গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
সন্দেশখালি নিয়ে তাঁর বক্তব্যের যে ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে, তা ‘বিকৃত’। এই অভিযোগ জানিয়ে সিবিআইয়ের ডিরেক্টরকে ই-মেল পাঠিয়েছেন সন্দেশখালির বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কয়াল। সাংবাদিকদের সামনে এই দাবি করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার বিকেলে একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, ইতিমধ্যেই সন্দেশখালি থেকে কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছেন গঙ্গাধর। ভিডিয়োতে বিজেপি নেতার মুখে বার বার শোনা গিয়েছে শুভেন্দুর নাম। এ প্রসঙ্গে শুভেন্দুর দাবি, এই সব কিছু ‘কয়লা ভাইপোর তৈরি’। তাঁর নিশানায় যে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তা এক প্রকার স্পষ্ট। পাশাপাশি, শুভেন্দু আঙুল তুলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা শাসকদলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেও। দাবি করলেন, ভোটে হারবেন বুঝেই এ সব করিয়েছেন। এর আগে এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টেও একই দাবি করেছেন শুভেন্দু।
শুভেন্দু দাবি করেছেন, এই গোটা বিষয়টিই করেছে তৃণমূল। ভোটে হারবে ভয় পেয়েই এ সব করা হয়েছে। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘‘এক্স হ্যান্ডলেও গঙ্গাধরকে নিয়ে পোস্ট দিয়েছি। এটা কয়লা ভাইপোর তৈরি।’’ পাশাপাশি, তিনি আইপ্যাক সংস্থার এক কর্মীকেও দায়ী করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘তমাল বলে এক জন আইপ্যাকে রয়েছেন। তিনি আগে পোর্টালে ছিলেন।’’ শুভেন্দুর দাবি, তমালই রয়েছেন এ সবের নেপথ্যে। তবে ‘ভাইপোর বিরুদ্ধে’ অভিযোগ করার জন্য গঙ্গাধর সিবিআইয়ে যাচ্ছেন। শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি, ‘‘পুরো বিষয় নিয়ে অনেক দূর যাব।’’ গঙ্গাধরের মুখে বার বার শুভেন্দুর কথা শোনা গিয়েছে। ভিডিয়োতে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘শুভেন্দুদার নির্দেশেই আমরা এই কাজ করেছি। উনি আমাদের সাহায্য করেছেন। শুভেন্দুদা বলেছেন, এটা না করলে, তাবড় তাবড় লোকদের গ্রেফতার করানো যাবে না। আমরাও ওখানে দাঁড়াতে পারব না।’’
এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু সাফ জানিয়েছেন, ‘অসাধু উদ্দেশ্যে’ই এ সব করা হয়েছে। নিজের দাবির সপক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে শুভেন্দু জানিয়েছেন, সন্দেশখালির মহিলাদের হেনস্থা নিয়ে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘সন্দেশখালির মুখ পীড়িত মহিলারা। ৩৮৯টি অভিযোগ হয়েছে। কিছু পুলিশের কাছে জমা পড়েছে। পরে প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালের নেতৃত্বেও অভিযোগ জমা পড়েছে। তৃণমূল দাবি করেছে, ২৩৯টি জমি ফেরত দিয়েছে। পুলিশ নিজে তিনটি ধর্ষণ, হেনস্থার এফআইআর ট্রিট করেছে। সব কি মিথ্যা?’’ শুভেন্দুর কটাক্ষ, নির্বাচনে হারবে বলে এ সব করেছে। এর আগে এক্সেও একই দাবি করেছেন শুভেন্দু। তিনি লিখেছেন, ‘‘সত্যকে ভুল ভাবে প্রকাশ করা হতে পারে। কিন্তু তার আয়ু খুব কম। শেষ পর্যন্ত সত্যেরই জয় হয়। পরের বার এটা মনে রাখবেন কয়লা ভাইপো।’’
শনিবার সকালে গোপন ক্যামেরায় তোলা একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। আনন্দবাজার অনলাইন তার সত্যতা যাচাই করেনি। সেই ভিডিয়োতে গঙ্গাধরকে বলতে শোনা গিয়েছে যে, সন্দেশখালিতে ‘ধর্ষণের অভিযোগ সাজানো’। এ নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করে তৃণমূল। শুভেন্দু সেই আক্রমণ উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেছেন, ভিডিয়োটি ‘বিকৃত’। এ বার এ নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন খোদ গঙ্গাধর। সিবিআইকে লেখা গঙ্গাধরের একটি চিঠিও প্রকাশ্যে এসেছে। সেই চিঠিতে তিনি দাবি করেছেন, ওই ভিডিয়ো ‘বিকৃত’। ভিডিয়োয় তাঁর ছবি এবং কথার মধ্যে কোনও মিল নেই। ভিডিয়োয় বক্তার মুখও স্পষ্ট নয়। এমন ভাবে ভিডিয়োটি এডিট করা হয়েছে, যাতে তা বোঝা না যায়। ভিডিয়ো থেকে বক্তার ঠোঁটের নড়াচড়াও স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাচ্ছে না বলেই দাবি গঙ্গাধরের। ভিডিয়োর শব্দ স্পষ্ট নয়। বোঝানোর জন্য ‘সাবটাইটেল’ ব্যবহার করা হয়েছে, যার প্রভাব পড়তে পারে তদন্তে। চিঠিতে তিনি আরও দাবি করেছেন, ‘উইলিয়ামস’ নামে একটি চ্যানেলে আপলোড করা হয়েছে সেই ভিডিয়ো, যে চ্যানেলে অন্য কোনও ভিডিয়ো নেই। ২০২৪ সালের ৩ মে খোলা হয়েছে সেই ইউটিউব চ্যানেল। ইচ্ছাকৃত ‘অসাধু’ উদ্দেশ্যেই এমনটা করা হয়েছে বলে অভিযোগ গঙ্গাধরের। ভিডিয়োটি এডিট করা হয়েছে বলেও নিজের চিঠিতে দাবি করেছেন। ভিডিয়োটির ১৮ মিনিটের মাথায় এক মহিলাকে সেখানে দেখা যায়। তখন ভিডিয়ো সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হলেও অডিয়ো বন্ধ রাখা হয়নি। ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’-এর মাধ্যমে ওই মহিলার কথাও কাটছাঁট করা হয়েছে বলে দাবি গঙ্গাধরের। তিনি এ-ও দাবি করেছেন, ভিডিয়োতে কণ্ঠস্বর তাঁর নয়। গঙ্গাধরের দাবি, সন্দেশখালি নিয়ে সিবিআই যে তদন্ত করছে, তা নিয়ে মানুষকে ভুল পথে চালিত করার জন্যই এ সব করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy