বৈঠকে দেব। নিজস্ব চিত্র
সোমবার বিকেলে তিনিও ছিলেন খড়্গপুরে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে। অভিষেকের বৈঠক সেরে সন্ধ্যায় সটান তিনি চলে আসেন নিজ-ভূম কেশপুরে। দলীয় সূত্রে খবর, কেশপুরে ব্লক কার্যালয়ে এসে দলের নীচুতলার নেতাকর্মীদের নিয়ে রাতে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী দেব। বৈঠকে তাঁর বার্তা, নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বন্ধ করতে হবে।
দলীয় সূত্রে খবর, বৈঠকে ছিলেন কেশপুরের প্রত্যেকটি অঞ্চলের দলীয় সভাপতি, অঞ্চলের নির্বাচনী কমিটির চেয়ারম্যান, আহ্বায়ক প্রমুখ। কেশপুরের এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘দেব অঞ্চল সভাপতিদের নিয়ে বসতে চেয়েছিলেন। সেই মতোই এই বৈঠক। শুধু ব্লকের নেতাদের কথা নয়, দেব অঞ্চল সভাপতিদের কথাও শুনেছেন।’’ দু’টি অঞ্চলে নির্বাচনী কমিটি গঠন বাকি ছিল। বৈঠক থেকে সেই বকেয়া কাজও সেরে ফেলা হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, খড়্গপুরে অভিষেকের বৈঠকে কেশপুর নিয়ে কিছুক্ষণ আলোচনা হয়েছে। ‘লিড’ গতবারের থেকে বাড়াতে হবে, স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের ‘সেনাপতি’। কেশপুর নিয়ে ঠিক কী বলেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক? কেশপুরের এক নেতার কথায়, ‘‘উনি (অভিষেক) বলেছেন, সকলকে এক হয়ে চলতে হবে। বক্সীদা যে নির্বাচনী কমিটিটা করে দিয়েছেন, সেটাই ফাইনাল। স্পষ্ট করেছেন, লিড আগের বারের চেয়ে আরও বাড়াতে হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১০ ঘন্টা আমাদের সময় দিয়েছেন খাওয়াদাওয়া, ঘুমনো, বাড়ির লোকেদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য। বাকি ১৪ ঘন্টা দলের জন্য খাটতে বলেছেন।’’
কেশপুরে তৃণমূলের কোন্দল রয়েছে। একদিকে মন্ত্রী তথা বিধায়ক শিউলি সাহার অনুগামীরা। অন্যদিকে দলের ব্লক সভাপতি প্রদ্যোত পাঁজার অনুগামীরা। দ্বন্দ্বের জেরে এখানে নির্বাচনী কমিটি গড়তে গিয়েও হিমশিম খেতে হয়েছে! ব্লকের দলীয় নির্বাচনী কমিটি সাধারণত গড়েন দলের ব্লক সভাপতি কিংবা দলের জেলা সভাপতি। ব্যতিক্রম কেশপুর। এখানে দলীয় নির্বাচনী কমিটি গড়ে দিতে হয়েছে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে। দু’পক্ষের মধ্যে ‘ভারসাম্য’ রেখে কমিটি হয়েছে। খড়্গপুরের বৈঠকে একাধিক নেতাকে সতর্ক করেছিলেন অভিষেক। কেশপুরে যে দ্বন্দ্ব এখনও পুরোপুরি মেটেনি, তাঁর কাছে যে প্রত্যেকটি অঞ্চলের খবরাখবর রয়েছে, ইঙ্গিতে বুঝিয়েছিলেন তিনি। দলীয় সূত্রে খবর, এরপর রাতে কেশপুরে দলের ওই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থীর বার্তা, ঘাটালটা এতটাও সহজ সিট নয়। যতই কেশপুর সঙ্গে থাকুক। দ্বন্দ্ব আর না হলেই ভাল হয়। সকলে মিলে কাজে নেমে পড়তে হবে। এখানকার সংগঠনের প্রশংসাও করেছেন তৃণমূল প্রার্থী।
দেব কেশপুরের ভূমিপুত্র। তাঁর আদি বাড়ি মহিষদায়। ২০১৪ সালের লোকসভায় কেশপুর থেকে তিনি এগিয়েছিলেন ১ লক্ষ ১৭ হাজার ভোটে। ২০১৯ সালের লোকসভায় ৯২ হাজার ভোটে। এ বার কেশপুর থেকে ‘লিড’ কত হবে? এখানে প্রচারে এসে তৃণমূল প্রার্থী বলেছেন, ‘‘আমি এখানকার ভূমিপুত্র। কেশপুরের মানুষের বিশ্বাস আমার প্রতি গত দু’বারই ছিল। আমি নিশ্চিত, এ বারও থাকবে। আমি আশাবাদী, ভাল লিডই পাব।’’ আর রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পরে কেশপুরের এক তৃণমূল নেতার দাবি, ‘‘লিড এক লাখের উপরেই থাকবে!’’ বিধায়ক শিউলি বলছেন, ‘‘চিন্তা নেই। আমরা লিড দেব। দেবও জিতবে। দেবকে জেতাতে হবে। রেকর্ড করতে হবে। এটাই লক্ষ্য।’’ দ্বন্দ্ব? শিউলির জবাব, ‘‘একসঙ্গে পাঁচজন থাকলে দু’টো কথা কাটাকাটি হবেই। দিনের শেষে আমরা সবাই তৃণমূল। আমরা আমাদের দেবকে জেতাব, এটাই লক্ষ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy