সদ্য সাত পূর্ণ করে গুটি গুটি পায়ে অনেকটা পথ পেরিয়ে এলো, লস এঞ্জেলেস শহরের অন্যতম নতুন , ভ্যালি বেঙ্গলি কমিউনিটির দুর্গা পুজো। এই তো সেদিন, ২০১৬ সালে ভিবিসিতে প্রথম দুর্গা পুজোর সূচনা হয়, যা এর মধ্যেই ‘পাড়ার পুজো’ নামে লস এঞ্জেলেসে বাঙালিদের ঘরে ঘরে সমাদৃত। এই বছর ভিবিসি-র পুজোর মণ্ডপ সজ্জা আলাদা করে উল্লেখের দাবি রাখে। সুসজ্জিত পূজা মণ্ডপ, জমজমাট ছিল ঢাকের শব্দে, মঙ্গল শঙ্খ ধ্বনিতে, অঞ্জলি দেওয়ার হুড়হুড়িতে, ধুনুচি নাচ, সন্ধ্যারতি, ও সন্ধি পুজোয়। প্রবাসে দেবী দুর্গার আরাধনা করার আনন্দ, পরিতৃপ্তি ও গর্বে পরিবর্তিত হয় লস এঞ্জেলেস কাউন্টির, আগুরা হিলস শহরের মেয়র, ডেবরা ক্লেইন লোপেজ এর উপস্থিতিতে। মার্কিন মহিলা মেয়র বক্তব্যের শুরুতেই ‘হ্যাপি দুর্গা পূজা’ ঘোষণা করে উপস্থিত সমস্ত দর্শকের মন ছুঁয়ে ফেলেন। দুর্গা পুজোর সারাংশ বর্ণনায় মেয়র জানান দুর্গোৎসব দুষ্টের দমনের সঙ্গে সঙ্গে কোথাও আসলে ‘সেলিব্রেশন অফ উওমেন’ বা মহিলাদের উদযাপন করার উৎসবও বটে। মা দুর্গার আগমন বিশ্বের সব নারীদের সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি দিয়ে যান। অষ্টমী পুজোর পুরো সন্ধ্যেটা মেয়র সবার সঙ্গে হাসিমুখে কাটালেন।, ফটো তুললেন। উপভোগ করলেন আমাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ভারতীয় শাড়ি ও গয়নার ষ্টলগুলি। শুধু তাই নয়, নিজস্ব ইনস্টাগ্রাম পাতায় ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি ভিবিসি এর আয়োজকদের।
বিশেষভাবে অভিবাদন জানাই ভিবিসি এর উদ্দ্যোক্তাদের, তাঁকে এতো উষ্ণ আম্নত্রণ জানানোর জন্য, এবং আমাদের প্রিয় ‘পাড়ার পুজো’ কে সরাকারি মান্যতা দেওয়ার জন্য। প্রতিবারের মতোই ভিবিসি-র পুজো তাঁর স্বকীয়তা বজায় রেখেছে সুদূর কলকাতা শহর থেকে আসা অনেক প্রখ্যাত শিল্পীদের অনুষ্ঠানে। এর মধ্যে সপ্তমী ও অষ্টমীর সন্ধ্যেটি স্মরণীয় হয়ে রইলো সোমলতা অ্যান্ড এসেস, এবং ট্রিবিউট টু লেজেন্ডস এর মন মাতানো অনুষ্ঠানে, যেখানে শিল্পীরা রবীন্দ্রসঙ্গীত থেকে শ্রু করে আধুনিক বানহা ও হিন্দি গানে মন ভরিয়ে দিলেন সমস্ত দর্শকমন্ডলীর। এছাড়া, বাঙালীর উৎসবে ছিল ভুরিভোজের সুব্যবস্থা। দেবীবরণ, সিঁদুরখেলা, কোলাকুলিতে মধুর সমাপ্তি হল ২০২২ দুর্গোৎসবের। মনে আনন্দের রেশটুকু রেখে, আরও এক বছরের প্রতীক্ষার শুরু। শুরু আরও এক বছরের প্রচেষ্টার, পরের বছর, ২০২৩ সালে লস এঞ্জেলেসর বাঙালীদের আরও তিনটি আনন্দঘন দিন উপহার দেওয়ার।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।