Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

ভোটের ‘ওয়ার রুম’ তৈরি পদ্মের, পাঁচটি তলা বদলে গিয়েছে নির্বাচনী দফতরে, কোন তলে কী কী ব্যবস্থা?

বিজেপি রাজ্য দফতরের ঠিকানা অনেক আগে বদলালেও সে বাড়ির নীল রঙে গেরুয়ার নামগন্ধ ছিল না। লোকসভা নির্বাচনের ওয়ার রুমে এখন নির্বাচনী রঙে সেজে উঠেছে।

War room of BJP is ready for Lok Sabha Election 2024

ভোটের সাজে সল্টলেকের বিজেপি দফতর।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ২০:১৭
Share: Save:

উত্তর কলকাতার সরু গলি মুরলীধর সেন লেন থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভের ‘নবদিগন্ত’ এলাকা। বিজেপির রাজ্য দফতর বদলকে ‘উত্তরণ’ বলাই যায়। ৬ নম্বর মুরলীধর সেন লেন গত বিধানসভা নির্বাচনের সময়েও ছিল কলকাতা জোনের নির্বাচনী কার্যালয়। এখন শুধুই কলকাতার উত্তরের দফতর। বাকি বাংলার লড়াই হবে সল্টলেকের অফিস থেকেই।

২০২১ সালে নীলবাড়ির লড়াইয়ে দক্ষিণ কলকাতার হেস্টিংসে নীলরঙের একটি বাড়িতে বিজেপি ‘ওয়ার রুম’ তৈরি করেছিল। বিধানসভা ভোটে স্বপ্নভঙ্গের পরে ২ নম্বর সেন্ট জর্জেস গেট রোডের সেই বহুতল দফতর ছেড়ে দেয় বিজেপি। তার বদলে এখন রাজ্য বিজেপির নতুন ঠিকানা জিএন ২৭, সল্টলেক, সেক্টর ফাইভ। এটাই দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে বিজেপির ‘কেন্দ্র’। ঘটনাচক্রে এই বাড়ির রং নীল।

‘নবদিগন্ত’ এলাকার এই দফতর অনেক আগে চালু হয়ে গেলেও এত দিন কেউ সেটিকে বিজেপির রাজ্য দফতর বুঝতে পারতেন না। লোকসভা ভোটের মরসুমে সেই দফতর মোদীর ছবি এবং পদ্মের পতাকায় সেজে উঠেছে। প্রবেশদ্বারে ‘মোদীর গ্যারান্টি’ স্লোগানও রয়েছে।

পাঁচতলা এই বাড়ির একাংশে আগে একটি অন্য দফতর ছিল। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের আগে সবক’টি তলাই বিজেপি নিয়ে নিয়েছে। সেখানেই সাজানো হয়েছে রাজ্যে ৪২ আসনের লোকসভা ভোট পরিচালনার বিভিন্ন দফতর। একটা সময় পর্যন্ত বিজেপি দফতরে দলের কর্মীদের তো বটেই, সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের অবাধ যাতায়াত ছিল। পরে মুরলীধর সেন লেনে প্রথম তল ছাড়া সর্বত্র প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়। সল্টলেকের দফতরে প্রথম থেকেই নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। একেবারে প্রথম তলায় ‘রিসেপশন’ ছাড়িয়ে বাঁ হাতেই সাংবাদিক বৈঠকের কক্ষ। সেই পর্যন্থই সংবাদমাধ্যমের গতিবিধি। কখনও সখনও দোতলার হলঘরে ডাক পড়ে। তবে কদাচিৎ।

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম তলে সাতটি মোর্চার আলাদা আলাদা দফতর রয়েছে। আর রয়েছে একটি কনফারেন্স রুম। যেখানে সাধারণত বিভিন্ন মোর্চার বৈঠক হয়ে থাকে। একই রকম একটি কনফারেন্স রুম রয়েছে দোতলায়। সেখানেই কখনও সখনও সাংবাদিক বৈঠক হয়। এ ছাড়াও আইন থেকে হিসাবনিকাশ সামলানোর আলাদা আলাদা ঘর রয়েছে এই তলায়। সেই সঙ্গেই রয়েছে একটি বৈঠক করার ঘর এবং একটি নির্বাচনী প্রশাসন চালানোর ঘর।

নির্বাচনের ‘ওয়ার রুম’ তিন তলায়। তার পাশেই নির্বাচন পরিচালন কমিটির প্রধান নেতাদের ঘর। নির্বাচনের সময়ে কোন নেতা কোন আসনের কোথায় এবং কবে যাবেন, তা পরিচালনার জন্যও রয়েছে আলাদা ঘর। এই তলাতেই রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ রাজ্য নেতাদের আলাদা আলাদা ঘর। তবে ভোটের প্রচারে ব্যস্ত নেতাদের ঘর এখন বেশিরভাগ সময়েই ফাঁকা থাকছে। বাংলা থেকে বিজেপির যে নেতারা সর্বভারতীয় দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের বসার ঘর চার তলায়। সেই তলাতেও তিনটি কনফারেন্স রুম রয়েছে। এ ছাড়াও সেখানেই বিজেপির মূল ‘কল সেন্টার’। জেলায় জেলায় ‘কল সেন্টার’ থাকলেও বেসরকারি সংস্থা ‘জার্ভিস গ্রুপ’-এর প্রধানরা কাজ করেন এই চার তলার অফিসঘর থেকে। বাড়ির পাঁচ তলাতেও রয়েছে একটি ‘কল সেন্টার’। ভোট পরিচালনা দফতরের আলাদা আলাদা ঘরের পাশাপাশি এই তলায় রয়েছে ক্যান্টিন।

২০২১ সালে এই ভাবেই বিজেপি সাজিয়েছিল হেস্টিংসের বাড়ি। হেস্টিংসের বাড়ির বিভিন্ন তলায় নেতাদের বসার ব্যবস্থা ছিল। তবে সে সব এখন অতীত। নীলরঙের সেই বাড়ি যাঁরা আলো করে থাকতেন, তাঁদের অনেকেই এখন আর বিজেপিতে নেই বা রাজ্যে দায়িত্বে নেই। মুকুল রায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়-সহ এমন নেতারা ছিলেন সেই তালিকায়। সেই অতীত ভুলে বিজেপির নতুন নেতারা আপাতত নীলরঙের নতুন বাড়ি থেকে দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে বড় সাফল্যের লক্ষ্যে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 bjp office BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE