সারা বছর অপেক্ষার পর মাত্র চারটে দিনে পুজোর আনন্দ পোষায়?
এ বছর আমার পুজো আগাম জমে গিয়েছে। পুজোয় মিউজিক ভিডিয়োতে অভিনয় করেছি। পুজোর কাজ মানেই মনে ঢ্যাং কুড়া কুড় ঢাকের বোল। তাছাড়া, বাঙালিরা এমনিতেই মাস দুয়েক ধরে পুজো উদযাপন করে। কারণ, সারা বছর অপেক্ষার পর মাত্র চারটে দিনে পুজোর আনন্দ পোষায়?
যদিও এই আনন্দে গত বছর থেকে জল ঢেলেছে অতিমারি। মনে আনন্দ আগের মতোই। সাবধানতা অবলম্বন করতে গিয়ে আসল আনন্দই মাটি। আমার কথাই ধরুন। আমি কিন্তু পুজোর কেনাকাটা কিচ্ছু করিনি গত দু’বছর ধরে। ইচ্ছেটাই যেন মুছে গিয়েছে। আত্মীয়রা অবশ্যই জামা-কাপড় উপহার দিয়েছেন। সেগুলোই পরব। আর খুব ইচ্ছে আছে, দুই আত্মীয়ের বাড়িয়ে আমরা সবাই এক সঙ্গে মজা করব। বাড়ির ভিতরে চড়ুভাতি বলতে পারেন। ভুলেও ভিড়ে যাব না। একদিন যদিও বা ঠাকুর দেখতে বেরোই সেটাও হবে রাতের বেলায়। গাড়ির মধ্যে থেকে।
অতিমারি না থাকলে এই আমার পুজোই হয়তো শুরু হত ভোর চারটে থেকে। ভোর ৪টে থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত টানা প্রতিমা দর্শন করতাম।
অতিমারি না থাকলে এই আমার পুজোই হয়তো শুরু হত ভোর চারটে থেকে। আমার মা ভোরবেলায় বেরিয়ে ঠাকুর দেখতে ভীষণ ভালবাসেন। ভোর ৪টে থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত টানা প্রতিমা দর্শন সেরে বাড়ি ঢুকে যাবেন। ভিড়ভাট্টায় আমার মা একেবারেই নেই। ফেরার সময় বড় কোনও দোকান থেকে জলখাবার খাওয়া থাকত। আর থাকত জনা কুড়ির বিশাল গ্যাং মিলে এদিক ওদিক যাওয়া। শহর চষে ফেলা। পছন্দের সমস্ত খাবার খাওয়া। অষ্টমীর অঞ্জলি থাকত। আর থাকত ধোঁয়া ওঠা মাটন বিরিয়ানি। বড় বড় পাঁঠার মাংসের দুটো টুকরো, একটা ডিম, সুন্দর বড় আলু আর বিরিয়ানি। সঙ্গে স্যালাড থাকলে ভাল। নয়তো কালো ঠাণ্ডা পানীয়। পুজো জমাতে আর কী চাই? এ ভাবে তিনটে দিন কলকাতায় থেকে নবমীর রাতে বাইরে বেড়াতে চলে যেতাম। কলকাতায় থাকলে বিজয়া দশমীতে নানা জায়গায় সিঁদুরখেলার আমন্ত্রণ থাকত।
পুজো নিয়ে এত হুল্লোড় সবই আমার বড় বয়সে।
পুজো নিয়ে এত হুল্লোড় সবই আমার বড় বয়সে। আপনাদের কোনও ধারণা নেই, ছোটবেলায় আমি কী লাজুক ছিলাম। তুতো ভাই-বোন তো নেই। আমি আর আমার দিদি। নবম শ্রেণি পর্যন্ত মায়ের আঁচল ধরে ঘুরেছি। তার ফল কী হল? অষ্টমীর অঞ্জলির ফাঁকে আমার প্রেমটাই আর হল না!