আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সময়ের দাবি মেনে চলা উচিত। এতগুলো বছর অডিটোরিয়ামে শো করেছি, দর্শক-শ্রোতার মুখোমুখি। কিন্তু পরিস্থিতির চাপে ডিজিটাল কনসার্ট-ই নর্মাল। মন্দ কী! হঠাৎ বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। ডিজিটাল কনসার্ট শুরু হওয়ায় বিদেশে না গিয়েও তাদের কাছে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। এটা শিল্পীদের রুজি-রুটিরও প্রশ্ন। পেশার কথাটাও তো ভাবতে হবে। বাস্তবকে মেনে নিতে অসুবিধে কোথায়! আমি করেছি ডিজিটাল কনসার্ট। ভাল লেগেছে। অতিমারির জন্য সব্বাই গৃহবন্দি। অফিস, স্কুল সবই উঠে এসেছে বাড়ির চার দেওয়ালে। অনলাইনে যদি সবটাই হতে পারে, তা হলে কনসার্টই বা হবে না কেন? যদিও পাবলিক কনসার্টের বিকল্প নেই। আবার ধীরে ধীরে আগের অবস্থা ফিরেও আসছে। দু’ধরনের ব্যবস্থার সহাবস্থানই কাম্য।
লোপামুদ্রা মিত্র
আমি একটা সময় নাটক করতাম। তার পর গান। আমি এমনই গান গাই, যার সঙ্গে কথা রয়েছে। দর্শকদের সঙ্গে ইন্টার্যাকশন ছাড়া আমি সঙ্গীত পরিবেশন করতে পারি না। তাই ডিজিটাল কনসার্ট আমার জন্য নয়। আমি ডিজিটাল কনসার্ট করেছি। করতে গিয়ে খুবই অসুবিধে হয়েছে। আমার মনে হয়েছে, যেন দেওয়ালের সামনে গান গাইছি। আনন্দ, পরিতৃপ্তি কোনওটাই আসেনি। সবটাই সময়ের দাবি। এমন একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে আমরা চলেছি, যখন ডিজিটাল কনসার্টটাই প্রাসঙ্গিক। তাও বলব, এতে প্রাণের অভাব রয়েছে। ডিজিটাল কনসার্টের মাধ্যমে শিল্পীরা গোটা পৃথিবীর কাছে পৌঁছে যেতে পারছে, এই পরিস্থিতিতে এটা খুবই পজিটিভ । তবে আমার মনে হয়, এটা একটা সাময়িক ব্যবস্থা আবার সবটাই আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।
জয় সরকার
আমি মনে করি, এটা খুব সাময়িক একটা বিষয়। পরিস্থিতি ক্রমে স্বাভাবিক হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা হল, খারাপ সময়টা আমরা কাটিয়ে ফেলেছি। যে সময় পাবলিক গ্যাদারিং বন্ধ ছিল, ডিজিটাল কনসার্টই ছিল ভরসা। কিন্তু লাইভ কনসার্টের বিকল্প কখনওই ডিজিটাল কনসার্ট নয়, কারণ লাইভ কনসার্টের স্পিরিটটাই তৈরি হয় দু’পক্ষ, অর্থাৎ যারা পারফর্ম করছে তারা আর যারা শুনছে এই দুইয়ের আদান-প্রদানের মাধ্যমে। ডিজিটাল কনসার্টের যেটা ভাল সেটা হল, সারা পৃথিবীর মানুষ দেখতে পাচ্ছে। সেটা শুধু গান-বাজনা নয়, সিনেমা, সিরিজ সব ক্ষেত্রেই। কিন্তু লাইভ কনসার্টের কখনওই পারফেক্ট সাবস্টিটিউট নয় ডিজিটাল কনসার্ট। আমি তিনটে কনসার্ট করেছি। লাইভ কনসার্টের ভাইবসটাই ছিল না। তাই একজন পারফর্মার হিসেবে আমার খুব ভাল লাগেনি।