Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

সংবিধান বদলের আশঙ্কা দলিতদের, ভোট-আশায় ‘ইন্ডিয়া’

কংগ্রেস সূত্রের ব্যাখ্যা, নরেন্দ্র মোদী ‘চারশো পার’-এর লক্ষ্য ঘোষণার পরেই বিজেপির একাধিক নেতা প্রকাশ্যে বলতে শুরু করেছিলেন, সংবিধানে বদল করা হবে বলেই দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপির ক্ষমতায় আসা প্রয়োজন।

Sourced by the ABP

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৪ ০৮:৩১
Share: Save:

টিনা দাবির আগে আর কোনও দলিত পরিবারের সন্তান আইএএস-এর চাকরির পরীক্ষায় প্রথম হননি। দু’বছর আগে টিনার সঙ্গে যখন আর এক আইএএস অফিসার প্রদীপ গাওয়ান্ডের বিয়ে হয়, বিয়ের অনুষ্ঠানে সাক্ষী হিসেবে সংবিধানপ্রণেতা বি আর অম্বেডকরের ছবি রাখা ছিল।

ইলাহাবাদের আমাউরা গ্রামের দলিত পরিবারের হিঞ্চল কন্যা খুশবুর বিয়ের নিমন্ত্রণ পত্রে গণেশের বদলে বাবাসাহেব ভীমরাও অম্বেডকরের ছবি ব্যবহার করেছিলেন। কারণ, তাঁদের পরিবারের কাছে অম্বেডকরই ভগবান। যিনি দলিতদের অস্পৃশ্যতা ও উচ্চবর্ণের দমন থেকে রক্ষা করেছেন। মধ্যপ্রদেশে সিরোহী জেলার কাল্লু জাটভ ও বিজয়ন্তী রাজোরিয়া গরিব দলিত দম্পতি। বিয়ের অনুষ্ঠানের খরচ জোগাড় করতে না পেরে তাঁরা হোমাগ্নিকে সাক্ষী রেখে বিয়ে করার বদলে অম্বেডকরের মূর্তির চারপাশে সাত পাক ঘুরেছিলেন।

উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র— দেশের বহু রাজ্যেই দলিতরা অম্বেডকরকে শুধু সংবিধান প্রণেতা নন, ভগবান হিসেবে দেখে থাকেন। লোকসভা ভোটের শেষ দফার ভোটগ্রহণ মিটে যাওয়ার পরে বিরোধী শিবির মনে করছে, এ বারের লোকসভা নির্বাচনে জিতে বিজেপি ফের ক্ষমতায় এলে সংবিধান বদলে দেবে বলে দলিতদের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যার ফায়দা ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ পাবে। বিশেষত উত্তরপ্রদেশে দলিত ভোটের বড় অংশ মায়াবতীর থেকে সমাজবাদী পার্টি-কংগ্রেসের জোটের দিকে চলে আসতে পারে। কারণ, দেশের বড় অংশের দলিতদের কাছে সংবিধান হল অম্বেডকরের সংবিধান। দলিতদের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, সংবিধান বদল হলে তাঁদের অধিকারে, বিশেষ করে সংরক্ষণে হাত পড়তে পারে। কারণ, আরএসএসের নেতারা অনেক বারই অতীতে সংরক্ষণ তুলে দেওয়ার পক্ষে নীতিগত অবস্থান নিয়েছেন।

কংগ্রেস সূত্রের ব্যাখ্যা, নরেন্দ্র মোদী ‘চারশো পার’-এর লক্ষ্য ঘোষণার পরেই বিজেপির একাধিক নেতা প্রকাশ্যে বলতে শুরু করেছিলেন, সংবিধানে বদল করা হবে বলেই দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপির ক্ষমতায় আসা প্রয়োজন। তাকে হাতিয়ার করেই রাহুল গান্ধী, অখিলেশ যাদবেরা প্রচারে নেমে বলেছিলেন, এ বারের ভোট সংবিধান বাঁচানোর ভোট। ‘ইন্ডিয়া’য় যদিও তামিলনাড়ুর ভিসিকে ছাড়া দলিতদের নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল নেই। তা সত্ত্বেও কংগ্রেস নেতাদের মত, ২০১৯-এর তুলনায় ২০২৪-এ বিরোধীদের ঝুলিতে দলিত ভোট
বেশি আসবে।

২০১১-র শেষ জনগণনা অনুযায়ী, দেশের জনসংখ্যার ১৬.৬ শতাংশ মানুষ দলিত বা তফসিলি জাতিভুক্ত। তার পরে একাধিক বেসরকারি সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশের ২৫ শতাংশ মানুষ নিজেদের দলিত বা তফসিলি জাতি হিসেবে পরিচয় দেন। জনগণনা অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশের জনসংখ্যায় দলিতদের ভাগ সবথেকে বেশি— প্রায় ২১ শতাংশ। বিরোধী জোটের নেতাদের মতে, উত্তরপ্রদেশ ছাড়াও রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, ছত্তীসগঢ়, হরিয়ানায় মায়াবতী নিজের দলের প্রার্থী দিয়ে দলিত ভোট টানতেন। তাতে বিজেপি-বিরোধী দলগুলির লোকসান হত। কিন্তু এ বার সব রাজ্যেই মায়াবতীর রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ফলে তাঁর থেকে দলিত ভোট ‘ইন্ডিয়া’র দিকে সরতে পারে। এর ফায়দা তুলতে উত্তরপ্রদেশের ৮০টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ১৭টি তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হলেও ‘ইন্ডিয়া’ ১৯ জন তফসিলি নেতানেত্রীকে প্রার্থী করেছে।

সমাজবাদী পার্টির নেতাদের দাবি, সংরক্ষণ তুলে না দিলেও মোদী জমানায় সরকারি চাকরির সুযোগ কমায় ও বেসরকারিকরণের ফলে সংরক্ষণের সুবিধাও কম মিলছে বলে দলিতদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy