ফের শুরু হতে চলেছে রিভার র্যাফ্টিং। নিজস্ব চিত্র।
পুজোর আগে আজ, শুক্রবার থেকে দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে চালু হচ্ছে অ্যাডভেঞ্চার টুরিজ়ম। ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর নির্দেশে পর্যটক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বর্ষার মরসুমে তিন মাস বন্ধ রাখা হয়েছিল সমস্ত ধরনের অ্যাডভেঞ্চার পর্যটন। জিটিএ সূত্রের খবর, গত ১৫ জুন থেকে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার পাহাড়ে প্যারাগ্লাইডিং, র্যাফ্টিং, ক্যাম্পিং, ট্রেকিং-এর মতো সমস্ত কিছুই বন্ধ ছিল।
গত তিন মাস বর্ষায় খরস্রোতা তিস্তা, পাহাড়ে ধস আর ভঙ্গুর মাটির জন্য কোনও ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। আগে অবশ্য সরকারি ভাবে অ্যাডভেঞ্চার পর্যটন বন্ধ থাকত না। বিভিন্ন সংস্থা পরিস্থিতি বুঝে এবং আবহাওয়া দেখে পরিষেবা খোলা রাখত। তাতে পর্যটকের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নও দেখা দিত। তা নিয়ে আলোচনার পরে, প্রথম বার এ বছর জুন থেকে পুরোপুরি বিষয়টি বন্ধ রাখা হয়। আজ, সকালে কালিম্পং জেলার ডেলো থেকে নতুন করে পাহাড়ে অ্যাডভেঞ্চার পর্যটনের সূচনা করা হচ্ছে। এই উপলক্ষে ছোট একটি অনুষ্ঠানে জিটিএ, পুলিশ ও প্রশাসন এবং পর্যটন সংগঠনের প্রতিনিধিরা থাকবেন।
জিটিএ পর্যটন দফতরের এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর সোনম ভুটিয়া বলেন, ‘‘আগামী মাসে দুর্গাপুজো। তার পরে, দীপাবলি, বড়দিন। সব মিলিয়ে পুরোদস্তুর পর্যটন মরসুম চালু হয়ে যাবে। তাই তার আগে, আবার অ্যাডভেঞ্চার পর্যটন চালু করা হচ্ছে।’’
জিটিএ সূত্রের খবর, কালিম্পং জেলার পেডং ও ডেলোয় প্যারাগ্লাইডিং পর্যটকদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এর পরেই রয়েছে তিস্তায় র্যাফ্টিং। এ ছাড়া, সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যান ও নেওড়া ভ্যালি জাতীয় উদ্যানের বিভিন্ন প্রান্তে ট্রেকিংও জনপ্রিয়। দার্জিলিঙের জামুনি এবং বিজনবাড়িতেও অ্যাডভেঞ্চার পর্যটন জনপ্রিয় করার কাজ চলছে। সেখানেও একাধিক পেশাদার সংস্থা পর্যটকদের জন্য অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের ব্যবস্থা করে। এ ছাড়া, দার্জিলিঙের চটকপুরে মাউন্টেন বাইকিং পরিষেবা রয়েছে। সিঙ্গালিলা এবং সান্দাকফু বরাবরই ট্রেকিংয়ের জন্য বিখ্যাত। প্রতি
বছর দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক পাহাড়ে আসেন অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের টানে।
কিন্তু গত কয়েক বছরে প্যারাগ্লাইডিং এবং র্যাফ্টিংয়ে দুর্ঘটনায় পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনাও পাহাড়ে ঘটেছে। ট্রেকিংয়ে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন বহু পর্যটক। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আবহাওয়া খারাপ থাকায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেই সঙ্গে প্রশাসনিক নজরদারি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পেশাদার সংস্থা, উন্নত মানের সরঞ্জাম, প্রশিক্ষিত গাউডের প্রয়োজনীয়তার কথাও বার বার সামনে এসেছে।
রাজ্য পর্যটনের অ্যাডভেঞ্চার পর্যটনের টাস্ক ফোর্সের সদস্য সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘পুজোর মুখে, এই পরিষেবা চালু হওয়া খুবই ভাল উদ্যোগ। পাহাড়ে পর্যটনের সব কিছু এখন জিটিএ দেখভাল করছে। তবে পর্যটকদেরর নিরাপত্তার বিষয়টি
সবার আগে অগ্রাধিকার দিয়ে
দেখতে হবে।’’