(বাঁ দিকে)মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
প্রাচীন মল্লগড় বিষ্ণুপুরে হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া তৃণমূল। সেই লক্ষ্য নিয়ে মঙ্গলবার বাঁকুড়ার পাত্রসায়রে নির্বাচনী সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরুলিয়ার একটি সভা সেরে তাঁর পাত্রসায়রে সভা করার কথা। লোকসভা নির্বাচনের মুখে তৃণমূলনেত্রীর সভা ঘিরে এখন সাজ সাজ রব বিষ্ণুপুরে। সভায় রেকর্ড সংখ্যক ভিড় টানার লক্ষ্য নিয়েছে তৃণমূল। মঙ্গলবার মমতার সভার পরের দিন অর্থাৎ, বুধবারই বিষ্ণুপুরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আসছেন। তাই তৃণমূল এবং বিজেপি, দুই শিবিরই ফুটছে উত্তেজনায়। কারা বেশি লোক টানতে পারে সভায়, তা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে লড়াই।
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর লোকসভা এক সময় ছিল বামেদের শক্ত ঘাঁটি। ২০১৪ সালে তৃণমূলের ঝোড়ো হাওয়ায় বাম প্রার্থী সুস্মিতা বাউড়িকে পরাজিত করে জয়ী হন সেই সময় কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া সৌমিত্র খাঁ। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে আবার পালাবদল বিষ্ণুপুর লোকসভায়। সে বার তৃণমূল প্রার্থী শ্যামল সাঁতরাকে হারিয়ে তৃণমূলত্যাগী সৌমিত্র খাঁ জিতে বিজেপির সাংসদ হন। এ বারও ওই লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী বিদায়ী সাংসদ সৌমিত্র। তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের সুজাতা মণ্ডল। গত লোকসভা ভোটে স্বামীর হয়ে ঝোড়ো প্রচার করা সুজাতাকে দিয়ে এ বার মল্লগড়ে নিজেদের হারানো জমি ফিরে পেতে চাইছে তৃণমূল। মঙ্গলবার সুজাতার সমর্থনে পাত্রসায়রের গরু হাটতলা ময়দানে সভা করার কথা তৃণমূলনেত্রী মমতার। সভা ঘিরে সোমবার চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি চলছে। পাত্রসায়রের সমস্ত ছোট-বড় রাস্তা সাজানো হয়েছে তৃণমূলের পতাকা এবং বড় বড় হোর্ডিংয়ে। সভাস্থলের অদূরে তৈরি করা অস্থায়ী হেলিপ্যাডে হেলিকপ্টারের পরীক্ষামূলক অবতরণও করানো হয়েছে।
তৃণমূলনেত্রীর সভা নিয়ে তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই ছিল এবং এখনও আছে।’’ এর পর প্রাক্তন স্বামীকে কটাক্ষ করে সুজাতার মন্তব্য, ‘‘এক গদ্দারের জন্য এই আসনটি ২০১৯ সালে তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছিল। কিন্তু বিষ্ণুপুরের আপামর মানুষ বুঝতে পেরেছেন। তাই আবার সবাই তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছেন। এ বার বিষ্ণুপুরের মাটিতে জোড়া ফুলের জয় নিশ্চিত।’’
যদিও বিষ্ণুপুরে তৃণমূল দাঁত ফোটাতে পারবে না বলেই দাবি পদ্মশিবিরের। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুরে তৃণমূলের পায়ের তলায় মাটি নেই। সেটা ২০১৯ সালের লোকসভা ভোট এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেই প্রমাণ হয়েছে। তাই ভয়ে ২০২৩ সালের গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে দেয়নি তৃণমূল।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর সভার পরের দিন বুধবার পাত্রসায়র ব্লকের বালসিতে শুভেন্দু অধিকারীর সভা আছে। কার প্রতি বিষ্ণুপুরের মানুষের আবেগ আছে, তা দু’টি সভাতেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’ তৃণমূল বলছে, এ বার রেকর্ড সংখ্যক লোক হবে সভায়। তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার মাতৃসমা। তিনি আমাকে আশীর্বাদ করতে আসছেন। তাঁকে দেখা ও তাঁর কথা শোনার জন্য বিষ্ণুপুর লোকসভার মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। আমাদের লক্ষ্য সভায় ৫০ হাজার মানুষের জমায়েত। কিন্তু মানুষের আবেগ আর উচ্ছ্বাস যে পর্যায়ে রয়েছে তাতে এক লক্ষ ছাপিয়ে জনসমাগম হয়ে যে কোন জায়গায় পৌঁছবে, তা আমাদের কল্পনারও অতীত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy