(বাঁ দিক থেকে) সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, মহম্মদ সেলিম, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
লোকসভা ভোটে বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোটের সম্ভাবনা কয়েক দিন আগেই নস্যাৎ করে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বহরমপুরের সরকারি পরিষেবা প্রদান কর্মসূচি থেকে মমতা দাবি করলেন, কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর দলের বোঝাপড়া ভাল জায়গায় ছিল। কিন্তু গোটাটা নষ্ট হয়েছে সিপিএমের জন্য। মমতা এ-ও জানিয়েছেন, গান্ধীদের সঙ্গে তাঁর পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু কোনও রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই।
বহরমপুরের সভায় মমতা বলেন, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের আন্ডারস্ট্যান্ডিং (বোঝাপড়া) ভাল ছিল। যদি কেউ খারাপ করে থাকে, তার নাম সিপিএম পার্টি। সিপিএম আজকে সবচেয়ে বড় বিজেপির দালাল হয়েছে।’’ মমতার এই বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘আমরা সংবাদমাধ্যমের সূত্রেই জেনেছিলাম কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল আলোচনা করছে। কয়েক মাস আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাহুল গান্ধীর বাড়িতেও ছুটেছিলেন। কিন্তু ওদের মধ্যে কী হল, তার মধ্যে সিপিএম এল কোথা থেকে? আসলে উনি (মমতা) এখনও সিপিএমের ভূত দেখার অভ্যেস ছাড়তে পারেননি।’’
বহরমপুরের সভায় মমতা বলেন, ‘‘ওদের (গান্ধীদের) সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক আছে। রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। আমি একদিন কংগ্রেস করতাম। কংগ্রেস থেকে আমায় তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমি তৃণমূল তৈরি করেছিলাম। আমি ভাবলাম বৃহত্তর স্বার্থে সবাই কাজ করবে। আমি প্রস্তাব দিলাম প্রথমে। আমি দুটো সিট দিতে চেয়েছিলাম মালদহে। বলল হবে না।’’ এর পর দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ মমতা বলেন, ‘‘আমি বললাম ক’টা চাই, বিয়াল্লিশ? বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশ? বিয়াল্লিশটাই হারবে আর বিজেপি জিতবে? আর বাংলায় এসে তারা মস্তানি করবে? লুট করবে, মানুষকে খুন করবে? আমি হতে দেব না। আমার ক্ষমতা আছে, আমার হিম্মত আছে, আমি বিজেপিকে লড়তে পারি।’’
মমতার সঙ্গে সনিয়া গান্ধীর সুসম্পর্ক বহু বছরের। রাহুল গান্ধীর সঙ্গে অবশ্য তাঁর সম্পর্ক অতটা আন্তরিক কি না, তা স্পষ্ট নয়। রাহুল অসম থেকে কয়েক দিন আগেই বলেছিলেন, ‘‘মমতাজির সঙ্গে আমার এবং আমার দলের ভাল সম্পর্ক রয়েছে।’’ তার পরের দিনই অবশ্য পূর্ব বর্ধমান যাওয়ার সময় ডুমুরজলা থেকে মমতা বলে দেন, ‘‘কংগ্রেস মিথ্যাচার করছে, বাংলায় তৃণমূল একাই লড়বে।’’ পূর্ব বর্ধমান থেকে ফেরার সময়ে মমতা গাড়িতে বসেই মাথায় আঘাত পান। তার পর ফোন করে এবং মোবাইলে বার্তা পাঠিয়ে তাঁর খোঁজ নিয়েছিলেন সনিয়া, প্রিয়ঙ্কা। এক দিকে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব তৃণমূলের উদ্দেশে জোটের বার্তা দিয়ে যাচ্ছেন ধারাবাহিক ভাবে। অন্য দিকে অধীর চৌধুরীর মতো রাজ্যের নেতারা তৃণমূলকে আক্রমণ করেই যাচ্ছেন। কয়েক দিন আগে তৃণমূল স্পষ্টই বলে, বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের জোটের কাঁটা এক এবং একমাত্র অধীর।
এই গোটা পর্বে জল মেপে গিয়েছে সিপিএম। কংগ্রেস এবং তৃণমূলের জোটের সম্ভাবনা ‘ঘেঁটে যেতেই’ আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সিদ্ধান্ত নেয়, রাহুলের ‘ন্যায় যাত্রা’য় দলের নেতারা অংশ নেবেন। রাহুলের যাত্রায় সেলিমের থাকার কথা মুর্শিদাবাদে। সিপিএম চেয়েছিল গত নভেম্বরে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে। কিন্তু তৃণমূল এবং কংগ্রেসের ‘আলোচনার’ কারণে তা সম্ভব হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy