৯ সেপ্টেম্বর শনিবারের সন্ধেবেলা ভ্যাপসা গরমকে হারিয়ে দিয়ে বেশ অন্য রকম ভাবে জমে উঠল জ্ঞান মঞ্চ প্রেক্ষাগৃহ। সপ্তাহান্তে ক্লান্ত জনগণের যে কেবল একটু তাজা হাওয়া লাগে তাই-ই নয়। সঙ্গে প্রয়োজন প্রাণ খুলে বাঁচার রসদও। তেমনই এক অনুষ্ঠান নিয়ে হাজির ছিল ‘সং লাফ’! যা এক অভিনব প্রচেষ্টা!
ঠিক নামের মতোই, ‘সং-লাফ’ অনুষ্ঠানটা আদপে গান ও কমেডির মিশেলে তৈরি এক বিচিত্র অনুভূতি। দর্শক কখনও হেসেছেন। কখনও কেঁদেছেন। আবার কখনও গায়কের গলা মিলিয়ে গানও গেয়েছেন। এই পাঁচমেশালি প্রয়াসের সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন 'মীরাক্কেল' খ্যাত কমেডিয়ান শুভদীপ ঘোষ। প্রতিটা গান বা কমেডির মধ্যে তাঁর বলা কথাগুলি দর্শকদের মধ্যে হালকা ফুরফুরে বাতাস বইয়ে দিয়েছে।
অনুষ্ঠানের নানা ভাগে যেমন অকপট হাস্যরসে মঞ্চ মাতিয়েছেন বাংলা কমেডি জগতের পরিচিত নাম শিলাদিত্য চট্টোপাধ্যায়, তেমনই দর্শকদের ভাবিয়ে তুলেছেন কমেডির অন্য রকম ধারায় বিশ্বাসী সৌমিত দেব। তাঁদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন টলি পাড়ার পরিচালকদের এই সময়ের প্রিয় দুই গায়ক, সপ্তক সানাই দাস এবং দেবদীপ মুখোপাধ্যায়। সপ্তকের গলায় এক দিকে যেমন উঠে এসেছে ‘এক্স ইকুয়ালস টু প্রেম’ খ্যাত নানা গান, তেমনই দেবদীপ দর্শকের মন জিতে নিয়েছেন মঞ্চে বসে শ্রোতাদের সঙ্গে গান বেঁধে, তাঁদের সঙ্গে এক কন্ঠে গেয়ে।
কথায় বলে না শিল্পকলার জগতে সবই সম্ভব! তারও ব্যতিক্রম দেখা গেল না এদিনের সন্ধ্যেতে। বিদ্রোহের গান, বিপ্লবের গান, প্রেমের গান, আবার সঙ্গেসঙ্গে মন হালকা করা দমকা হাসি, হাততালি! কখন যে সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত্তির নেমেছে তা টেরই পাননি দর্শক। অনুষ্ঠানে গায়ক সপ্তক জানিয়েছেন যে, তাঁর মনে দাগ কেটেছে শ্রোতাদের এই আন্তরিক ভালবাসা। আবার সৌমিত বলেছেন, তাঁর কমেডি ও গানের মিশেলে যে বিদ্রোহের বারুদ চোখে পড়েছে সবার মধ্যে, সেটাই তাঁকে ভরসা দিয়েছে এমন কমেডি-মিশ্রিত গান গাওয়ায়।
দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত এলাকার এই চার দেওয়ালের মঞ্চ সে দিন যেন গান আর হাসির সুরে পেয়েছিল অন্য মাত্রা। দর্শকরা যেন ছাড়তেই চান না শিল্পীদের! শিল্পীরাও অনুরোধের অনেক ক’টা গান গেয়েই চলছিলেন সমানে!
সবমিলিয়ে অমলিন হাসি ও অফুরান আনন্দের ‘সং-লাফ’ এক নতুন ধরনের অনুষ্ঠান উপহার দিল তিলোত্তমাকে!
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।