সবের আগে বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ, দয়া করে আমার কথায় রাজনৈতিক রং খোঁজার চেষ্টা করবেন না।
আমার চোখে বর্তমানের কলকাতা বহিরঙ্গে ভারী সুন্দরী! সব দিক থেকেই যেন তার শরীরে সৌন্দর্যের ঢল। বদলে অন্তরঙ্গতায় যেন অনেকটাই খামতি। যা আমার কাছে ছেলেবেলার দুর্লভ সম্পদ। আরও একটি বড় বদলে ইদানীং চোখে বিঁধছে। আমার যৌবনে কলকাতাও যৌবনবতী হত রাত গড়ালে। রাত ২টোর আগে ঘুম নামত না তিলোত্তমার চোখে। এখন সত্যিই বয়স বেড়েছে তার। রাত ১০টা বাজলেই কলকাতা যেন নিঝুম পুরী। রাস্তা ফাঁকা হয়ে যায়। মাল্টিপ্লেক্স ছাড়া আর কোথাও নাইট শো দেখা যায় না। এত ফাঁকা রাস্তাঘাট মেয়েদের জন্য কতটা সুরক্ষিত? সেই প্রশ্নও কিন্তু যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
বরাবরই কলকাতার আত্মা তার রাজনৈতিক মনস্কতা। সেটা ব্রিটিশ শাসনের সময়েও ছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও তাতে ঘাটতি ছিল না। ইদানীং সেখানেও ভাটার টান। রাজনৈতিক উদ্যম যেন বিলুপ্তপ্রায়। একই সঙ্গে নিভু নিভু সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলও। ষাট বা সত্তরের দশকে কলকাতা যতটা সংস্কৃতিমনস্ক ছিল, এখন তার সম্পূর্ণ বিপরীত। এখন দেখি, কলকাতার মানুষ কিছু অপ্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে উন্মত্ততা প্রকাশ করেন। যেমন, রাজনৈতিক নেতাদের কেচ্ছা। কিংবা তারকাদের প্রতি অহেতুক কটাক্ষ। এ নিয়েই সারা ক্ষণ মাতামাতি। এ নিয়েই সবার অকারণ মাথা ব্যথা। আগেকার আড্ডায় ফুটবল, ক্রিকেট, সাহিত্য, রাজনীতি, থিয়েটার, সিনেমা জায়গা করে নিত। কলকাতার আড্ডা বুঝি সে সবও ভুলতে বসেছে? এগুলি ছাড়া শহরটাই যেন আলুনি!