ছবি সংগৃহিত
এখন এক অস্থির সময়। এক পলকে দেখলে মনে হবে কই কোথাও তো কিছু হয় নি। তাহলে উত্সবে হাঁটাই যাক। কিন্তু ঠিক তখনি মনের মধ্যে জমে থাকা একটা গ্লানি মোচড় দিয়ে উঠছে। সব ঠিক আছে? নাকি আমাদের ইন্দ্রিয় শাসনে রেখেছে আমাদের মননকে। ভুলিয়ে দিতে চাইছে কঠিন বাস্তব। উত্সব প্রতি বছর আসবে। মানুষ মিশে যাবে মানুষের মেলায়। কিন্তু সেই হতাশা? সেই বিচারের অপেক্ষায় থাকা বিবেক? তীব্র অভিমান! পুঞ্জীভূত রাগ এসবের কি হবে? উত্সবের জন্য সব ভুলে যাবো?
ঠিক এই প্রশ্নটাই করেছিলাম একে অপরকে। যখন কলকাতা থেকে ছ’হাজার কিলোমিটার দূরে আমরা বসেছিলাম আমাদের এবারের পুজোর পরিকল্পনা করতে। সাউথ সুইডেনের ছোট্ট শহর হেল্সিংবোর্গের সম্বন্ধের পুজো এইবার পাঁচ বছরে পড়ল। আমাদের মা এবার অভয়দাত্রী। তাঁর প্রদায়িত সাহসের তেজের আগুনে পুড়ে যাক সমস্ত অপরাধ। মিথ্যা। ষড়যন্ত্র। আমরা এটাই চাই।
ছবি সংগৃহিত
আমাদের পুজোতে চিরাচরিত প্রথা মেনে চণ্ডীপাঠ, সন্ধি পুজো সবই থাকবে। এবার থেকে আমরা শুরু করছি কুমারী পুজো। এখানে এখন তাপ মাত্রা নামছে হুহু করে। জ্যাকেট গায়ে দিয়েই পুজোতে যেতে হবে। অবশ্য এতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। আমাদের সুইডেনে শরৎকাল নেই। গ্রীষ্মের পরেই ছুটে চলে আসা হেমন্ত এখানে রুক্ষ। পাতার রং পাল্টাচ্ছে দ্রুত। পথের দুই পাশে জমে উঠেছে ঝরা পাতার স্তুপ। সেই পাতা মাড়িয়েই অসুরদলনী দুর্গা আসবেন আমাদের শহরে। এগারো, বারো, তেরো এই তিনদিন পুজো। এখন সুইডিশরাও জানেন আমাদের পুজোর কথা। তারাও আসবেন। ছোটোরা ছুটে বেড়াবে চারদিকে। বড়রা নানা রকম কাজে ব্যস্ত থাকবেন পুজোর এই কদিন। কিন্তু আনন্দ এবারে নেই। তাই প্রতিবাদের ভাষাই হোক উত্সব। অভয়দাত্রী মা রক্ষা করুন প্রতেয়ক অভয়াকে। আমাদের হেল্সিংবোর্গ দুর্গোত্সবের মন্ডপে দাঁড়িয়ে সেই প্রার্থনাই করব আমরা।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।