মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
প্রথম কয়েক পর্বেই ‘বাঘবন্দি’ করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই ৭ আসনের অন্তত একটি আসন পেতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্যের শাসক দল।
হাতছাড়া উত্তরবঙ্গে ভোটের আগে এই পরিকল্পনা করে কয়েকটি আসন ঘিরে এক ডজন মিটিং করে ফেলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আগে ও পরে বিজেপি-গড়ে ‘নিত্যযাত্রী’ হয়ে বাড়তি চাপ রাখার কৌশল নিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। প্রথম দফায় উত্তরের যে তিন লোকসভা আসনের ভোট, সেখানে ২১টি বিধানসভা আসনে ‘সুরক্ষাকবচ’ পেতে চাইছেন তাঁরা।
ভোটের প্রচারের শেষ দিন পর্যন্ত কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে মাটি কামড়ে পড়ে ছিল তৃণমূল। তবে পাঁচ বছরে এই তিন আসনের কোনওটিতেই প্রধান বিরোধী বিজেপির থেকে এগিয়ে যেতে পারেনি তারা। তাই এগিয়ে যাওয়ার অঙ্ক এখনও মেলাতে না পারলেও অধরা উত্তরের ‘প্রত্যাখ্যানে’ ছেদ টানতে চাইছেন তারা।
কিন্তু কী ভাবে? দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পর থেকে একেবারে পরিকল্পিত সাংগঠনিক প্রস্তুতি শুরু করেছিলাম আমরা। সেই ধারাবাহিক চেষ্টার ফলই আশা করছি।’’ রাজ্যে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে উত্তরের আসনগুলিতে অপ্রত্যাশিত ঝড়ের মুখে পড়েছিল তৃণমূল। সেই হিসেবে আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি আসনে বিজেপি শুধু জেতেইনি, ৫০%-এর বেশি ভোট পেয়েছিল। কিন্তু দু’বছর পরে বিধানসভা ভোটের নিরিখে দু’টি কেন্দ্রে পিছিয়ে থাকলেও তৃণমূলের ভোট বেড়েছে ৩ ও ৬%। সেই হিসেব ধরে পঞ্চায়েতের আগে প্রার্থী বাছাইয়ে স্থানীয় মত সংগ্রহের চমকে সাংগঠনিক স্তরে তো বটেই, জনমানসে দলের উপস্থিতি সম্পর্কেও একটা নতুন ধারণা তৈরি করতে চেয়েছে তারা।
গত দু’বছরে হারা আসনে বাড়তি জোর দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। অঞ্চল স্তরে সমীক্ষা করে ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে দলের জয় নিশ্চিত করতে পেরেছিলেন তাঁরা। সামগ্রিক ভাবে জনমতে বড় বদল না এলেও সেই জয়ে দলের সম্ভাবনা নিয়ে প্রচার তৈরি করতে পেরেছে তৃণমূল। আলিপুরদুয়ারের তরুণ সংগঠক প্রকাশ বরাইককে রাজ্যসভায় পাঠিয়ে সেই আবহকেই জোরদার করার কৌশল নিয়েছিলেন দলীয় নেতৃত্ব। এ বার লোকসভা ভোটে ধূপগুড়ির বিধায়ক আর
রাজ্যসভার সাংসদকে দুই কেন্দ্রে প্রার্থী করে তাঁরা যতটা সম্ভব লড়াইয়ে থাকতে চেয়েছেন। চা-শ্রমিকদের আর্থিক দাবিদাওয়া, আবাসন ও জমির পাট্টার মতো বিষয়কে সামনে রেখে নিজেদের সক্রিয়তার বার্তাও দিয়েছে তৃণমূল।
এই অঙ্কেই কোচবিহার আসনটিকে আলাদা করে বেছে নিয়েছেন তৃণমূলের দুই প্রধান। এখানে বিজেপির শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে নিশীথ প্রামাণিক কঠিন প্রতিপক্ষ। শুধু তা-ই নয়, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের থেকে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তাঁর কেন্দ্রে বিজেপির ভোট কমেনি তা-ই নয়, সামান্য এগিয়েছেন তিনি। এখানে সীমান্ত সমস্যা, বিএসএফের বিরুদ্ধে অভিযোগকে হাতিয়ার করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথকে ‘বন্দি’ রাখতে সর্বশক্তি দিয়ে নেমেছেন মমতা ও অভিষেক।
সামগ্রিক ভাবে এই তিন কেন্দ্রের মতোই মালদহের দু’টি, রায়গঞ্জ ও বালুরঘাটের হারানো আসনের মধ্যে একটি ফিরে পেতে চায় তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy