Durga Puja 2020

পুজোর একটা শাড়ি পরে ফটো শুট করে ফেলেছি

এ বার যেন প্রশ্ন করবেন না, কী শাড়ি কিনলাম! অনেক কিছু মিলিয়ে কিনেছি। তার মধ্যে একটি শাড়ি পরে ফটোশুটও করে ফেলেছি। পুজোয় যদি পরা না হয়!

Advertisement

মনামী ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৪:৩৫
Share:

এ বার পুজোয় একটি চ্যানেলের বিশেষ ‘নন ফিকশন’ অনুষ্ঠানে আমি কাজ করেছি। ছবি সৌজন্য: সোশ্যাল মিডিয়া।

গত বছরেও এই সময় কত হইচই, পুজো নিয়ে কত উন্মাদনা! পুজোর প্রথম দিকে উদ্বোধনে ব্যস্ত ছিলাম। সপ্তমী অবধি কলকাতায়। তারপরেই উড়ে গিয়েছিলাম ভিয়েতনাম। লক্ষ্মী পুজো পর্যন্ত চুটিয়ে বেড়ানো। ভাবলেই আনন্দে গা শিউরে ওঠে। আর এ বছর! পুজোর গন্ধ কই? সবটাই স্তিমিত। করোনার ভয়ে ভীত।

Advertisement

এ বছর তাই কোথাও বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান এখনও করে উঠতে পারিনি। সব কিছুই কেমন যেন এলোমেলো। একদম শেষ মুহূর্তে হয়ত কোথাও যাওয়া ঠিক হলেও হতে পারে। তবে পুজোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে আমার। একটি চ্যানেলে বিশেষ ‘নন ফিকশন’ অনুষ্ঠান দেখান হবে পুজোয়। সেখানে আমি কাজ করছি। শুট হয়ত অক্টোবরের মাঝামাঝি শেষ হয়ে যাবে।

আর কী অদ্ভুত মজা দেখুন, এই বছরেই এক মুঠো ছুটি। অথচ মনের সুখে ঘুরে বেড়াব সেই উপায় নেই। তবে শাড়ি-টাড়ি হয়ে গিয়েছে অনেক গুলো। এটাই আনন্দ দিচ্ছে। একটু একটু শপিং-ও শুরু করেছি। নিজের জন্য শাড়ি কিনেছি একটা, দুটো। উপহারও পাচ্ছি আত্মীয়দের থেকে। দেওয়ারও আছেন অনেকে। এ বছর ঘুরে শপিং-এর কোনও ব্যাপার নেই। ঘরে বসে অনলাইনে কেনাকাটা সারো। সেগুলো কষ্ট করে পৌঁছেও দিতে হবে না। উপহার পৌঁছে যাবে ক্যুরিয়ারে। হয়ত ড্রেসও কিনব। এবার যেন প্রশ্ন করবেন না, কী শাড়ি কিনলাম! অনেক কিছু মিলিয়ে কিনেছি। তার মধ্যে একটি শাড়ি পরে ফটোশুটও করে ফেলেছি। পুজোয় যদি পরা না হয়! যদি কলকাতা থাকিও তবু ঘুরে ঠাকুর দেখা হবে না। বহু বছর ধরেই এই পর্ব বন্ধ। প্রতি বছর পুজো উদ্বোধন বা সেরা পুজো, প্রতিমা বিচারের সময়েই ঠাকুর দেখা হয়ে যায়। এ বছর সেটাও হবে কি না কে জানে!

Advertisement

আরও পড়ুন: অষ্টমীর সকালে আড় চোখাচোখি এবং ডেটিং: শন

গত বছরে ভিয়েতনাম ছিলাম অঞ্জলি দিতে পারিনি, এ বছরেও দেওয়া হবে না।

তবে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা হতেই পারে। কোনও একজনের বাড়িতে সবাই মিলে গিয়ে দেদার আড্ডা। বাকি অষ্টমীর অঞ্জলি। ওটারও নিশ্চয়তা নেই। যেমন, গত বছরে ভিয়েতনাম থাকার দরুণ অঞ্জলি দিতে পারিনি। এ বছরেও প্যান্ডেলে গিয়ে হয়ত অঞ্জলি দেওয়া হবে না। তবে ভরপেট খাওয়া হবে। লকডাউনে মা কী ভাল বিরিয়ানি রাঁধতে শিখেছেন! ওটা হবেই পুজোয়। সঙ্গে মাংসের কোনও ডিশ। নিরামিষের দিন লুচি, আলুর দম, পোলাও। এছাড়া, বাঙালি রেস্তরাঁয় গিয়ে অবশ্যই খাব। বিশুদ্ধ বাঙালি রান্না। আনিয়েও খেতে পারি।

এই সূত্রে মনে পড়ছে, একটা সময় বিজয়া দশমীতে আমাদের বাড়িতে ভারী মজা হত। বাড়ি গমগম করত আত্মীয়-স্বজনে। সকাল থেকে বাড়িতে ছাদে বানানো হত নাড়ু, নিমকি, ঘুঘনি। আমাদের বাড়ির নিয়ম ছিল, কলা পাতায় তিন, পাঁচ বা দশবার ‘শ্রী শ্রী দুর্গা সহায়’ লিখে জমা দিতে হত। ওই কলাপাতা যেত প্রতিমার সঙ্গে, বিসর্জনে। লেখা শেষ হলে বড়দের প্রণাম। আর নাড়ু, নিমকি, ঘুঘনি দিয়ে বিজয়া। সেই লোভে আমরা ছোটরা তিনবার ‘শ্রী দুর্গা সহায়’ লিখেই দৌড় মারতাম প্রণাম করতে। নাড়ু-ঘুঘনির লোভে। পাশাপাশি আত্মীয়, পরিজনের বাড়িতেও যেতাম বিজয়া সারতে। বাড়ির তৈরি নাড়ু, নিমকি, ঘুঘনি নিয়ে।

আরও পড়ুন: ধুতি সামলাতে পারিনা, তবে এ বার পুজোয় ট্রাই করতে পারি

আস্তে আস্তে বাড়ি ফাঁকা হয়েছে। সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছেন। খুব মিস করি সে সমস্ত দিনগুলো। সেই ফাঁক ভরাতেই পুজোর শুরুতে সব কাজ সেরে বাকি দিনগুলোয় আমি চলে যাই ‘অন্য কোথা, অন্য কোনও খানে’। এ বছরেও ভিন দেশ দেখার সুযোগ হবে? দেবী মা-ই জানেন...! না হলে আড্ডা তো আছেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement