—ফাইল চিত্র।
১ জুন দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা আসনে ভোট গ্রহণ হবে। তৃণমূলের গড় এই দক্ষিণ কলকাতায় গত বার পিছিয়ে থাকা ওয়ার্ডগুলিতে যাতে ভাল ব্যবধানে এগিয়ে থাকা যায় সেই ব্যাপারে দলের কাউন্সিলর তথা ব্লক সভাপতিদের নির্দেশ দিল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। গত শনিবার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের কর্মী সম্মেলন হয়েছিল চেতলার অহীন্দ্র মঞ্চে। সেখানেই দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিম ভবানীপুর বিধানসভার সব কাউন্সিলর এবং নেতাদের তৃণমূল প্রার্থীর পক্ষে ব্যবধান বৃদ্ধি করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই কর্মিসভা ভবানীপুর বিধানসভার জন্য হলেও, বাকি বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ওয়ার্ডগুলিকেও প্রার্থী মালা রায়কে ভাল ব্যবধানে এগিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুরসভার ৫৮টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ২৬টিতে এগিয়েছিল বিজেপি। মূলত সেই ওয়ার্ডগুলিতেই মনোনিবেশ করে ব্যবধান মালার পক্ষে আনার কথা বলেছেন তৃণমূলের শীর্ষনেতারা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল ৩ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে থাকলেও, ৬৩, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩ ও ৭৪ ওয়ার্ডে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। মন্ত্রী জাভেদ খানের কসবা বিধানসভার ৬৭, ১০৭ ও ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডেও এগিয়েছিল বিজেপি। এ ছাড়াও বেহালা পূর্ব কেন্দ্রে ১১৬, ১১৭ ও ১২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যবধান ছিল বিজেপির পক্ষে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রে ১১৮, ১১৯ ও ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডে পিছিয়ে ছিলেন মালা। মেয়র ফিরহাদের কেন্দ্র কলকাতা বন্দরের ৭৬, ৭৯ এবং ৮০ নম্বর ওয়ার্ডে ফলাফল ছিল বিজেপির পক্ষে। রাসবিহারী কেন্দ্রের ৮১, ৮৪, ৮৬, ৮৭ এবং ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডে পিছিয়েছিল তৃণমূল। ফলস্বরূপ রাসবিহারী কেন্দ্রটিতে এগিয়েছিল বিজেপি। বালিগঞ্জ কেন্দ্রে ৬৮, ৬৯ এবং ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভাল ব্যবধানে এগিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী চন্দ্র বোস।
দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের মতে, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে হামলা এবং পরে বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইকের ঘটনায় বিজেপি যে সুবিধা পেয়েছিল এ বার তেমন কিছু নেই। তা ছাড়া গত বার দক্ষিণ কলকাতায় বিজেপির সাত জন জয়ী কাউন্সিলর ছিলেন। এ বার সেই সংখ্যা নেমে গিয়েছে শূন্যে। তাই এ বার আর বিজেপি ২৬টি ওয়ার্ড থেকে জিততে পারবে না। তবে ধারাবাহিক দুর্নীতির অভিযোগ এবং বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইডির হাতে গ্রেফতার হয়ে জেলে থাকার বিষয়টিও ভাবাচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। ২০২২ সালের ২৩ জুলাই নিজের বাসভবন থেকে গ্রেফতার হন পার্থ। পার্থের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের ছবি ভোটের বাজারে ফিরিয়ে আনতে পারে বিজেপি। তাই প্রচারের ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের কৌশল দেখে পা ফেলতে চাইছে শাসকদল। তবে পার্থর জেলে থাকার বিষয়টি লোকসভা ভোটে প্রভাব ফেলবে না বলেই দাবি করেছেন প্রবীণ নেতা তারক সিংহ। তিনি বলেন, “বেহালা পশ্চিমের সব ওয়ার্ড তৃণমূলের দখলে। সেখানে আমাদের সংগঠনও জোরদার। তাই কে আছে, কে নেই, তা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। আমরা সব ওয়ার্ড থেকেই লিড পাব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy