সুকান্ত মজুমদার, অমিত শাহ এবং শুভেন্দু অধিকারী। — ফাইল চিত্র।
এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যেতে পারে। তবে এখনও গত নির্বাচনে হেরে যাওয়া আসনগুলিতে কাদের নাম নিয়ে আলোচনা হবে সেই তালিকা তৈরি করতে পারল না রাজ্য বিজেপি। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সেই কাজ শুরু হলেও শেষ করা যায়নি। এখনও অনেক আসন নিয়ে আলোচনাই অধরা।
গত সপ্তাহেই রাজ্য বিজেপি ২০ সদস্যের নির্বাচন পরিচালন কমিটি গঠন করেছে। তার প্রথম বৈঠকই ছিল বৃহস্পতিবার। কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনসলের আচমকা ডাকা সেই বৈঠকে যোগ দিতে ওই কমিটিতে থাকা আট সাংসদকে তড়িঘড়ি দিল্লি থেকে কলকাতায় চলে আসতে হয়। তাঁদের মধ্যে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও ছিলেন। কেন্দ্রে মন্ত্রী থাকা এই রাজ্যের সাংসদরাও ফিরে আসেন। যাঁরা আবার শুক্রবার সকালে ফিরে গিয়েছেন দিল্লি। কারণ, শনিবার পর্যন্ত চলবে লোকসভা।
বৃহস্পতিবার বৈঠক শুরু হওয়ার কথা ছিল সন্ধ্যা ৬টায়। মোটামুটি ঠিক সময়েই বৈঠক শুরু হলেও বিমান দেরিতে থাকায় সল্টলেকের রাজ্য দফতরে সঠিক সময়ে পৌঁছতে পারেননি সুকান্ত, সুনীল। তবে তার আগেই রাজ্যের পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডের নেতৃত্বে বৈঠক শুরু হয়ে যায়। সেই সময়ে উপস্থিত থাকলেও, অন্য কর্মসূচি থাকায় সুকান্ত, সুনীল পৌঁছনোর আগেই চলে যেতে হয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। ফলে বৈঠক কার্যত দু’দফায় হয়। প্রথম পর্বে হেরে যাওয়া আসনগুলিতে প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের তালিকা তৈরি হয়। যে তালিকা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিবেচনা করবেন। আর দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা হয় পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে। দ্বিতীয় পর্বে মূলত বুথের শক্তি বাড়ানোর কাজ চালিয়ে যাওয়ার কর্মসূচিই নেওয়া হয়েছে। রাজ্যে একের পর এক পরীক্ষা থাকায় যে হেতু কোনও সভা, সমাবেশ করা যাবে না তাই বাড়ি বাড়ি প্রচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
চলতি মাসের শেষ দিকে রাজ্যে আসার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। তার পরেই আসার কথা রয়েছে সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার। সেই সব কর্মসূচি কেমন হবে, কোথায় হবে তা নিয়েও প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। যে হেতু এখনও শাহ আসার দিনক্ষণ জানা যায়নি, তাই প্রাথমিক স্তরের আলোচনাটুকুই হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। একই সঙ্গে আগামী শনি ও রবিবার দিল্লিতে হতে চলা রাষ্ট্রীয় অধিবেশনে বাংলার নেতাদের যোগদান নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
তবে মূল আলোচনাটাই ছিল প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের তালিকা নিয়ে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই আলোচনায় বাদ রাখা হয়েছে গত লোকসভা নির্বাচনে জয় পাওয়া ১৮টি আসন। এমনকি, উপনির্বাচনে হেরে যাওয়া আসানসোল এবং তৃণমূলে ফিরে যাওয়া অর্জুন সিংহের ব্যারাকপুরও। বৃহস্পতিবার আলোচনা হয়নি পূর্ব মেদিনীপুরের দুই আসন কাঁথি, তমলুক নিয়েও। কারণ, এই আসনগুলিতে প্রার্থীবদল হবে কি না সে সিদ্ধান্ত নেবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেকেই প্রার্থী হতে চেয়ে রাজ্য নেতাদের কাছে ব্যক্তিগত ভাবে আর্জি জানিয়েছেন। অনেক জেলা নেতৃত্বও তাঁদের চাহিদার কথা জানিয়েছে। প্রার্থী হতে চেয়ে বেশি আগ্রহ আরামবাগ, দক্ষিণ মালদহ, কৃষ্ণনগর আসনের জন্য। বারাসত আসনের জন্যও অনেকের আগ্রহ। বৈঠকে হাজির নেতাদের থেকে আগ্রহীদের নাম সংগ্রহ করা হয়েছে বৃহস্পতিবার। তবে শুভেন্দু কোনও নামের তালিকা জমা দেননি বলেই জানা গিয়েছে।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার প্রার্থী বাছার ক্ষেত্রে জয়ের সম্ভাবনাকেই যোগ্যতার প্রথম ও একমাত্র মাপকাঠি রাখা হবে। আদি-নব্য বিচার যেমন হবে না, তেমনই কারও ‘কাছের লোক’ হিসাবেও প্রার্থী করতে চায় না পদ্মের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে এটাও ঠিক হয়েছে রাজ্যের নির্বাচন কমিটি প্রতিটি আসনের জন্য একাধিক নামের তালিকা দেবে। তার মধ্যে রাজ্য নেতারা আলোচনা করে ঠিক করবেন সেই তালিকায় নামের ক্রম কেমন হবে। এর পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রসঙ্গত, বিজেপির রীতি অনুযায়ী গোটা দেশের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে দলের সংসদীয় বোর্ড। ১১ জনের সেই বোর্ডে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। মোদী-শাহ-নড্ডার সেই কমিটিতে বড় ভূমিকা থাকে দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষের। এই কমিটির সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের সেতুর কাজটিই করবেন বনসল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy