প্রতীকী ছবি
নতুন বছরের শুরুতেই অতিমারি আবার আমাদের কাবু করে ফেলেছে। এর জন্য পরিবেশ এবং আবহাওয়া সম্পর্কে আমাদের কিছুটা সতর্ক হওয়া দরকার। কারণ কলকাতা শহরে বিশ্বের অন্যান্য অনেক জায়গার মতো হাড়-কাঁপানো ঠান্ডা না পড়লেও উত্তুরে হাওয়ার প্রকোপে ঘরে ঘরে এই সময় সর্দি-কাশি লেগেই থাকে। বাচ্চাদের তো বটেই এমনকি, পরিণত বয়সের বহু মানুষ নিয়মিত এই সমস্যায় ভোগেন শীতকালে। কিন্তু কিছু সহজ ঘরোয়া উপায়েই কলকাতার মানুষ ঠান্ডা লাগা, গলা ব্যথা, সর্দি-কাশি ইত্যাদির হাত থেকে রেহাই পেতে পারেন।
দুধে মেশান হলুদ
প্রায় সব ভারতীয় রান্নাঘরে পাওয়া অপরিহার্য উপকরণ— হলুদে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা অনেক রকমের স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার চিকিৎসায় সাহায্য করে। বিশেষ করে গরম দুধে হলুদ মেশানো সর্দি-কাশির বিরুদ্ধে লড়াই করার একটি জনপ্রিয় এবং কার্যকর উপায়। কলকাতার শীতে প্রতি দিন রাত্রে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধে হলুদ মিশিয়ে পান করলে ঠান্ডা লাগা এবং সর্দি-কাশির থেকে দ্রুত উদ্ধার পাওয়া সম্ভব।
চা খান আদা দিয়ে
অতিমারির সংক্রমণের মধ্যে আমরা অনুভব করতে পেরেছি মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনতে আদা দিয়ে চা খাওয়া বিশেষ উপকারে আসতে পারে। তবে আদা চা শুধু স্বাদ ফেরাতে নয়, সাধারণ সর্দি-কাশি নিরাময়েও সাহায্য করে। আদা-চা নিয়মিত কিছু দিন খেলে তা শ্বাসনালির থেকে কফ বার করতে সাহায্য করে। আদার মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণ আপনার শরীরের অনাক্রম্যতা বৃদ্ধিতেও বিশেষ উপকারে আসতে পারে।
সহজ ঘরোয়া উপায়েই কলকাতার মানুষ ঠান্ডা লাগা, গলা ব্যথা, সর্দি-কাশি ইত্যাদির হাত থেকে রেহাই পেতে পারেন
মধু-দারচিনি-লেবু মেশান একসঙ্গে
সাধারণ সর্দি এবং কাশির জন্য আরেকটি কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকার হল লেবু, দারচিনি এবং মধুর মিশ্রণ। এই সিরাপ কার্যকর ভাবে সর্দি এবং কাশি নিরাময় করে। এই উপকরণ কলকাতা শহরে সহজেই মিলবে। আধ চামচ মধুতে কয়েক ফোঁটা লেবু এবং অল্প একটু দারচিনি মেশান। সর্দি-কাশি সারাতে দিনে দু’বার এই সিরাপ খান। বয়স্ক অনেক মানুষই এখনও ঠান্ডা লাগার প্রতিকার হিসেবে নামি সংস্থার বাজারচলতি ওষুধের চেয়ে এই মিশ্রণের উপরেই ভরসা রাখেন।
গরম জলের বাষ্প হতে পারে উপকারি
গরম জল থেকে শ্বাস নেওয়ার সময় সেই বাষ্প সর্দি এবং সাইনাসের চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে। যা এই শহরের শীতকালীন আবহাওয়ায় বিশেষ দরকারি। গরম জলের মধ্যে আপনি কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল যোগ করার কথাও বিবেচনা করতে পারেন। অ্যারোমাথেরাপিস্টরাও ফুটন্ত জলে ৪-৭ ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল যোগ করার এবং তারপর নাক দিয়ে এর বাষ্প প্রশ্বাস নেওয়ার পরামর্শ দেন।
ভরসা রাখুন সুস্বাদু চিকেন স্যুপে
ঠান্ডার সময় সর্দি-কাশির থেকে বাঁচতে স্যুপ খেতে পরামর্শ দেন অনেক চিকিৎসক। চিকেন স্যুপ সব বয়সের মানুষের জন্য উপকারী তা ছাড়া এটি সুস্বাদুও বটে। ঠান্ডার জন্য বিশ্বের প্রাচীনতম প্রাকৃতিক প্রতিকারগুলির মধ্যে একটি এই চিকেন স্যুপ। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে সব্জির সঙ্গে মুরগির স্যুপ দেহের শ্বেত রক্তকণিকা নিউট্রোফিলের গতিবিধি কমিয়ে দিতে প্রশংসনীয় ভূমিকা নেয়। যা আপনার শরীরকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সহায়ক। শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের লক্ষণগুলি সহজেই কমায় চিকেন স্যুপ। ফলে কলকাতার শীতে শরীরকে ঠান্ডা লাগা থেকে বাঁচাতে আপনি নিয়মিত খেতেই পারেন ধোঁয়া ওঠা এক বাটি মুরগির স্যুপ।