহেতু গ্রামে তখন প্রতিটি ঘরে টিভি আসেনি, তাই সামনে থেকে হোক বা পর্দার ওই পাশেই হোক, ভূতেদের সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাৎ আমার হয়নি কোনও দিন। আমার কল্পনায় ভূতের চেহারা বলতে, দীর্ঘ শরীর, পরনে সাদা শাড়ি… ব্যস এইটুকুই!

Advertisement

তবে আমাদের সামনের বাড়িতে এক ব্রাহ্মণ-ব্রাহ্মণী থাকতেন। ওই বাড়িতে যিনি পুজো করতেন, সেই বাবু ঠাকুরমশাই ভূত দেখেছিলেন একবার। তিনি দেখেছিলেন, মন্দিরে মন্দিরে নাকি কেউ একটা সাদা কাপড় ঘুরে বেড়ান।

আমি কোনওদিন ভূতে বিশ্বাস করিনি এবং ভূতও কোনও দিন আমায় দেখা দেয়নি। কিন্তু একবার এক শুটিংয়ের কথা মনে আছে। একটি বিলাসবহুল রিসর্টে গিয়েছিলাম। ভূত আছে কী নেই, সেই তর্কে আমি যাব না। তবে আমার কাছে যদি দ্বিতীয়বার ওই রিসর্টে থাকার প্রস্তাব আসে, আমি বিনা বাক্যব্যয়ে ‘না’ করে দেব।

Advertisement

চলচ্চিত্র দুনিয়ায় জায়গাটি খুবই পরিচিত। পশ্চিমবঙ্গেরই এক ফিল্মসিটি। আমরা সেখানে যে দিন পৌঁছই, সে দিন এত বৃষ্টির দাপট যে, মনে হচ্ছিল যেন বৃষ্টির ফোঁটা আমার বোলেরো গাড়ির ছাদ ভেদ করে ঢুকে যাবে ভিতরে।

যাই হোক, সেই সব ঝক্কি পেরিয়ে যখন হোটেলে পৌঁছেছি, রাত তখন গভীর। এতটা রাস্তা যাত্রা করে আসার পর স্বাভাবিক ভাবেই ঘুম আসাটা বেশ সহজ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেন জানি না, দু’চোখের পাতা এক করতে পারছিলাম না রাতে।

শরীরে ক্লান্তি থাকলেও ঘুম অধরা! আমার সঙ্গে যিনি ছিলেন, তিনিও অন্য ঘরে। একাকীত্ব আরও গিলে খেতে এল আমাকে। এতটা একা কোনও দিন লাগেনি আমার। আর সবথেকে অদ্ভুত বিষয় হল, বিছানায় শুয়ে পড়ার পর বুঝলাম সারা গা যেন চুলকোচ্ছে। চোখ বন্ধ করলেই এক অনুভূতি। সেখানে আমি যে ভূতের দেখা পেয়েছি, তা নয়। তবে এইটুকু বলাই যায়, ওই হোটেলে জীবনযাত্রা একেবারেই স্বাভাবিক ছিল না।

আমাদের আড়বেলিয়া গ্রামে ডাকাতের গল্প আবার আলাদাই! বিখ্যাত ইলাহি বক্স ছিলেন, সন্ত মানুষ ছিলেন তিনি। সর্বক্ষণ ঠোঁটে আল্লাহর নাম। কী পবিত্র সেই মুখ! আজও চোখে ভাসে আমার। তখন তো ধর্মে ধর্মে এত বিভেদ ছিল না।

একবার ডাকাত এসেছিল গ্রামে। আমি এমন ভয় পেয়েছিলাম যে এর পর থেকে মাঝে মাঝেই আতঙ্কে ভুগতাম (শহুরে ভাষায় এখন যাকে বলে প্যানিক অ্যাটাক)। আমায় সুস্থ করে তুলতে ইলাহি বক্সের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তখন আমি খুবই ছোট। ৬ বছর বয়স হবে হয় তো। তিনি আমার গা ঝেড়ে দিয়েছিলেন। সত্যিই কিন্তু সুস্থ হয়ে গিয়েছিলাম আমি।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement