ঘাটালের তারকা তৃণমূল প্রার্থী দেব। — ফাইল চিত্র।
‘কেশপুর কঠিন’— এ বার প্রথম প্রচারে এসেই তা টের পেয়েছেন ঘাটালের তারকা তৃণমূল প্রার্থী দেব। দলের কর্মী বৈঠকে তিনি প্রশ্নও তুলেছিলেন, ‘‘ইউনিটি যদি না থাকে, তা হলে কী করে চলবে?’’ সেই কেশপুরেই তৃণমূলের নির্বাচনী কমিটির প্রথম বৈঠক মাঝপথে ভেস্তে গেল। তৃণমূলের একাংশ বলছে, পিছনে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই।
কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহার অনুগামীদের সঙ্গে ‘বিরোধ’ রয়েছে দলের ব্লক সভাপতি প্রদ্যোত পাঁজার অনুগামীদের। শুক্রবার বিকেলে সেই দলাদলিতেই বৈঠক ভন্ডুল হয়েছে বলে খবর। ব্লক সভাপতি প্রদ্যোত মানছেন, ‘‘বৈঠক চলাকালীন হঠাৎ কমিটির একটা সংযোজিত নামের তালিকা আসে। তার পর বিতর্ক হয়। আর বৈঠক হয়নি।’’ বিধায়ক শিউলির অবশ্য দাবি, ‘‘রমজান মাস। রোজা চলছে। বৈঠক শুরু হতে দেরি হয়েছিল। যাঁরা মুসলিম সম্প্রদায়ের, তাঁরা একে একে চলে গিয়েছেন রোজা ভাঙতে। আমি শেষ অবধি ছিলাম। সঞ্জয় পান, প্রদ্যোত পাঁজা, সইফুল মির্জারাও ছিলেন।’’
এই নির্বাচনী কমিটি নিয়ে কেশপুরে দলের গোষ্ঠী কোন্দল আগেও প্রকাশ্যে এসেছে। ব্লকের দলীয় নির্বাচনী কমিটি সাধারণত গড়েন ব্লক সভাপতি কিংবা দলের জেলা সভাপতি। তবে কেশপুরে কোন্দল সামলাতে নির্বাচনী কমিটি গড়ে দিতে হয়েছে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে। তার পরেও কোন্দলে দাঁড়ি পড়েনি। দলীয় বৈঠকে এসে দেবও বলেছিলেন, ‘‘একটা নির্বাচন কমিটি করতে এত কষ্ট!’’ শুক্রবার দেব ছিলেন ডেবরায়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেখানে কর্মী বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘‘তৃণমূলকে হারাতে পারে শুধু তৃণমূলই।’’
গত বুধবার রাজ্য তৃণমূলের প্যাডে কেশপুরে ২৫ জনের নির্বাচনী কমিটির কথা প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে সই রয়েছে বক্সীর। কমিটির চেয়ারম্যান শিউলি। ভাইস চেয়ারম্যান চিত্ত গড়াই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। আহ্বায়ক দু’জন, প্রদ্যোত পাঁজা এবং সঞ্জয় পান। প্রদ্যোত দলের বর্তমান ব্লক সভাপতি, সঞ্জয় প্রাক্তন ব্লক সভাপতি। কোর কমিটি সদস্য দু’জন, উত্তম ত্রিপাঠী এবং সইফুল মির্জা। সেই কমিটিরই প্রথম বৈঠক ছিল শুক্রবার, যা ভেস্তে গিয়েছে।
দেব ঘাটালের দু’বারের সাংসদ। গত দু’বারই তাঁর জয়ে বড় ভূমিকা ছিল কেশপুরের। তাঁর গ্রামের বাড়িও কেশপুরেই। ‘ঘরের ছেলে’কে ২০১৪ সালে ১ লক্ষ ১৭ হাজার ভোটের আর ২০১৯-এ ৯২ হাজারের ‘লিড’ দিয়েছিল কেশপুর। তবে এ বার পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, তা নিয়ে সন্দিহান দেব নিজেও। ২২ মার্চ কেশপুরে কর্মী বৈঠকে দেবের স্বীকারোক্তি, ‘‘কেশপুরটা বুঝতে পারলাম যে, কঠিন। আপনারা (কর্মীরা) কঠিন নয়। কিন্তু যাঁরা পদ পেয়ে আছেন (নেতারা), তাঁরা প্রচণ্ড কঠিন হয়ে আছেন।’’ এর পরই দেব বাকি বিধানসভায় বেশি সময় দিচ্ছেন। শুক্রবার ডেবরায় গিয়ে তিনি এ-ও বলেছেন, ‘‘কর্মীরা যদি সঙ্ঘবদ্ধ হন, ডেবরা যা লিড দেবে, তা কেশপুরকেও ছাপিয়ে যেতে পারে।’’
এই পরিস্থিতিতে ব্লক সভাপতির অভিযোগ, ‘‘এক ব্যক্তি, তাঁর নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য হিংসার রাজনীতি আমদানির চেষ্টা করছে। আমরা প্রশ্রয় দিতে নারাজ। দলের উঁচু জায়গায়, যেখানে বলার বলছি।’’ বিধায়ক শিউলির পাল্টা, ‘‘বক্সীবাবু বলেছেন, কাউকে বাদ দেওয়ার প্রশ্ন নেই। সংযুক্ত করা যেতে পারে।’’ সব দেখে-শুনে বিজেপির জেলা নেতা অমূল্য মাইতির খোঁচা, ‘‘তৃণমূলে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে। কোণে কোণে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy