রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
কেরলের ওয়েনাড়ে ভোট মিটে গেলেই গান্ধী পরিবার তথা কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব অমেঠী, রায়বরেলী আসন নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছেন। ওয়েনাড়ের ভোটগ্রহণের আগে রাহুল গান্ধী কেরলের ওই কেন্দ্রের পাশাপাশি অমেঠী থেকেও ভোটে লড়বেন, এমন কোনও বার্তা কংগ্রেস দিতে চাইছেন না। কারণ বামেরা ওয়েনাড়ে প্রচার করছে, রাহুল গান্ধী অমেঠী থেকে এ বার জিততে পারলে ওয়েনাড় ছেড়ে চলে যাবেন। অমেঠীর সাংসদ পদই ধরে রাখবেন।
ওয়েনাড়ে ভোটগ্রহণ ২৬ এপ্রিল। অন্য দিকে অমেঠী, রায়বরেলীতে ভোট তার প্রায় এক মাস পরে। ২০ মে। ওয়েনাড়ে ভোটগ্রহণ মিটে যাওয়ার পরে অমেঠী-রায়বরেলীর জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শুরু হবে। ৩ মে পর্যন্ত সময় থাকবে। রাহুল গান্ধী অমেঠী থেকে ফের প্রার্থী হলে ওয়েনাড়ের ভোট মিটে যাওয়ার পরে তিনি অমেঠীর জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় পাবেন।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাহুল গান্ধীর এ বারও অমেঠী থেকে প্রার্থী হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে তিনি অমেঠীতে স্মৃতি ইরানির কাছে হেরে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাই বলে ময়দান ছেড়ে পালানোর কোনও বার্তা রাহুল দিতে চাইছেন না। শুধু অমেঠীর ব্যাপারে দেরি করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
কেন এই দেরি? কেরলের ওয়েনাড়ে ভোটে লড়বেন বলে ইতিমধ্যেই রাহুল মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর পুরনো লোকসভা কেন্দ্র অমেঠীতে তিনি ফের প্রার্থী হবেন কি না, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। কেরলের মূল লড়াই বামেদের বিরুদ্ধে। সেখানে এ বার বাম জোটের প্রার্থী সিপিআইয়ের মহিলা সংগঠনের নেত্রী, সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার স্ত্রী অ্যানি রাজা। ডি রাজা ও অ্যানি রাজা প্রশ্ন তুলেছেন, কেন রাহুল কেরলে বামেদের সঙ্গে লড়ার বদলে যেখানে বিজেপির বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াই, সেখানে গিয়ে লড়ছেন না? একই সঙ্গে বামেরা প্রচার করছেন, রাহুল এ বারও ওয়েনাড়ের পাশাপাশি অমেঠী থেকে প্রার্থী হবেন। উত্তরপ্রদেশের আসন থেকে জিতলে সেখানেই সাংসদ থাকবেন। গত পাঁচ বছর ওয়েনাড়ের সাংসদ হিসেবে লোকসভায় গেলেও এ বার তিনি অমেঠীতে জিতলে ওয়েনাড়ের সাংসদ পদ ছেড়ে দিতে পারেন। না হলে কংগ্রেস শুধুই দক্ষিণ ভারতের পার্টি বলে বিজেপি প্রচারের সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে।
ঠিক এই কারণেই কংগ্রেস ঝুঁকি না নিয়ে ওয়েনাড় ও অমেঠীর লড়াইকে আলাদা ভাবে দেখতে চাইছে। ওয়েনাড়ে বামেদের সঙ্গে রাহুলের মূল লড়াই হলেও বিজেপি কেরলের রাজ্য সভাপতি কে সুরেন্দ্রনকে রাহুলের কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে। স্মৃতি ইরানি তাঁর মনোনয়নের সময় ওয়েনাড়ে গিয়ে রাহুলকে নিশানা করেছেন। কংগ্রেস কেরলে ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন অব মুসলিম লিগ (আইইউএমএল) ও নিষিদ্ধ সংগঠন পিএফআই-এর রাজনৈতিক মঞ্চ এসডিপিআই-এর সমর্থন নিচ্ছে বলে বিজেপি অভিযোগ তুলেছে। চাপের মুখে কংগ্রেস এসডিপিআই-এর সমর্থন খারিজ করে দিয়েছে। কংগ্রেসের ভয়, হিন্দি বলয়ে বিজেপি এ নিয়ে সরব হবে।
এ দিকে গান্ধী পরিবারের গড় রায়বরেলীতে সনিয়া গান্ধী আর প্রার্থী হচ্ছেন না। সেখানে রাহুলের বোন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাকে প্রার্থী করা হবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন ঝুলে রয়েছে। উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা থেকে ইন্ডিয়া জোটের শরিক সমাজবাদী পার্টি, সকলেই চাইছে, রাহুল-প্রিয়ঙ্কাই অমেঠী-রায়বরেলী থেকে লড়ুন। প্রিয়ঙ্কা ইন্ডিয়া-র শরিক দলের নেতাদের জানিয়েছেন, তিনি এখনও রায়বরেলী থেকে লড়াইয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি। এরই মধ্যে তাঁর স্বামী রবার্ট বঢরা অমেঠী থেকে লড়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে রেখেছেন। কংগ্রেসের একটি সূত্রের দাবি, রবার্টকে দিয়ে বলিয়ে গান্ধী পরিবার আসলে বার্তা দিচ্ছে, পরিবারের কোনও সদস্যই অমেঠী-রায়বরেলীতে প্রার্থী হবেন।
তবে কংগ্রেসের অন্দরমহলে এটাও প্রশ্ন, গত লোকসভা ভোটে স্মৃতি ইরানির কাছে রাহুল হেরে গিয়েছিলেন। কারণ তার আগের পাঁচ বছর স্মৃতি অমেঠীতে মাটি কামড়ে পড়েছিলেন। তার পরে গত পাঁচ বছর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার সুযোগ নিয়ে অমেঠীতে অনেক কাজ করেছেন। সেখানে নিজের বাড়িও বানিয়ে ফেলেছেন। রাহুল অমেঠীতে হেরে যাওয়ার পরে খুব একটা সেখানে যাননি। ওয়েনাড়ের পরে প্রার্থী হলেও মাত্র এক মাস প্রচার করে কি রাহুল অমেঠীতে জিততে পারবেন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy