লোকসভা ভোটের প্রচারে তৃণমূল সমর্থকেরা। ছবি: পিটিআই।
টালিগঞ্জের বাঁশদ্রোণী। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়। কাচের দরজার ও পারে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। যাদবপুর লোকসভাকেন্দ্রে দলীয় প্রার্থীর নির্বাচনী-কান্ডারি। প্রথমে অবশ্য ওই ঘরে ঢোকার ছাড়পত্র মিলল না। রাস্তার উল্টো দিকে শাসকদলের আর এক অফিসে বসে থাকা কয়েকজন তৃণমূল নেতা জানালেন, দরজার ও পারে এখন ভোট পরিচালনার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন নির্বাচনী উপদেষ্টা সংস্থার কর্মীরা। সংবাদমাধ্যম তো দূর, সেখানে দলের অনেক নেতারও প্রবেশ নিষেধ।
তবে খোঁজখবর করতেই জানা গেল, ওই ঘরে সামনে ল্যাপটপ রেখে কানে মোবাইলের হেডফোন গুঁজে নাগাড়ে একের পর এক ফোন করে চলেছেন ৩০-৪০ জন তরুণ-তরুণী। যাদবপুর লোকসভাকেন্দ্রের অন্তর্গত টালিগঞ্জ, যাদবপুর, সোনারপুর উত্তর ও দক্ষিণ এবং ভাঙড়ের বুথগুলিতে ভোরবেলার ‘মক পোল’ থেকে প্রতি ঘণ্টার রিপোর্ট সংগ্রহ করছেন তাঁরা।
মূল অফিসের উল্টো দিকের একটি ফ্ল্যাটেও খোলা হয়েছে তুলনায় ছোট একটি অফিস। সেখানেও বেশ কয়েকজন তরুণ-তরুণী ল্যাপটপ সামনে রেখে মোবাইলে অনবরত প্রতিটি বিধানসভা, পুরসভা এবং পঞ্চায়েত এলাকার বুথে ভোটদানের তথ্য সংগ্রহ করে চলেছেন। বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে স্থানীয় ছোট-বড় নেতাদের কাছ থেকেও। ছাড়পত্র পেয়ে সেখানে ঢুকতেই দেখা গেল, এক তরুণীর চিৎকার। তিনি বলছেন, “আপনার কথা অনুযায়ী ২৪৩টি ভোট পড়েছে। তা কী ভাবে ৬৪ শতাংশ হয়?” জানা গেল, যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের স্থানীয় এক পর্যবেক্ষক ফোনে জানিয়েছিলেন, বেলা বারোটার মধ্যে এক এলাকায় ৬৪ শতাংশ ভোট পড়েছে।
ভবানীপুর এলাকার এক বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘এ বার ভোট পরিচালনার ‘প্যাটার্ন’-ই বদলে গিয়েছে। সবটাই এখন ‘কর্পোরেট’ আর ডিজিটাল ব্যবস্থা। প্রার্থী বাছাই থেকে নির্বাচন পরিচালনা— পুরোটাই কর্পোরেট ধাঁচের বন্দোবস্ত।”
ওই নেতার দাবি, উপদেষ্টা সংস্থাকে দিয়ে ত্রি-স্তরীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে এ বার নির্বাচন পরিচালিত হচ্ছে। প্রতি লোকসভা কেন্দ্রে একটি করে প্রধান কার্যালয় বা কন্ট্রোল রুম। তার অধীনে সাতটি বিধানসভায় একটি করে কার্যালয়। সব ক্ষেত্রেই ওই পরামর্শদাতা সংস্থার কর্মীরাই মূল নিয়ন্ত্রক। বুথ থেকে ‘অবজ়ার্ভার’দের পাঠানো তথ্য ল্যাপটপে প্রতি ঘণ্টায় তোলা হচ্ছে বিধানসভা-ভিত্তিক কন্ট্রোল রুমে। সেখান থেকে তথ্য আসছে লোকসভা কেন্দ্রের মূল কন্ট্রোল রুমে। নির্বাচন শেষ হতেই সেখান থেকে সমস্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে ক্যামাক স্ট্রিটে সংস্থার মূল অফিসে পাঠানো হচ্ছে। প্রতিটি কথোপকথনেই চালু থাকছে কল রেকর্ডিং।
দলের নেতাদের একাংশের দাবি, শুধু দলীয় কর্মী নন, নির্বাচন চলাকালীন পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন উপদেষ্টা সংস্থার কর্মীরা। অরূপের কথায়, ‘‘কর্পোরেট ও সংগঠন মিলেমিশে নির্বাচনের কাজ করছে। আমিও তো প্রধান কার্যালয়ে রয়েছি। তৃণমূল স্তরের সব কর্মীদের কাছ থেকে খবর নিচ্ছি।...তৃণমূল এখন কর্পোরেট।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy