কলকাতার একটা নিজস্ব আমেজ আছে। সেটা অন্য কোনও শহরে নেই। এই শহরের আন্তরিকতা তো তুলনাহীন। বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা, যে কোনও উৎসব বা পার্বণে সকলের সঙ্গে মেতে ওঠা— এ সব কলকাতা ছাড়া ভাবেই পারি না। এখনও অবধি কলকাতার মতো অল্প টাকায় ভরপেট খাওয়া দেশের অন্য কোনও বড় শহরে সম্ভব নয়। ভালবাসা এবং বন্ধুত্বের মতো কলকাতা তথা বাংলার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের কথাও ভোলা যায় না।
আমি অনেক ছোট থেকেই একা থেকেছি। কসমোপলিটন পরিবেশে বড় হয়েছি। কলকাতায় থাকলে মনে হয় এখানে যাই, ওখান থেকে একটু ঘুরে আসি। কিন্তু কলকাতা থেকে বার হলেই এই শহরটা টানতে থাকে। মনে পড়তে থাকে পিছুটানগুলো। বন্ধুবান্ধবদের কথা মনে পড়ে। এই শহরের নিরাপত্তাও খুব মনে পড়ে। নিরাপত্তা কিন্তু সবসময় আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত নয়। কলকাতায় থাকলে এক বার ফোন করলে সবরকম সাহায্য দোরগোড়ায় হাজির হয়ে যায়। হয়তো কাজের চাপে পরিচিতদের সঙ্গে নিয়মিত দেখা হচ্ছে না। কিন্তু ঠিক জানি, একবার ফোন করলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
এই জিনিস কিন্তু অন্য কোনও শহরে পাই না। দিল্লি, মুম্বইয়ের মতো শহরে কেউ ফিরেও তাকাবে না। সেখানে তো পাশের ফ্ল্যাটে কে থাকেন, সেটাই জানা যায় না। আমি কিন্তু সব পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারি। কিন্তু তার পরেও কলকাতার এই আত্মিক টানটা সব জায়গায় পাই না। এই শহরে থাকলে মনে হয় যেন একটা বড় পরিবারের অংশ হয়ে আছি। আর খাওয়াদাওয়ার দিক দিয়ে তো আমার কাছে এই শহর পৃথিবীর মধ্যে সেরা। স্বাদের এত বৈচিত্র কোনও শহরে নেই। এর সঙ্গেই কলকাতার থাকবে ক্লাব-সংস্কৃতি। সব মিলিয়ে, তিলোত্তমার মতো প্রাণবন্ত শহর কিন্তু আর দ্বিতীয় একটাও নেই।