দু’নম্বর ন্যাশনাল হাইওয়েতে দিল্লি রোড ধরে যেতে যেতে ল্যাংচা ভবন, ল্যাংচা ভুবন, ল্যাংচা নিকেতন, ল্যাংচা মহল প্রভৃতি আরও নানা দোকানে আপনি পাবেন শক্তিগড়ের বিখ্যাত ল্যাংচা। বর্ধমানের শক্তিগড়, কলকাতা থেকে কিছুটা দূরেই এই অঞ্চলের খ্যাতি এই ল্যাংচার দৌলতেই বেড়েছে কয়েক গুণ। লম্বাটে ভাজা রসাল এই মিষ্টির ভক্ত এখন আট থেকে আশি, সকলেই। এই ল্যাংচা কিন্তু এখন পৌঁছে গিয়েছে বিদেশেও।
কৃষ্ণনগরের সরপুরিয়া আর সরভাজা
কথিত আছে সরপুরিয়ার স্রষ্টা ছিলেন কৃষ্ণনগরের সুরকুমার দাস। তিনি নাকি গভীর রাত্রে দরজা বন্ধ করে ক্ষীর দিয়ে বিভিন্ন মিষ্টি তৈরি করতেন এবং পরদিন সকালে মাথায় ফেরি করতে বেরোতেন। তাঁরই পুত্র পরে এই অঞ্চলে বিখ্যাত মিষ্টির দোকানে সরপুরিয়া এবং সরভাজা বিক্রি শুরু করেন। অন্য এক লোকশ্রুতি মতে স্বয়ং শ্রীচৈতন্যের প্রিয় তিনটি মিষ্টান্নের মধ্যে একটি নাকি সরপুরিয়া। কলকাতা থেকে বহু মানুষ কিন্তু সরভাজা আর সরপুরিয়ার লোভে নিয়মিত হানা দেন কৃষ্ণনগরে।
জনাইয়ের মনোহরা
বাংলা সাহিত্য এবং টিভি সিরিয়ালের দৌলতে জনাইয়ের মনোহরা সন্দেশের খ্যাতি গত কয়েক বছরে আরও বেড়েছে। এই মনোহরা নরম এক ধরনের মুখরোচক সন্দেশ। শোনা যায়, ব্রিটিশ আমলে জনৈক সাহেব জনাইয়ে গিয়ে এমন মিষ্টি তৈরি করতে হুকুম করেন, যা ৪-৫ দিন পরও উপভোগ করে খাওয়া যেতে পারে। সেই থেকে শুরু। মনোহরা সন্দেশ আক্ষরিক অর্থেই বাঙালির হৃদয় জয় করেছে।
জয়নগরের মোয়া
জয়নগরের মোয়া তৈরি করা হয় নলেন গুড়, কনকচুর খই এবং গাওয়া ঘি দিয়ে। এ ছাড়াও থাকে এলাচ, এবং পোস্ত। শীতকালে কলকাতা শহরের ভোজনবিলাসী মানুষের প্রাত্যহিক জলখাবারে এই জয়নগরের মোয়ার দেখা নিশ্চিত মিলবে। জয়নগরের আশপাশে আড়াইশোরও বেশি মিষ্টির দোকানে এই মোয়া তৈরি হয়। দেশের বাইরেও পাঠানো হয় এই মোয়া।
বাঁকুড়ার মেচা সন্দেশ
বাঁকুড়ার বেলিয়াতোরের মেচা সন্দেশ অত্যন্ত জনপ্রিয়। ছাতু, ছানা, খোয়া ক্ষীর, চিনি ও ঘি দিয়ে তৈরি এই মিষ্টি কলকাতা শহরের মানুষজনও এখন পছন্দ করেন। ছোলা গুঁড়ো করে বেসন তৈরি করে সেই বেসন ভেজে আবার গুঁড়ো করা হয়। তার পর ক্ষীর ও চিনি দিয়ে রান্না করা হয়। ঘি এবং সবুজ এলাচ দিয়ে গোলা তৈরি করে তা চিনির রসে ডুবিয়ে শালপাতায় শুকানো হয়। এই মেচা সন্দেশ কিন্তু রেফ্রিজারেটরের বাইরেও ১০-১৫ দিনের জন্য নিরাপদে রাখা যেতে পারে।