অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
অমিত শাহের লোকসভা কেন্দ্র গান্ধীনগরে ছোটখাটো দলের প্রার্থী, নির্দল প্রার্থীদের ভয় দেখানো, ধমকানোর কাজ চলছে বলে অভিযোগ তুলল কংগ্রেস। আজ খোদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা গুজরাতে প্রচারে গিয়ে এই অভিযোগ তুলেছেন।
গান্ধীনগরের লোকসভা কেন্দ্রে ৭ মে ভোটগ্রহণ। সেখানে একাধিক প্রার্থী দাবি করেছেন, তাঁদের উপরে প্রার্থী পদ প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব, গুজরাত পুলিশের তরফ থেকে চাপ আসছিল। চাপের মুখে অনেকেই প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের মধ্যে কয়েক জন মুখও খুলেছেন। অভিযোগ তুলেছেন, প্রাণের ভয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছে।
রাহুল গান্ধী অমেঠী ছেড়ে রায়বরেলীতে প্রার্থী হওয়ার পরে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের নেতৃত্বে বিজেপি প্রচার শুরু করেছে, রাহুল ভয় পেয়ে গিয়েছেন। তার জবাবে আজ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার নেতৃত্বে কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে, অমিত শাহ কেন ছোটখাটো দল বা নির্দল প্রার্থীদের ভয় পাচ্ছেন? গুজরাতের বনাসকাণ্ঠার জনসভা থেকে অমিত শাহকে প্রশ্ন ছুড়ে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘যদি একশো জন প্রার্থীও আপনার সামনে থাকে, আপনি ভোটে লড়ুন। জিতে দেখান, এটাই তো গণতন্ত্র। ভয় কীসের?”
এর আগে গুজরাতের সুরাতে সমস্ত প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় বিজেপি বিনা ভোটে ওই লোকসভা কেন্দ্রে জিতে গিয়েছে। মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে কংগ্রেস প্রার্থীকে পুরনো খুনের মামলায় জড়িয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বার গান্ধীনগরের লোকসভা কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী জিতেন্দ্র চৌহান অভিযোগ তুলেছেন, বিজেপি নেতাদের চাপে তাঁকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হয়েছে। না হলে তাঁর প্রাণ সংশয় হত। মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলেও প্রজাতন্ত্র আধার পার্টির সুমিত্রা চৌহান দাবি করেছেন, তাঁকে বাড়ি এসে ধমকানো হয়েছে। আরও সাত জন নির্দল প্রার্থী ভোটে না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আজ প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সংসদীয় কেন্দ্রে প্রার্থীদের ধমকানো হচ্ছে। তাঁদের ভোটে লড়তে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ১৬ জন প্রার্থী আগেই বসে গিয়েছেন। মুখে বলেন, আমরা মজবুত। তা হলে ভোটে লড়তে ভয় পান কেন? গণতন্ত্রকে পিষে মারা হচ্ছে!”
গান্ধীনগর অনেক দিন ধরেই বিজেপির দুর্গ। অতীতে অটলবিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আডবাণী গুজরাতের রাজধানী থেকে জিতে লোকসভায় গিয়েছেন। অমিত শাহ গত লোকসভা নির্বাচনে গান্ধীনগরে প্রার্থী হয়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ ভোটে জিতেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেস এ বার গুজরাত মহিলা কংগ্রেসের প্রবীণ নেত্রী সোনাল পটেলকে প্রার্থী করেছে। কংগ্রেস শিবিরের দাবি, অমিত শাহ এ বার গান্ধীনগর-সহ গুজরাতের ২৬টি আসনে পাঁচ লক্ষের বেশি ব্যবধানে জয়ের লক্ষ্য নিয়েছেন। ছোটখাটো দলের নেতা বা নির্দল প্রার্থীরা যাতে ভোট কেটে বিজেপির জয়ের ব্যবধান কমাতে না পারেন, সেই কারণে তাঁদের ময়দান থেকে সরানো হচ্ছে।
প্রিয়ঙ্কার অভিযোগের জবাব না দিলেও অমিত শাহ আজ রাহুল গান্ধীকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। ভোটের প্রচারে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘রাহুল বাবা ওয়েনাড়ে হারবেন বুঝে রায়বরেলীতে প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু রায়বরেলীতেও হারবেন। রাহুল বাবাকে বলছি, এই আসন, ওই আসনে গিয়ে কোনও লাভ হবে না। সমস্যা আসনের নয়, সমস্যা আপনার মধ্যে।’’ সনিয়া গান্ধীকে কটাক্ষ করে শাহ বলেন, নরেন্দ্র মোদীর চন্দ্রযান একবারেই চাঁদে নেমেছিল। সনিয়ার রাহুল-যান ২০ বার ‘লঞ্চ’ হলেও ‘ল্যান্ড’ করতে পারছে না। ২১-তম বারও ‘ক্র্যাশ’ করতে চলেছে।
শাহকে পাল্টা আক্রমণ করে আজ কংগ্রেসের নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন, অমিত শাহ ৩৭০ রদ করার পরেও কাশ্মীর উপত্যকার একটি আসনেও বিজেপি প্রার্থী দেওয়ার সাহস দেখাল না কেন? কেন বিজেপি পালিয়ে গেল? ৩৭০ রদ হওয়ার আগে গত চারটি লোকসভা নির্বাচনেই বিজেপি কাশ্মীর উপত্যকার চারটি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল।
আর প্রিয়ঙ্কা গুজরাত থেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী কেন আর গুজরাত থেকে ভোটে লড়েন না? গুজরাতের জনতার থেকে দূরত্ব না থাকলে এখানেই ভোটে লড়তেন। এত দূরে গিয়ে কেন বারাণসী থেকে লড়েন? গুজরাতের মানুষের থেকে যা ফায়দা তোলার, তুলে নিয়েছেন। এখান থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়ে চলে গিয়েছেন। মানুষকে ভুলে গিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy